মন্ত্রণালয় আর বিসিবি একসঙ্গে চালাবেন পাপন?

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রায় একযুগ ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন নাজমুল হাসান পাপন। তারও বেশি সময় সংসদ সদস্য হিসেবে নিজ এলাকায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। দেশের অন্যতম সেরা শিল্প গ্রুপ বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বও পালন করছেন। এবার যোগ হলো আরো বড় দায়িত্ব। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৬ আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন। মন্ত্রিসভায় ডাক পাওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন উঠে গেছে এবার বিসিবির দায়িত্বে থাকছেন নাজমুল হাসান পাপন? যদিও একসঙ্গে দুই দায়িত্বে থাকতে নেই কোনো বাধ্যবাধকতা। মন্ত্রিত্বের সঙ্গে বোর্ড সভাপতি থাকার বিষয়টি সাংঘর্ষিক নয়। ক্রিকেট বোর্ডে তিনি ৪ বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে বিসিবি সভাপতি পদে বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে তার। ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রীড়া আইনে মন্ত্রিত্ব পেলে কোনো ফেডারেশনের সভাপতিত্ব করা যাবে না- এমন কোনো নিয়ম নেই। তাই পাপন মন্ত্রী হলেও আপাতত বিসিবির সভাপতির দায়িত্বও পালন করবেন। শপথ গ্রহণ করতে গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবভনে উপস্থিত হন পাপন। সেখানে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে বিসিবির সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই।

আগেও আমাদের এখানে অনেক মন্ত্রী ছিলেন, যারা বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদেশেও আছে। কিন্তু সেটা ইস্যু না। আমার আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল, এই মেয়াদেই দায়িত্ব ছাড়ার। যেটা শেষ হবে আগামী বছর। আমি চেষ্টা করব এ বছর শেষ করা যায় কিনা।’ অতীত ইতিহাস বলছে একই সঙ্গে বিসিবির সভাপতি ও মন্ত্রীত্ব পালন করেছেন অনেকেই। ৪ জুলাই ১৯৯৬ থেকে ১৮ আগস্ট ২০০১ পর্যন্ত বিসিবি সভাপতি ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। সে সময় সংসদ সদস্য থাকা সাবের হোসেন সাড়ে তিন বছর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী ছিলেন। ১ জানুয়ারি ১৯৯৮ থেকে ১৫ জুলাই ২০০১ পর্যন্ত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন সাবের। তালিকাটা বেশ দীর্ঘই বলা যায়। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ একই সঙ্গে ছিলেন বিসিবি সভাপতি। এরপর আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানও ৯১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত পাক্কা ৫ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব ছিলেন। এদিকে শুধু বিসিবির দায়িত্বেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা- আইসিসিরও বেশ কিছু দায়িত্বে আছেন পাপন। মেয়াদ শেষের আগে তাই বিসিবির দায়িত্ব ছাড়তে চাইলেও আইসিসির দায়িত্ব ছাড়া নিয়ে কিছুটা ঝামেলা পোহাতে হবে তাকে। পাপন বলেন, ‘আইসিসির আবার কিছু নিয়ম কানুন আছে। ওদের বেশ কিছু কমিটিতে আমি আছি। বিশেষ করে চেয়ারম্যানও আছি। ওরা আবার এটা পরিবর্তন করে না। মেয়াদ শেষ করার আগে নতুন কাউকেও নেয় না। সামনের বছর তো এমনিতেই করতাম। চেষ্টা করব, এ বছর শেষ করা যায় কিনা।’

২০১২ সালের অক্টোবর মাসে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন পাপন। এরপর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। টানা চতুর্থ মেয়াদে তিনি এই দায়িত্বে রয়েছেন। সবশেষ ২০২১ এর নির্বাচনে বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হন তিনি। সেখান থেকে পরিচালকদের ভোটে সভাপতি হন পাপন, যে কমিটির মেয়াদ ২০২৫ পর্যন্ত।