স্টেডিয়ামের চেয়ে খেলার মাঠ বেশি জরুরি : ক্রীড়ামন্ত্রী

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

টানা তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হয়েও মন্ত্রীত্বর স্বাদ পাওয়া হচ্ছিল না। অবশেষে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জিতে প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। টানা চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। মন্ত্রী হিসেবে গতকাল রোববার ছিল পাপনের প্রথম কর্মদিবস। এদিন সকালে তিনি প্রথমেই যান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। বিকেলে যান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। সেখানে ক্রীড়াঙ্গনের সর্বস্তরে মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী। পরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্টেডিয়ামসহ যথেষ্ট পরিমাণন ক্রীড়া অবকাঠামো রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্টেডিয়াম এর চেয়েও আমাদের খেলার মাঠ বেশি জরুরি। যেটি আমাদের তরুণ প্রজন্মসহ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। খেলোয়াড় সৃষ্টিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এর পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে প্রশিক্ষণকে প্রাধান্য দেয়া হবে।’ সকল ধরনের খেলাধুলাকে এগিয়ে নেবার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘ফুটবল ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলাতেও আমাদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো, যারা আমাদের থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে থাকে তাদের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। আগামী তিন বছর পর তারা কোথায় যেতে চাই, কি অর্জন করতে চাই সেটি তাদের জানাতে হবে। আমি অল্প সময়ের মধ্যেই ইনডিভিজুয়ালি প্রতিটি ফেডারেশনের সঙ্গে বসবো। তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা শুনব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অনেক ফেডারেশন ভালো ফলাফল করছে। আমাদের ফুটবল এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে নারী ফুটবলাররা ভালো করছে। ছেলেরাও উন্নতি করেছে। শুটিং, আর্চারিসহ আরো অনেকে উন্নতি করছে। ক্রিকেটের মতো অন্যান্য খেলাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।’ এ সময়ে দেশের যুবগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। ঢাকায় মাঠ সংকটের বিষয়টি উল্লেখ করে ক্রিকেটের সমস্যাও সামনে আনেন নাজমুল হাসান, ‘মিরপুর স্টেডিয়াম ছাড়া ঢাকায় সেভাবে মাঠ নেই। ফলে মিরপুরে অনেক চাপ পড়ছে এবং এজন্য উইকেটের মানও ভালো হচ্ছে না।’ স্টেডিয়াম নির্মাণ ও সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথ হয় না। এই বিষয়টিও তুলে ধরেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী, ‘স্টেডিয়াম কিন্তু আমাদের অনেক রয়েছে। অনেক স্টেডিয়াম তালাবদ্ধ খেলা হয় না, আবার অনেক স্টেডিয়াম সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়।’ তাই তিনি এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার তাগিদ অনুভব করেছেন, ‘আমাদের আগে দেখতে হবে স্টেডিয়ামের সংখ্যা কত এবং এর মধ্যে সক্রিয় কয়টি। এরপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।’ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেট হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। এর মধ্যে যুব খাতেই চলে যায় অনেক অর্থ। ক্রীড়াঙ্গনে যে টাকা থাকে এর আবার সিংহভাগ অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশাসনিক ব্যয়। ক্রীড়ার প্রশিক্ষণে তুলনামূলক বেশি বরাদ্দ থাকে না। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণও প্রয়োজন বলে মনে করেন নতুন মন্ত্রী, ‘প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনি প্রয়োজন অবকাঠামো নির্মাণও। খেলোয়াড়দের জন্য ভালো এবং উন্নতমানের জায়গা দেয়া দরকার প্রশিক্ষণ করানোর জন্য।’ এদিন সকাল ৯টায় মন্ত্রণালয়ে তার অফিস কক্ষে আসেন নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।