ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘ব্যবহার কেউ খারাপ করেনি নিজেরই লজ্জা লাগে’

টানা হার প্রসঙ্গে তাসকিন আহমেদ
‘ব্যবহার কেউ খারাপ করেনি নিজেরই লজ্জা লাগে’

টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে দিয়েছিল দুর্দান্ত ঢাকা। তাদের সেই জয় এখন স্রেফ দুর্ঘটনাই বলতে হবে। কারণ, এরপর টানা আট ম্যাচই যে হেরেছে দলটি। বিপিএলের ইতিহাসে গড়েছে টানা হারের বিব্রতকর রেকর্ড। মোসাদ্দেক হোসেনের নেতৃত্বে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল দলটি। ষষ্ঠ ম্যাচের পর হাঁটুর ব্যথার কারণে আর খেলতে পারছেন না এই অলরাউন্ডার। তার জায়গায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহ-অধিনায়ক তাসকিন। কিন্তু দলের ভাগ্যে পরিবর্তন আসেনি। অভিজ্ঞ পেসারের নেতৃত্বেও টানা তিন ম্যাচ হেরেছে ঢাকা। নেতৃত্বের রোমাঞ্চের কথা আগে বলেছিলেন তাসকিন। এখন কাঁটার আঘাতও অনুভব করছেন। দল যে একের পর এক ম্যাচ হেরেই চলেছে! ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকপক্ষ থেকে অবশ্য কোনো চাপ দেয়া হয়নি বা তাদের আচরণে কোনো বদল আসেনি। তবে দলের পারফরম্যান্সে নিজেরই খারাপ লাগছে বলে জানালেন দুর্দান্ত ঢাকার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামন্টে কোটি কোটি টাকা খরচ করে দল গড়া হয়। পরে মাঠের ফলাফলে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তি না মিললে হতাশাও আসে। এবার দুর্দান্ত ঢাকা যেমন মাঠের পারফরম্যান্সে দুর্দান্ত নয় একদমই। ৯ ম্যাচে স্রেফ ২ পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। গতকাল রোববার সবশেষ ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে হেরেছে ঢাকা। বরিশালের ১৮৯ রানের জবাবে ১৪৯ রানে থেমে ৪০ রানে হেরেছে তারা। আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হওয়া ঢাকার বাকি আছে আর তিন ম্যাচ। স্রেফ এক জয় নিয়ে দলটির তলানিতে থাকা নিশ্চিত। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তাসকিন জানান এভাবে হারতে থাকায় মোরালি ডাউন অবস্থা হয় সবার, ‘টুর্নামেন্টের ৭০ ভাগ শেষ। ওভারঅল দুটি ম্যাচ ছাড়া বেশিরভাগ ভালো ক্রিকেট খেলা হয়নি। ব্যাটিংয়ে বেশিরভাগ ম্যাচে আমরা ফেল করেছি। আমার মনে হয় আরো ভালো ক্রিকেট খেলা উচিত ছিল। তাছাড়া হারতে থাকলে মোরালি ডাউন থাকে। তখন কিছু না কিছু মিসটেক হয়েই যায়। এখন দোষ বের করলে তো অনেক সমস্যা বের হবেই। তিনটা ম্যাচ আছে, ভালো ক্রিকেট খেলে যতটা শেষ করা যায়। ফ্রাঞ্চাইজিরা তো প্রত্যাশা করে আমরা জিতি।’

দুর্দান্ত ঢাকার অধিনায়ক বলেন, ‘এটা তো দলীয় খেলা। দুজন-চারজন কোনো না কোনো জায়গায় খারাপ খেলেই ফেলছে। নাম নিব না। কারণ এটা দলীয় খেলা। আজ এ খারাপ করেছে, কাল ও। একদিন আমি। এভাবে আমরা খারাপ করেছি। জেতা জেতা ম্যাচগুলো দুর্বলতার কারণে হেরে গেছি। এটা অবশ্যই ভালো অনুভূতি নয় অবশ্যই। আমাদের পরিবারও আছে। তারাও জিজ্ঞেস করে, ‘জিততে পারছ না কেন?’ জিততে তো আমরাও চাই, ব্যাটিং বা বোলিং কোন না কোন জায়গায় হেরেই যাচ্ছি।’ তবে পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত না হলেও অবশ্য দলের মালিকপক্ষ বা ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত আচরণ মেলেনি বলেই জানালেন তাসকিন। তবে তারা নিজেরাই বরং বিব্রত। ‘ব্যবহার কেউ খারাপ করেনি। তবে নিজেরই একটু লজ্জা লাগে। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তো দলে নেয় আমাদেরকে, (টাকা) খরচ করে অনেক আশা নিয়ে। তার পর যখন দল ফল পায় না, নিজেরই খারাপ লাগে। আমি আমার দিক থেকে শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করছি। এটা আমার হাতে আছে। এই তো।’ বিপিএলে এবারই প্রথম নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা হলো তার। প্রথম ম্যাচের পর তিনি বলেছিলেন সেই রোমাঞ্চের কথা। তবে টানা পরাজয়ে রোমাঞ্চ উবে যাওয়ারও কথা। তিনি অবশ্য বললেন, দায়িত্ব উপভোগ করার চেষ্টা করছেন। ‘কাজটা খুব সহজ নয়। এই প্রথম করলাম, তিনটি ম্যাচে। অনেক কিছু খেয়াল রাখতে হয়। অবশ্যই এতে ম্যাচ সচেতনতা অনেক বাড়বে। ভবিষ্যৎ তো কালকে কী হবে, এটাই জানি না। স্রেফ মুহূর্তটি উপভোগ করার চেষ্টা করছি।’ ৯ ম্যাচে স্রেফ ১ জয় প্রত্যাশিত না হলেও কাগজ-কলমের শক্তিতে টুর্নামেন্টের পেছনের সারির দলগুলিরই একটি দুর্দান্ত ঢাকা। তাসকিনই সম্ভবত এই দলের সবচেয়ে বড় তারকা। গত বিপিএলেও ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা ডমিনেটর্সে ছিলেন তিনি।

সেবারও খুব ভালো দল গড়তে পারেনি ওই ফ্র্যাঞ্চাইজি। এর আগের বিপিএলে তিনি ছিলেন রংপুর রেঞ্জার্সে। খুব ভালো দল ছিল না তারাও। এ নিয়ে একটু হতাশাও আছে তাসকিনের মনে। তবে বাস্তবতাও তিনি মেনে নিচ্ছেন। ‘হ্যাঁ, অবশ্যই মাঝেমধ্যে এই অনুভূতি হয় যে আমাদের দল যদি আরও ভালো হতো। এই নিয়ে তিনটি বছর প্লে অফে যায়নি বা ফল ভালো করেনি দল। মাঝেমধ্যে খারাপ লাগে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত