ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফিলিস্তিনকে সমর্থন, খাজার পাশে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

ফিলিস্তিনকে সমর্থন, খাজার পাশে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজা। যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান লিখে প্রথম টেস্টে মাঠে নামেন। বাহুতে পরেন কালো ফিতা। পরের টেস্টে তাকে বাধা দেয় আইসিসি। আইন ভঙ্গের অভিযোগে তিরস্কারের শিকার হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। আইসিসির তিরস্কারেও দমে যাননি এই অজি ব্যাটার। দ্বিতীয় ম্যাচে মেলবোর্নে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কারণে আর্মবব্রন্ড পরতে পারেননি খাজা। কিন্তু নিজের ব্যাটে শান্তির প্রতিক হিসেবে ঘুঘু ও জলপাই পাতার স্টিকার নিয়ে খেলতে চেয়েছেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার। কিন্তু আইসিসির বাধায় সেটিও করতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত জুতায় নিজের দুই মেয়ে আয়েশা ও আয়লার নাম লিখে খেলতে নেমেছেন খাজা। আইসিসির শাস্তির হুমকির মুখেও নিজের প্রতিবাদী অবস্থান থেকে সরে আসেননি খাজা। ফিলিস্তিনের পক্ষে আইসিসির বিরুদ্ধে এমন লড়াইয়ে তিনি পাশে পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দলের অধিনায়কসহ অনেককে। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও সতীর্থদের থেকে শুরু করে বেশ কজন সাবেক ক্রিকেটারের পর এবার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে পেলেন উসমান খাজা। মানবিকতার পক্ষে দাঁড়ানোয় বাঁহাতি ওপেনারের প্রশংসা করলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। খাজার এসব পদক্ষেপে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও জাতীয় দল। অধিনায়ক কামিন্স সংবাদ সম্মেলনে জোরাল আওয়াজই তুলেছেন বাঁ-হাতি ওপেনারের পক্ষে। তাকে আটকানোয় আইসিসিকে রীতিমতো এক হাত নিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিং। কিরিবিলি হাউজে গত সোমবার অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান দলকে নিয়ে নতুন বছর স্বাগত জানানোর আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ। সেখানে খাজার কথা আলাদাভাবে তুলে ধরেন তিনি। ‘মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়ানোর সাহসিকতা দেখানোয় খাজাকে আমি অভিনন্দন জানাতে চাই। সে সাহস দেখিয়েছে এবং পুরো দল তাকে যেভাবে সমর্থন দিয়েছে, দারুণ একটি বিষয়।’ পার্থে সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগে কেডসে ‘স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার’ ও ‘প্রতিটিই জীবনই সমান মূল্যবান’- এই দুই বার্তা লিখে অনুশীলন করেন খাজা। কিন্তু আইসিসির পোশাক আইনের পরিপন্থি বলে ম্যাচে তা ব্যবহারের অনুমতি পাননি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। পরে ওই ম্যাচে বাহুতে কালো ব্যান্ড পরে খেলেন খাওয়াজা। এটি নিয়ে আইসিসি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে পোশাক ও সরঞ্জাম আইনের ‘এফ’ ধারা ভঙ্গের। খাজা তখন বলেন, তিনি কালো ফিতা বেঁধেছিলেন ‘ব্যক্তিগত শোকের’ কারণে এবং আইসিসির অভিযোগের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ের ঘোষণা দেন তিনি। যা চলমান থাকে মেলবোর্নে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও। ওই ম্যাচের আগে কেডসে কোনো বার্তা না লিখে একটি ঘুঘু পাখির মুখে জলপাই শাখা সম্বলিত লোগোসহ কেডস পরে অনুশীলন করেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। বৈশ্বিক মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা অনুযায়ীই ম্যাচেও এটি ব্যবহারের অনুমতি চান খাজা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের ছাড়পত্রও তিনি পান। কিন্তু আইসিসি তাকে এটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। তাদের যুক্তি, আইন অনুযায়ী এই ধরনের ব্যক্তিগত বার্তা প্রকাশ করা যাবে না পোশাকে। শেষ পর্যন্ত মেলবোর্নে কেডসে দুই মেয়ের নাম লিখে খেলতে নামেন খাজা। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসন ও মানবিক সংকট নিয়েই তার এই লড়াই বলে ধারণা করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি নিয়ে বেশ সোচ্চার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। সিডনিতে আজ শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। ওই ম্যাচের আগে খাজার নতুন কোনো পদক্ষেপের ব্যাপারে জানা যায়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত