বছরজুড়ে অনেক খেলা সুযোগ অনেক

প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

মার্চ মাস থেকে জাতীয় দলের ‘মার্চপাস্ট’ শুরু। এ বছরে যে থামার কোনো ফুরসত নেই। ডিসেম্বরের শেষান্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে দুই দণ্ড বিশ্রাম। সাতটি আন্তর্জাতিক সিরিজ ও একটি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ২০২৪ সালে নাকে-মুখে ক্রিকেট। এই ব্যস্ত সূচিতে সাকিব আল হাসানদের তাল মেলানো কঠিন হয়ে পড়বে। বিসিবিকে তাই পুলের ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখতে হবে, চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ‘চাহিবামাত্র’ যেন খেলোয়াড় সরবরাহ করা যায়। নাজমুল হোসেন শান্তদের বছর শুরু বিপিএল দিয়ে। টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ৪০ দিনের অভিযান শেষ হতে না হতেই দরজায় কড়া নাড়বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ। এরপর শুধুই ছুটে চলা। বেশি খেলা থাকায় নতুন বছরে প্রত্যাশাও বেশি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় দেখতে চান বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকেন নির্বাচকরা। দলের সাফল্য-ব্যর্থতার ভাগ নিতে হয় তাদেরও। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ব্যর্থতা ভুলে নতুন বছরে সাফল্য দেখতে চান নির্বাচক হাবিবুল বাশার, ‘এ বছর বেশ ব্যস্ত সময় কাটবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের। আশা করি, নতুন বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের মানচিত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। যেহেতু অনেক খেলা, ভালো করার সুযোগ আছে। ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে নিজেদের এগিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ।’

গত তিন বছর আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে টি২০ বিশ্বকাপে বাজে ফল করেছে। ২০২২ সালে সাকিবের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপে তুলনামূলক ভালো করে সুপার টোয়েলভে নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে। ভারত, পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলে প্রশংসা কুড়ায়। যদিও ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাজে ফলের জন্য ভীষণ সমালোচিত সাকিবরা। বাশারের আশা, পরিকল্পিতভাবে এগোতে পারলে এ বছর টি২০ বিশ্বকাপে ভালো করার সুযোগ থাকবে, ‘ভারত বিশ্বকাপও আমাদের অনুকূলে ছিল। কিন্তু ভালো করিনি। আমার মনে হয়, এই বিশ্বকাপের আগে আমরা টি২০ কেমন খেলছি, সেটা দেখার বিষয়।

গত ১০ ম্যাচে খুব ভালো পারফরম্যান্স করেছি, যেটা টি২০ ক্রিকেটে উল্লেখ করার মতো। বিপিএল এবং বাকি খেলাগুলোয় কেমন খেলছি এবং দলটা কেমন গোছাতে পারলাম, তার ওপর বিশ্বকাপে ভালো করা, না করা নির্ভর করবে। যদিও বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ভালো করতে অনেক জিনিস লাগে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত হতে হবে।’ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সিরিজের পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় খেলাগুলোতে টি২০ ম্যাচ খেলা হবে বেশি। বিসিবির সাবেক গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার ও ক্রিকেটারদের মেন্টর নাজমুল আবেদীন ফাহিম মনে করেন, নতুন বছর ভালোভাবে শুরু করতে পারবে বাংলাদেশ। তার মতে, ওয়ানডে বিশ্বকাপের ধাক্কা সামলে নিয়ে বছরটা ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে নতুন বছরে পা রাখছেন তারা।

তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে এখনই দল গোছানোর পক্ষে ফাহিম, ‘আমাদের দলটা খুব দ্রুত গুছিয়ে ফেলা উচিত। গত বিশ্বকাপে দল গোছাতে অনেক দেরি করে ফেলেছে। এবারও দল গোছানোর ব্যাপার আছে। আমরা এখনো নিশ্চিত না টি-টোয়েন্টি দল কেমন হবে। যাদের নিয়ে খেলা হচ্ছে, তারা দলে নিশ্চিত না। এই প্রক্রিয়াটা দ্রুত শেষ করে ফেলা প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে গিয়ে পরিবর্তনগুলো যেন করতে না হয়। সামনে সাকিব, তাসকিন আসবে। তখন পুনর্গঠনের একটা ব্যাপার থাকবে। ওই জায়গাগুলোতে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। গত বিশ্বকাপে যা খেলেছি, তার চেয়ে ভালো খেলব আশা করতে পারি। ভালো খেলার কারণ হলো আমাদের বোলিং। ধারাবাহিকভাবে বোলিংয়ে উন্নতি দেখছি।’ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলার পক্ষে।

বিশ্বকাপ পরিকল্পনা বছরের শুরু থেকে করার পক্ষে মত তার, ‘আমি খুবই আশাবাদী। বর্তমান দলের যে পারফরম্যান্স দেখতে পাচ্ছি, তাদের ঠিকভাবে পরিচর্যা করা গেলে ভালো করবে। তবে এবার যে বিশ্বকাপ হয়ে গেল, সে রকম শেষ মুহূর্তে দল গোছালে কিছু হবে না। আগে থেকে স্কোয়াড প্রস্তুত করে ফেলতে হবে। এক মাস আগে খেলোয়াড়দের বার্তা দিতে হবে, তোমরা খেলছ। যাতে তারা মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতে পারে। এটা করলে ভালো পারফরম্যান্স করবে আশা করি।’ পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলে ২০২৪ সালে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট, সেটাই প্রত্যাশা।