মিরাজ-মালিকের ঝড়ে খুলনাকে থামাল বরিশাল

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

দুই ওভারে বরিশালের চাই ৩৭ রান। ক্রিজে পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এই দুই ব্যাটার তুলে ফেললেন ১৯ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৮ রান। দাসুন শানাকার প্রথম বলে ছক্কা মারলেন মিরাজ। বরিশালের সমর্থকদের গর্জনে কেঁপে উঠল গ্যালারি। পরের বলে এলো সিঙ্গেল। এবার শোয়েব মালিকের পালা। বোলারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারির পর চোখধাঁধানো শটে ছক্কা হাঁকালেন এক্সট্রা কাভার দিয়ে। পরের বলেই ওয়াইড। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে রোমাঞ্চকর জয় পাইয়ে দিলেন তারা। এতে চলমান বিপিএলে টানা চার জয়ের পর প্রথম হারের স্বাদ পেল খুলনা টাইগার্স। গতকাল শনিবার সিলেটে শেষদিকে তুমুল জমে ওঠা ম্যাচে ৫ উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়েছে বরিশাল। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রানের সংগ্রহ গড়ে খুলনা। জবাবে ২ বল বাকি থাকতে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বরিশাল। এবারের আসরে ছয় ম্যাচে এটি তাদের তৃতীয় জয়। ম্যাচসেরা মালিক দুবাই থেকে ফেরার পর প্রথমবার মাঠে নেমেই অলরাউন্ড নৈপুণ্য উপহার দেন।

এর আগে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েও লড়াইয়ের পুঁজি পায় খুলনা। সেখানেও মূল ভূমিকা রাখেন পাকিস্তানের দুই অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজ ও ফাহিম আশরাফ। এক পর্যায়ে, ১৬ ওভারে দলটির রান ছিল ৭ উইকেটে ৮৮। এরপর তারা দেড়শ পার করে ২৪ বলে ৬৭ রানের অষ্টম উইকেট জুটিতে। নওয়াজ ২৩ বলে ৪ ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়া ফাহিমের ব্যাট থেকে স্রফে ১৩ বলে আসে ৩২ রান। ৫ চারের সঙ্গে ১ ছক্কা হাঁকান তিনি। খুলনার অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় সুবিধা করতে পারেননি। মাহমুদুল হাসান জয় বিদায়ের আগে ছিলেন খোলসবন্দি। আফিফ হোসেন রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মালিকের বলে গোল্ডেন ডাকের তেতো অভিজ্ঞতা হয় তার। তবে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন করেন ৩৩ রান। তিনি ২৪ বল মোকাবিলায় মারেন ৪ চার ও ১ ছক্কা। মালিকের পাশাপাশি ২ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। বাঁ-হাতি স্পিনার ৩ ওভারে ভীষণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দেন মোটে ৭ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদের উইকেট হারায় বরিশাল। এরপর ধাক্কা সামলে নিলেও দলটির কোনো জুটিই বড় হচ্ছিল না। তারকা ব্যাটাররা চালিয়ে খেলতে না পারায় রানের চাকায় চলতে থাকে ঢিমেতালে। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ১৮ বলে ২০ রান, সৌম্য সরকার ২৩ বলে ২৬ রান ও মুশফিকুর রহিম ২৫ বলে ২৭ রানে আউট হয়। মাহমুদউল্লাহকেও সাবলীল ঢঙে পাওয়া যায়নি। ৯ বল খেলে তার ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। ১০১ রানে ৫ উইকেটের পতনের পর জুটি বাঁধেন মালিক ও মিরাজ। তবে শুরুতে তারাও চাহিদা অনুযায়ী মারতে পারছিলেন না।

সেই চিত্র পাল্টে যায় শেষদিকে। উত্তাল হয়ে ওঠে তাদের ব্যাট। পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে ১৯তম ওভারে একটি করে ছক্কা হাঁকান দুজন। ২০তম ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ৬ বলে ১৮ রান। শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকার প্রথম বলেই মিরাজের ছক্কা। পরের বলে আসে সিঙ্গেল। তৃতীয় ও চতুর্থ ডেলিভারিতে যথাক্রমে চার ও ছয় মেরে জয়ের পাল্লা নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন মালিক। এরপর ওয়াইড হলে আনন্দে মাতে বরিশাল। খুলনাকে পুড়তে হয় মুঠো থেকে বেরিয়ে যাওয়া ম্যাচ হারের আক্ষেপে।