ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সমস্যা কোথায় নিজেই জানেন না সাকিব

সমস্যা কোথায় নিজেই জানেন না সাকিব

অলরাউন্ডার মানেই একের ভিতর দুই। আরো পরিস্কার করে বললে একজনকে দিয়ে দুইজনের কাজ হওয়া বোঝায়। সাকিব আল হাসান ঠিক তেমনই একজন। তিনি দলে থাকা মানে দুই জনের সার্ভিস পাওয়া। কিন্তু চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সেই কাজটি ঠিকঠাক করতে পারছেন না সাকিব। বেশ কিছু দিন ধরেই চোখের রেটিনা সমস্যায় ভুগছেন বিশ্বখ্যাত এই অলরাউন্ডার। যে কারণে স্বাচ্ছন্দে বোলিং করতে পারলেও ব্যাটিংটা মনমত হচ্ছে না তার। দিন দুই আগে সাকিবের গুরু খ্যাত কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘সে যদি ব্যাট-ই করতে না পারে, তাহলে ক্রিকেটই ছেড়ে দেবেন।’ তবে এখনই এসব নিয়ে ভাবতে নারাজ টাইগার অলরাউন্ডার। আরও চেষ্টা করে যেতে চান তিনি। গেল বছর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন সাকিব। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এমনকি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়েও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। চোখের সমস্যার প্রভাব পড়ছে তার ব্যাটিংয়ে। চলতি বিপিএলে একদমই রান পাচ্ছেন না। সর্বশেষ ম্যাচে গত শনিবারও সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষেও গোল্ডেন ডাক খেয়েছেন। এদিন ম্যাচ শেষে মাঠের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেই সাকিব আল হাসান ছুটলেন গ্যালারির দিকে। হাত মেলালেন রংপুর সমর্থকদের সঙ্গে। এরপর দ্রুত পায়ে চলে এলেন সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। পুরো সংবাদ সম্মেলনজুড়ে বেশিরভাগ প্রশ্ন হলো তার চোখ নিয়ে। বর্তমানে যে সমস্যায় তিনি ভুগছেন সেটা ঠিক হওয়া নিয়ে আছে অনিশ্চয়তা। তবে এই সমস্যাটা যে এত গুরুতর কিছুও না তাও জানালেন প্রশ্নকর্তার দিকে ইঙ্গিত করে, ‘জানি না আমার ধারণা নাই যে এটা কখনো ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর এই যে বারবার চোখ, চোখ বলছেন চোখের কোন সমস্যা নাই। আপনি চশমা পরে যা দেখেন, চশমা না পরে আপনার চেয়ে ভালো দেখি। কী সমস্যা আছে সেটা খোঁজার চেষ্টা করছি।’ চোখে কোন সমস্যা নাই তাহলে কোন কারণে ব্যাট করতে ভুগছেন তিনি? এই উত্তর সাকিবেরও অজানা, ‘এটাই তো আমি খুঁজতেছি। আমি বের করার চেষ্টা করছি। বাকিরাও চেষ্টা করছে।’ বিসিবি বিবৃতিতে জানিয়েছিল নানান পরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, সাকিব ভুগছেন ‘এক্ট্রাফোভিয়াল সেন্ট্রাল সেরিওস কোরিওরেটিনোপ্যাথি’ বা সিএসআর নামক সমস্যায়। এই ধরণের সমস্যা মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে বলে বলেন কোন কোন বিশেষজ্ঞ। সাকিবও তার মানসিক চাপের বিষয় উড়িয়ে দেননি, ‘এটা তো আপনার একটা ভালো প্রশ্ন যে বেড়ে যাচ্ছে কিনা। মাঝেমধ্যে আমারও চিন্তা হয় এটা করলে বেশি হয়ে যাচ্ছে কি না।’ তবে নিজের দল, শৈশবের কোচ সবার সহযোগিতা পাচ্ছে। আপাতত চেষ্টা করে দেখে যেতে চান নিজের পরিস্থিতি, ‘আমার এখনো ভাবনা নাই, চেষ্টা করছি। চেষ্টাটা শেষ করে নেই।’ অলরাউন্ডার হয়েও কেবল বোলার হিসেবে খেলায় রংপুরকে পুরোটা দিতে পারছেন না। তবু রংপুর রাইডার্স যেভাবে তার পাশে আছে তাতে তাদের কৃতজ্ঞতা জানান তিনি, ‘জীবনে কখনো এরকম করিনি। একটা দিক নিয়ে খেলতে হচ্ছে। রংপুর রাইডার্সকে ধন্যবাদ। তারা যে প্রত্যাশা নিয়ে আমাকে দলে নিয়েছিল আমি অর্ধেক করতে পারছি। তবু তারা যে সহযোগিতা করছে তাদেরকে ধন্যবাদ অবশ্যই দিতে হয়। এরকম ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলতে পেরে আমি গর্বিত।’ বিপিএল খেলতে পারলেও এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা যে কঠিন সাকিবের কথায় মিলেছে সেই আভাস। বিপিএলের পর পরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ আছে বাংলাদেশের। এখনো তিন সংস্করণের অধিনায়ক থাকা সাকিব সেই সিরিজ খেলবেন কিনা, খেললেও অধিনায়ক থাকবেন কিনা তা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে হবে তার আলোচনা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত