নতুন বছরে নতুন চ্যালেঞ্জ জামাল-সাবিনাদের সামনে

প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

অনাদিকাল থেকে সৌরজগতের নিখুঁত নিয়মে প্রতিদিন সূর্যোদয় হয়। প্রতিদিনের মতো গতকাল সোমবারও পুবের আকাশে উদিত হয়েছে নতুন সূর্য। ছড়িয়ে পড়েছে তার আলো কুয়াশার চাদর ভেদ করে। আজকের সূর্যোদয় নিয়ে এসেছে নতুন বারতা, নতুন আনন্দধারা। বিগত দিনের সব ভুল, হতাশা, দুঃখ, গ্লানি মুছে দিয়ে শুরু হবে নতুন উদ্যোমে সফলতার পানে এগিয়ে চলা। আছে অন্ধকার কেটে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। দেশের ফুটবলের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েই হাজির হয়েছে নতুন বছর।

সদ্য বিদায়ি ২০২৩ সালটাও ছিল বাংলাদেশ ফুটবলে মনে রাখার মতো একটা বছর। জামাল ভূঁইয়ারা ২০০৯ সালের পর প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল গেল বছরে। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে শক্তিশালী লেবাননের বিপক্ষে ড্র করে সবাইকে অবাক করে দেয়। নতুন বছরে চ্যালেঞ্জ আরো বাড়ছে। এ বছরে বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবলে মূল ব্যস্ততা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চার ম্যাচ ঘিরে। সাবিনাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সাফ শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখা। নতুন বছরে নারী ফুটবলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ শুরু হবে ১ ফেব্রুয়ারি সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টুর্নামেন্ট দিয়ে। ঢাকার কমলাপুর স্টেডিয়ামে এই টুর্নামেন্ট শুরু হবে। ওই মাসেই ১৯-২৮ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র নারী ফুটবল দলের ফিফা উইন্ডো। মার্চের প্রথম দিন সাফ নারীদের আরেকটি টুর্নামেন্ট। অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টের ভেন্যু এখনো ঠিক হয়নি। মার্চে বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জামালদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুই ম্যাচ। ২১ মার্চ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হোম ম্যাচ আর ২৬ মার্চ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। এক মাস আগে অ্যাওয়ে ম্যাচের ভেন্যু জানতে পারবে বাফুফে। ১ থেকে ৯ এপ্রিল এবং ২৭ মে থেকে ৪ জুন সিনিয়র নারী ফুটবলের ফিফা উইন্ডো। ফেব্রুয়ারি উইন্ডোর পর বাফুফে এপ্রিল-মে উইন্ডো নিয়ে কাজ করবে। ৬ জুন কাতার বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে। ১১ জুন বাংলাদেশের লেবাননের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। জুনের শেষ সপ্তাহে বা ১ জুলাই সাফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপের সম্ভাব্য সূচি। প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ক্লাবগুলো নিয়ে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করছে সাফ। ৮ থেকে ১৬ জুলাই রয়েছে নারী ফুটবলের আরেকটি ফিফা উইন্ডো। ১৮-২৮ আগস্ট সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। এই টুর্নামেন্টের ভেন্যু এখনো নির্ধারণ হয়নি। ২-১০ সেপ্টেম্বর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে অব রয়েছে। এই প্লে-অব জামালদের খেলতে হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে ১১ জুন লেবানন ম্যাচের পর। সেপ্টেম্বরে রয়েছে পুরুষদের আরও দুটি জুনিয়র টুর্নামেন্ট। ২১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের বাছাই ও ১২ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্ট রয়েছে। অক্টোবরে রয়েছে এএফসির জুনিয়র আরেকটি টুর্নামেন্ট। ১৯ থেকে ২৭ অক্টোবর এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে রয়েছে। ওই মাসে ৭ থেকে ১৫ অক্টোবর পুরুষ ফুটবলে ফিফা উইন্ডো রয়েছে। ২১-৩০ অক্টোবর রয়েছে নারী উইন্ডো। ওই উইন্ডোতে সিনিয়র নারী চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্টটি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি এবং টুর্নামেন্টের সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে ২১ অক্টোবর-৩ নভেম্বর। ১১ থেকে ১৯ নভেম্বর পুরুষ ও ২৫ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর নারী ফিফা উইন্ডো রয়েছে। জাতীয় দলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলেও ব্যস্ততা থাকবে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন আগামী বছরের সূচি প্রকাশ করেনি। তাই কিংসের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সূচি এখনো পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক ফুটবলের পাশাপাশি চলবে ঘরোয়া ফুটবলে নানা প্রতিযোগিতা। ২০২৩-২৪ মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও ফেডারেশন কাপ চলমান। মে মাসের মধ্যে ঘরোয়া ফুটবলের চলতি আসর শেষ হবে। এই বছরে আগের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা ছাড়াও ফিফা র‍্যাংকিংয়ে যথাসম্ভব ওপরের দিকে থাকার কঠিন পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে জামাল-রাকিবদের। তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জামালদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। দুই বছর ধরে দায়িত্ব পালন করা এই কোচ ২০২৩ সালে দারুণ কাজ করেছেন। ৩৯ বছর বয়সি কোচের কোচিংয়ে সব মিলিয়ে ২১ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় ও ড্র সমান ছয়টি করে, হার ৯টি। এর মধ্যে ২০২৩ সালে ১৩টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। সেখানে পাঁচটি জয়ের বিপরীতে ৪ হার। এছাড়া রয়েছে চারটি ড্র।