ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যে কারণে হঠাৎ লন্ডন গেলেন সাকিব

যে কারণে হঠাৎ লন্ডন গেলেন সাকিব

সেই বিশ্বকাপের সময় থেকেই চোখের রেটিনার সমস্যায় ভুগছেন সাকিব আল হাসান। মাঝে খানিকটা সুস্থ হলেও, সম্প্রতি আবারও দেখা দিয়েছে তার চোখের সমস্যা। ফলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরুর আগে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিশ্বখ্যাত এই অলরাউন্ডার। সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গতকাল রোববার রাতে লন্ডনের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মেডিকেল বিভাগ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশ ছাড়ার আগে ঢাকায় সাকিবের চোখে একটি রুটিন পরীক্ষা করানো হয় বলে জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আসলে একটা রুটিন পরীক্ষা করা হয়েছে। যেহেতু বিপিএল সামনে, অনেকদিন সে ব্যস্ত থাকবে। তার আগে সতর্কতামূলক একটা পরীক্ষা করানো হয়।’ চোখের পরীক্ষা করিয়ে বসুন্ধরা কিংসের মাঠে ব্যাটিং অনুশীলন করেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক। রংপুর রাইডার্সের অনুশীলন শুরুর বেশ কিছুক্ষণ পর সাকিবকে দেখা গেল মাঠে। অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি জাতীয় নির্বাচন শেষ হওয়ার পরদিন থেকেই। তবু এ দিন তাকে দেখে বিস্মিত অনেকেই। তার চোখে যে চশমা! একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখা গেল, রোদচশমা নয়, সাধারণ চশমাই সেটি। চশমা চোখে নেটে প্রায় আধঘণ্টা নক করলেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে সাকিবের মাঠে ঢোকা থেকে শুরু করে নক করার পুরো সময়টায় খুব কাছাকাছি ছিলেন বিসিবির চিকিৎসক মঞ্জুর হোসেন চৌধুরি। চশমা ব্যবহারের কারণটি অনুমান করে নিতে তাই সমস্যা হয়নি। চোখের যে সমস্যায় তিনি ভুগছেন গত বিশ্বকাপ থেকে, সেটির সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে চশমার আশ্রয় তিনি নিয়েছিলেন। তবে রংপুর রাইডার্সের দল সূত্রে জানা গেছে, চশমা ব্যবহার করেও খুব একটা উপকার পাননি সাকিব। চোখের চিকিৎসক দেখাতে তাই দেশের বাইরে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বিপিএল শুরুর আগেই তার ফেরার কথা। তবু টুর্নামেন্টের শুরুতে তাকে পাওয়া নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তাও তৈরি হতে পারে। গত বিশ্বকাপ চলার সময় চেন্নাইয়ে চোখের চিকিৎসক দেখিয়েছিলেন সাকিব। তবে কোনো সমস্যার কথা তখন আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে তিনি নিজেই জানান, গত বিশ্বকাপে চোখের সমস্যায় ভুগছেন তিনি এবং গোটা বিশ্বকাপ সেই সমস্যা নিয়েই খেলেছেন। ব্যাটিংয়ে বল দেখার ক্ষেত্রে প্রবল অস্বস্তি হয়েছে বলেও জানান তিনি। বিসিবির মেডিকেল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চেন্নাইয়ে চিকিৎসক দেখানোর পর চোখের ড্রপ দেয়া হয়েছিল তার জন্য। কিন্তু সেটি কাজে লাগেনি খুব একটা। চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তার চোখের এই সমস্যা হচ্ছে ‘স্ট্রেস’ থেকে, চাপ কমে গেলে সমস্যাও কমে যাবে। বিশ্বকাপের মধ্যে চাপ কমার উপায়ও ছিল না। তার ব্যাটিং স্টান্স, হেড পজিশনে বড় পরিবর্তনও দেখা যায় বিশ্বকাপ চলার সময়। সেটি মূলত চোখের সমস্যার কারণেই। পরে তো বিশ্বকাপের শেষ দিকে আঙুলের চোট নিয়ে ছিটকে যান তিনি। চেন্নাইয়ের চিকিৎসকের কথার সত্যতা পাওয়া যায় পরে। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সাকিব আবার চিকিৎসক দেখান, তখন কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি। ধরে নেয়া হয়, তখন চাপ ছিল না বলেই চোখের সমস্যাও ছিল না। এরপর দেশে ফিরে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারে রাত-দিন ব্যস্ত সময় কেটেছে তার। চাপও ছিল প্রচণ্ড। নির্বাচন শেষে অনুশীলনে ফেরার পর আবার চোখের সমস্যাও ফিরে আসে। সম্ভাব্য সমাধান হিসেবেই রোববার চশমা-পরীক্ষা চালানো হয়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। চিকিৎসাশাস্ত্রের বক্তব্য, কোন ব্যক্তি ব্যাপক পরিমাণ মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে তার চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে। চোখ মস্তিষ্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকায়, স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ চোখের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই হরমোনের নিঃসরণ রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। যাতে দৃষ্টিশক্তিতে বাঁধা দেখা দেয়। সাকিবও আপাতত ভুগছেন সেই সমস্যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত