অস্ট্রেলিয়ান ওপেন-২০২৪

মুকুট ধরে রাখলেন সাবালেঙ্কা

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

১১ বছর আগে শেষবার দেখা গিয়েছিল এমন। ২০১২ সালে জেতা অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের খেতাব পরের বছরও ধরে রেখেছিলেন ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা। বেলারুসের টেনিস সুন্দরী যা করেছিলেন, তাঁরই দেশের মেয়ে করে দেখালেন আবার। এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে মেয়েদের টেনিসে চ্যাম্পিয়ন আরিয়ানা সাবালেঙ্কা। আসরের শুরু থেকে একের পর এক চমক দেখিয়ে, বিস্ময় জাগিয়ে ফাইনালে উঠে আসা জং চিংওয়ান শেষ ধাপে তেমন কিছুই করতে পারলে না। তাকে একরকম গুঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মুকুট ধরে রাখলেন আরিনা সাবালেঙ্কা। গতকাল শনিবার মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনায় নারী এককের একপেশে ফাইনালে ৬-৩, ৬-২ গেমে জিতেছেন বেলারুশের তারকা। সাবালেঙ্কার দাপুটে পারফরম্যান্সে সোয়া এক ঘণ্টাতেই শেষ হয়ে যায় লড়াই। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের হাতছানিতে কোর্টে নামলেও সাবালেঙ্কার অভিব্যক্তিতে ছিল না তেমন কোনো স্নায়ুচাপের ছাপ। তার পারফরম্যান্সও ছিল প্রায় নিখুঁত। শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই ২০১৩ সালের পর প্রথম নারী হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা ধরে রাখার কীর্তি গড়লেন তিনি। সবশেষ এই কীর্তি গড়েছিলেন সাবেক নাম্বার ওয়ান ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা; ২০১২ ও ২০১৩ সালে এখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি। অসাধারণ এই কীর্তি গড়ে এবং দ্বিতীয় মেজর ট্রফির স্বাদ পেয়ে আনন্দের সীমা নেই ২৫ বছর বয়সী সাবালেঙ্কার। ‘চমৎকার দুটি সপ্তাহ কাটল এবং কল্পনাও করতে পারিনি যে এই ট্রফিটা আরও একবার উঁচিয়ে ধরতে পারব।’ ফাইনালের তরুণ প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানাতেও ভোলেননি তিনি। ২১ বছর বয়সি চিংওয়ান এবারই প্রথম কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠতে পারেন। ‘অস্ট্রেলিয়ায় এবার চিংওয়ানেরও অবিশ্বাস্য দুটি সপ্তাহ কেটেছে। আমি জানি, ফাইনালে হেরে যাওয়া খুব কষ্টের, কিন্তু তুমি অসাধারণ এক খেলোয়াড়, বয়স অল্প। ভবিষ্যতে তুমি অনেক ফাইনালে উঠবে এবং জিতবে।’ এই শিরোপা জয়ের মধ্যে দিয়ে অসাধারণ আরেকটি কীর্তি গড়েছেন সাবালেঙ্কা। ফাইনালে ওঠার পথে প্রথম ছয় ম্যাচে কোনো সেট হারেননি তিনি। শেষ ধাপেও সেই দাপট ধরে রেখে এই এলিট ক্লাবে যোগ দিলেন সাবালেঙ্কা; ২০০০ সাল থেকে করতে পেরেছেন কেবল অ্যাশলে বার্টি, সেরেনা উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভা ও লিন্ডসে ডেভেনপোর্ট। বাবা সর্গেই ছিলেন আইস হকি প্লেয়ার। তার মেয়ের টেনিস এসে পড়াটা ছিল কাকতালীয়। সাবালেঙ্কাই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাবার সঙ্গে কোথাও একটা বেড়াতে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় যেতে যেতে হঠাৎই একটা টেনিস কোর্ট দেখে বাবা। গাড়ি থামিয়ে সেখানেই নিয়ে যান আমাকে। সেখানে টেনিস খেলে আনন্দ পেয়েছিলাম। সেই যে শুরু করেছি, আজও চলছে।’ ২০১৭ সাল পর্যন্ত টেনিস দুনিয়ায় তেমন পরিচিতিই পাননি সাবালেঙ্কা। বেলারুসের ফেড কাপ টিম রানার্স হয়েছিল সেবার। ২০১৯ সালে মেয়েদের ডাবলসে ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হন। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আবার জেতেন জুটিতে। তাতেও স্বপ্নপূরণ হচ্ছিল না। ২০২৩ সাল থেকে সাবালেঙ্কাকে আর থামানো যায়নি। ওই বছরটা ছিল স্বপ্নের মতো। উইম্বলডন ও ফরাসি ওপেনের সেমিতে ওঠেন। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে পৌঁছন। আর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন হন। এ বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লামও নিজের দখলে নিলেন ২৫ বছরের মেয়ে।