ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিসিবির বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত

বদলে গেল নির্বাচক প্যানেল তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক শান্ত

বদলে গেল নির্বাচক প্যানেল তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক শান্ত

অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বহুল প্রতিক্ষিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়ে গল। গতকাল সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিসিবির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ সভা। তাতে যোগ দেন বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে মিরপুরে প্রবেশ করেন তিনি। এ সময় বিসিবির পক্ষ হতে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। মূলত ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ায় এই শুভেচ্ছা প্রদান করা হয় পাপনকে।

বিসিবির অন্য যে কোনো সভার চেয়ে এবারের সভা কিছুটা বাড়তি গুরুত্ব ছিল। কারণ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা ছিল। তারমধ্যে অন্যতম বিশ্বকাপ ব্যর্থতার তদন্ত প্রতিবেদন, জাতীয় দলের নেতৃত, নির্বাচক প্যানেল, জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তি। এছাড়া তামিম ইকবালের খেলা, না খেলা। এ প্রতিবেদন লিখার সময় দুটি বিষয়ে বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত জানা গেছে। তার মধ্যে তিন ফরম্যাটে নতুন অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নতুন নির্বাচক প্যানেলের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন বোর্ড সভা শেষে এই ঘোষণা দেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান। বর্তমানে বাংলাদেশ দলের তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে সাকিব বাংলাদেশের শেষ বারের মতো অধিনায়কত্ব করে ফেলেছেন। বাংলাদেশের নেতৃত্বে সাকিবের আর আগ্রহ না থাকায় তিন ফরম্যাটেই অধিনায়ক করা হয়েছে শান্তকে। গেল বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দল যাওয়ার আগেই সাকিব বলেছিলেন, বিশ্বকাপের পর আর অধিনায়কের দায়িত্বে থাকতে চান না তিনি। বিশ্বকাপের পর ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি সাকিব।

তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল শান্তকে। এবার সেই নাজমুল হোসেন শান্তকে তিন ফরম্যাটের জন্যই অধিনায়ক করা হলো। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফি বিন মর্তুজার সহ-অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। প্রথম টেস্টে মাশরাফি ইনজুরিতে পড়ায় সাকিবকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়। সেটাই ছিল নেতা সাকিবের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। সেখানে নিজেকে প্রমাণ করায় পরের সিরিজেই তাকে ভারমুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে নেতৃত্ব দেয় বিসিবি। প্রথম দফায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রায় দুই বছর। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের পর অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এই অলরাউন্ডারকে। এর ৬ বছর পর ২০১৭ সালে মাশরাফি বিন মর্তুজা টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে গেলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়ে আবারও নেতৃত্বে ফেরেন সাকিব। একই বছরে মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সাদা পোশাকের অধিনায়কের দায়িত্বও পান তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে আইসিসি কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়ে দ্বিতীয় দফায় নেতৃত্ব হারান। এরপর ২০২২ সালের জুনে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে আবারও দলের নেতৃত্বে ফেরেন সাকিব। মাস কয়কে পরেই টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বও পান তিনি। আর গত বছরের ১১ আগস্ট তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক করা হয় সাকিবকে। ৭ মাস পর এবার অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের ইতি টানলেন সাকিব। সাকিবের রেখে যাওয়া চেয়ারটা এখন শান্তর জন্য বরাদ্দ। এবারই প্রথমবারের মতো স্থায়ীভাবে অধিনায়কত্ব পেলেন শান্ত। তবে এর আগেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে এই টপ অর্ডার ব্যাটারের। নিয়মিত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে একাধিক সময়ে লাল-সবুজের হয়ে টস করেছেন শান্ত। সেই সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়! এখন পর্যন্ত সব সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশকে ১১ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত। সাদা পোশাকে তার অধিনায়কত্বে মোট দুটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে এক টেস্টে হারের বিপরীতে একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে শান্তর নেতৃত্বে ৬ ম্যাচ খেলে ৫ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে একটি ম্যাচে জয় পেয়েছে টাইগাররা। আর টি-টোয়েন্টিতে ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ১ হার অধিনায়ক শান্তর। অপর একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। পরিবর্তন এসেছে নির্বাচক প্যানেলেও। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে প্রধান নির্বাচক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া যুব দলে লম্বা সময় ধরে কাজ করা হান্নান সরকার প্রমোশন পেয়েছেন। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর সঙ্গে হান্নান সরকারও এসেছেন নির্বাচক প্যানেলে। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। গাজী আশরাফ হোসেন লিপু এর আগে বিসিবির সাবেক পরিচালক, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিপিএল গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাদ পড়েছেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এবং হাবিবুল বাশার। ২০১৬ সালের জুনের পর জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল পরিবর্তন করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এবং হাবিবুল বাশারের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলে ছিলেন দুজন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত