রিশাদ হোসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্য

নিউজিল্যান্ডে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়

প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেকবারই নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন রিশাদ হোসেন। লেগ স্পিনার হলেও ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শী তিনি। এবার বিদেশের মাঠে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার মঞ্চে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখালেন এই তরুণ ক্রিকেটার। ৭ নম্বরে নেমে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৪ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেছেন রিশাদ। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও তিনি শিকার করেন ৩ উইকেট। তাতে নিউজিল্যান্ডে প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ এক জয় পেল বাংলাদেশ দল। গতকাল বৃহস্পতিবার লিংকনের বার্ট সাটক্লিফ ওভালে তারুণ্যনির্ভর নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে ২৬ রানে জিতেছে বাংলাদেশ দল। আগে ব্যাট করে চার ব্যাটারের ফিফটিতে ১ বল বাকি থাকতে সফরকারীরা অলআউট হয় ৩৩৪ রানে। জবাবে ৪৯.২ ওভার খেলে কিউইরা থামে ৩০৮ রানে। ভ্রমণক্লান্তির কারণে এই ম্যাচে খেলেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, সহ-অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই সেরা পারফর্মার রিশাদ। মূলত তার নৈপুণ্যেই দলের পুঁজি ছাড়ায় ৩০০। এরপর কিছুটা খরুচে বোলিং করলেও নিচের সারির ব্যাটারদের ঘায়েল করে ৩ উইকেট শিকার করেন এই লেগ স্পিনার। ৭.২ ওভারে তিনি দেন ৫২ রান। প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ভরত পপলি (৯০ বলে ৯২ রান) ও সন্দীপ প্যাটেলের (৭৭ বলে ৮৯ রান) গড়া ১৫৬ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু দেন আফিফ হোসেন। ১৮ রানে তিনি পান ২ উইকেট। তার দ্বিতীয় শিকারের আগে ৩৮তম ওভারে ৪ উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে লক্ষ্য তাড়ার কক্ষপথেই ছিল স্বাগতিকরা। ২ উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদও। এর আগে ব্যাটিংয়ে রিশাদ যখন ক্রিজে গিয়েছিলেন, তখন ১৮৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে ছিল চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। এরপর লিটন দাসের সঙ্গে ৭০ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন তিনি। এই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা লিটন বিদায় নেন ৬৩ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫৫ রানে। সেসময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২৫৪।

তারপর তারা যে আরও ৮০ রান যোগ করে, সেখানে রিশাদেরই অবদান ৬৩। ছক্কা মেরে তিনি ফিফটি পেরিয়ে গিয়েছিলেন ৩৪ বলে। এরপর মুখোমুখি হওয়া ২০ বলে আনেন আরও ৩৬ রান। তানজিদ হাসান তামিম ও এনামুল হক বিজয়ের ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের শুরুটা হয় ভালো। ২৬ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ করে সাজঘরে ফেরেন এনামুল। দ্বিতীয় উইকেটে ১০১ রানের বড় জুটি গড়ে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন তানজিদ ও সৌম্য সরকার। দুজনই আক্রমণাত্মক কায়দায় খেলে পান হাফসেঞ্চুরির দেখা। তানজিদ করেন ৫৮ রান। তার ৪৬ বলের ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ৪ ছক্কা। ৮ চার ও ১ ছয়ে ৫৬ বলে ৫৯ রান আসে সৌম্যর ব্যাট থেকে। এই জুটি ভাঙার পর ৩৬ রানের মধ্যে ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তাওহিদ হৃদয় ৫ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। আফিফ থামেন ১৩ বলে ১০ রানে। তবে লিটনের দায়িত্বশীল ইনিংস ও শেষদিকে রিশাদের তাণ্ডবে তিনশ ছাড়িয়ে আরও উঁচুতে যায় দলের সংগ্রহ। প্রস্তুতি শেষে এবার মূল সিরিজের চ্যালেঞ্জ। এবারের সফরে বাংলাদেশ তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে। ১৭ ডিসেম্বর প্রথম ওয়ানডে হবে ডানেডিনে।

পরের দুটি ওয়ানডে ২০ ও ২৩ ডিসেম্বর যথাক্রমে নেলসন ও নেপিয়ারে। তিনটি ওয়ানডে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়। তিনটি টি-টোয়েন্টি হবে যথাক্রমে ২৭, ২৯ ও ৩১ ডিসেম্বর। প্রথম ম্যাচ নেপিয়ারে। পরের দুটি মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি শুরু হবে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে। শেষ ম্যাচ ভোর ৬টায়। নিউজিল্যান্ডে তাদের বিপক্ষে কখনোই সীমিত ওভারের কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ।