নিজেকে প্রমাণের মঞ্চে মমিনুল

প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

এই সেদিনও বড্ড একার পৃথিবী ছিল তার। অন্যরা বিপিএলের স্রোতে মিশে গেলেও মমিনুল হকের কোনো ঠিকানা ছিল না। তবু বসে না থেকে মিরপুরের ইনডোরে নিঃসঙ্গ অনুশীলন চালিয়ে গেছেন বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক। এমনকি সাদা বলেও অনুশীলন করেছেন। যদিও ১০ বছর আগে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা ব্যাটারের এই সংস্করণে কোনো ভবিষ্যৎ দেখা যাচ্ছিল না। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলারও যখন ছয় বছর হতে চলেছে, তখন শুধুই টেস্ট ক্রিকেটারের তকমাটা স্থায়ীই হয়ে যায় একরকম। মমিনুল অবশ্য তাতেও দমে যাননি। একটি সুযোগের অপেক্ষায় নিজেকে প্রতিনিয়ত তৈরিই রাখতে চেয়েছেন। গত মাসে বিপিএলের দশম আসর শুরুর দিন চারেক আগেও তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আমার কাজটি করে যাচ্ছি। নিজেকে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রস্তুত রাখার চেষ্টা করছি। আপনারা আমাকে টেস্ট ক্রিকেটার বলছেন বলে আমি থেমে নেই। টেস্টে সফল হতে গেলে সব ধরনের শট খেলার উপায় নেই। তবু আমি নিজের শটের রেঞ্জ বাড়াচ্ছি। বলতে পারেন, সিলেবাসের বাইরের শটও রপ্ত করার চেষ্টা করছি। একটিই কারণ আমি নিজেকে সব সংস্করণের জন্য তৈরি রাখতে চাই।’ তৈরি থাকলেই তো আর হয় না, সুযোগও মিলতে হয়। মাস না ঘুরতেই সেই সুযোগটি পেয়েও গেলেন মমিনুল। একা একা অনুশীলন করে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার দিন পেরিয়ে এবার নিজেকে তিনি আবিষ্কার করলেন সদলবলের কোলাহলে। আগের দিন রাতেই তাকে দলভুক্ত করার ঘোষণা দেয় রংপুর রাইডার্স। আর গতকাল বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ‘হোম অব রাইডার্স’-এর মাঠে সবার অনুশীলনের মধ্যে মমিনুল আলাদাভাবে নজর কাড়লেন হুট করে তার বিপিএলের দুয়ার খুলে যাওয়াতেই। সে জন্যই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতি কৃতজ্ঞতায় নুয়ে পড়তে চাইলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, ‘রংপুরকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। এই সুযোগ সবাই পায় না। রংপুর আমাকে সুযোগটি করে দিয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’ বিপিএলে দল না পাওয়ার বেদনায় হয়তো একদম ডুবে যাননি, তবে স্বীকার করলেন যে মন খারাপ করা অনুভূতি হয়েছে তারও, ‘খারাপ লাগারও বিভিন্ন ধরন থাকে। আমার ধরনটি একটু ভিন্ন ছিল। কারো হয়তো একটু খারাপ লাগে, কারো হয়তো বেশি খারাপ লাগে। একটু খারাপ লাগছিল (আমার)। এমন নয় যে একেবারে হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। সবাই যেহেতু খেলছে, আমারও একটু খেলার ইচ্ছা ছিল। এই আর কী!’ আবারও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে খেলার স্বপ্ন দেখেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিপিএল শুরুর আগেই বলেছিলেন, ‘কেন নয়? আমার সামনেই অসংখ্য উদাহরণ আছে। কেউ কি ভেবেছিল যে এনামুল হক বিজয় আবার কখনো টেস্ট খেলবে? ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে খেলেছে তো। সে কি প্রিমিয়ার লিগে এক হাজার রান করে দলে ফেরেনি? আমিও আমার কাজ করে যাচ্ছি। সময়ে এই পরিশ্রমের সুফলও মিলবে।’ তবে রান করে নিজের সামর্থ্য প্রমাণের জন্যও একটি মঞ্চ লাগে। এনামুলের ওয়ানডে দলে ফেরার জন্য সেই মঞ্চ ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ।