ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বাধীনতা কাপ ফুটবল

মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ১০ জনের কিংস

মোহামেডানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ১০ জনের কিংস

একটি ফাইনাল উপভোগ্য হতে যা যা দরকার, তার সবই ছিল এই ম্যাচে। যার পরতে পরতে ছিল উত্তেজনা। গোল, পাল্টা গোল। মাঠে ঝগড়া-হাতাহাতি। ম্যাচে লাল কার্ড। প্রথম গোল করে এগিয়ে যাওয়া আবার ৬ মিনিটের ব্যবধানে সমতায় ফেরার রোমাঞ্চ।

গতকাল সোমবার গোপালগঞ্জের শেখ ফজুলল হক মনি স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপ ফাইনালে ঠিক তেমনই এক ম্যাচই দেখেছেন দর্শকরা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর মোহামেডানকে ১-২ গোলে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে নেয় ১০ জনের বসুন্ধরা কিংস। সেই সঙ্গে গত বছর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে হারের প্রতিশোধও নিয়ে নিল তারা। একই ব্যবধানে সাদা কালোদের কাছে হেরে ফেডারেশন কাপের শিরোপা খুঁইয়েছিল কিংস।

ঢাকার বাইরে ফুটবলের উম্মাদনা কম নয়। সেটা আরও একবার প্রমাণিত হল। এদিন গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে যেন দর্শকের ঢল নেমেছিল। ফাইনাল দেখতে গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ঢোল-বাদ্যযন্ত্র নিয়ে তারা সানন্দে উপভোগ করেছেন ম্যাচের পুরো সময়। সমর্থকদের হতাশ করেনি দুই দল। ফাইনালে উপভোগ্য একটি ম্যাচই উপহার দিয়েছে কিংস ও মোহামেডান।

৯ বছর পর স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে উঠেছিল মোহামেডান। লক্ষ্য ছিল ফের এই ট্রফি ক্লাব টেন্টে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু কিংসের কাছে থামতে হলো তাদের। এই টুর্নামেন্টের চতুর্থ ট্রফি নেয়া হলো না সাদা-কালোদের। তবে স্বাধীনতা কাপের তিনটি ট্রফি জিতে মোহামেডানের পাশে নাম লিখিয়েছে কিংসও। সেটা গোলদাতার তালিকাটা এবার লম্বা। তবে সর্বাধিক গোলদাতার পুরস্কার জেতা তিনজনই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড তিন ক্লাব দলের। কিংসের ডরিয়েলটন গোমেজ, ঢাকা আবাহনীর জোনাথন ফার্নান্দেজ এবং শেখ জামালের হিগোর লিটে। তিনজনই করেছেন তিনটি করে গোল। খেলা শেষে ডরিয়েলটন নিজ হাতে পুরস্কার নিলেও উপস্থিত ছিলেন না বাকি দুই ব্রাজিলিয়ান। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে কিংস। প্রতিপক্ষকে পরীক্ষা নিতে যথারীতি মালির ফরোয়ার্ড সুলেমানে দিয়বাতেই মূল ভরসা ছিল মোহামেডানের।

তবে প্রথমার্ধে আক্রমণ প্রতি আক্রমণেই থেকেছে দুই দল। গোলের মুখ দেখেনি। বিরতির পর জমে ওঠে ম্যাচ। ৪৮ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় কিংস। মোহামেডানের ওমর বাবুকে ফাউল করায় সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন উইঙ্গার রফিকুল ইসলাম।

১০ জনের কিংসকে পেয়ে পরের মিনিটেই সুযোগ কাজে লাগায় সাদা-কালোরা। মোজাফফরভের কর্নারে বক্সে জটলার মধ্যে হেডে জাল খুঁজে নেন এমানুয়েল সানডে (১-০)। পিছিয়ে পরা কিংস দ্রুত ধাক্কা সামাল ওঠে। ম্যাচে ফিরতে সময় নেয় মাত্র দুই মিনিট। দুই ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েল ফার্নান্দেজ ও রবসন দ্য সিলভা রবিনহোর দারুণ রসায়নে আক্রমণে যায় কিংস, বক্সে রবিনহোর প্রচেষ্টা সাদা-কালো এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফেরা বল পেয়ে সোজা জালে জড়ান রাকিব হোসেন (১-১)। পরের সময়টুকু দশ জনের কিংস রক্ষণ সামলে খেলতে থাকে। নিচ থেকে আক্রমণে যাওয়া চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে খেই হারাচ্ছিলেন রবিনহোরা। অবশেষে ৮৬ মিনিটে পেয়ে যায় জয়সূচক কাংখিত গোল। ম্যাচে কয়েকবার সুযোগ নষ্ট করা আরেক ব্রাজিলিয়ান ডরিয়েলটন গোমেজ এনে দেন শিরোপা নিশ্চিতের গোলটি। মিগুয়েলের বাড়ানো পাস বক্সে পেয়ে নিখুঁত শটে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড (২-১)। বাকি সময়ে ব্যবধান ধরে শিরোপা উৎসবে মাতোয়ারা হয় বসুন্ধরা কিংস।

একনজরে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল ২০২৩

চ্যাম্পিয়ন : কিংস

রানার্সআপ : মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

ফেয়ার প্লে : মোহামেডান।

ম্যান অব দ্য ফাইনাল : ডরিয়েলটন গোমেজ (কিংস)

সর্বাধিক গোলদাতা : কিংসের ডরিয়েলটন গোমেজ, ঢাকা আবাহনীর জনাথন ফার্নান্দেজ ও শেখ জামালের হিগোর লিটে (৩টি করে গোল)।

টুর্নামেন্ট সেরা : রাকিব হোসেন (কিংস)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত