স্বাধীনতার আশ্বাসে আস্থা প্রধান নির্বাচক লিপুর

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রিকেটের আঙিনাটা ভালোই চেনা গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর। একসময় ছিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক, বড় ক্রিকেট তারকা। পরে বোর্ডেও কাজ করেছেন লম্বা সময়, ছিলেন বোর্ড পরিচালক। ২০০৭-৮ সালে অ্যাডহক কমিটির প্রধান হিসেবে আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ে পাঁচবার বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্বও করেছেন। বিসিবির পরিচালক, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের পরিচালক, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন লিপু। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে হেরে বিসিবির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল সাবেক এই অধিনায়কের। ফলে দীর্ঘ দিন আর ক্রিকেট পাড়ায় দেখা যায়নি তাকে। অবশেষে লম্বা সময় পর তাকে বোর্ডে ফেরানো হয়েছে জাতীয় নির্বাচক কমিটির প্রধান করে। গত সোমবার মিরপুরে বিসিবির বোর্ড সভা শেষে সবাইকে চমকে প্রধান নির্বাচক হিসেবে লিপুর নাম ঘোষণা করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। নতুন করে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যুক্ত হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি আঙিনায় পা রাখলেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। এ সময় তিনি বলে উঠলেন, ‘অনেকদিন পর’। সেই অনেকদিন আসলে এক দশকেরও বেশি সময়। এরপর কার্যালয়ে ঢুকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। গণমাধ্যমের কৌতূহল মিটিয়ে গাজী আশরাফ হোসেন জবাব দিলেন প্রাসঙ্গিক আরও অনেক প্রশ্নের। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গটিও এগিয়ে গেলেন। স্পষ্ট কণ্ঠেই তিনি বললেন, মুক্তভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পেয়েই তিনি এসেছেন এই দায়িত্বে। সেই স্বাধীনতা খর্ব হলে বেরিয়ে যাওয়ার দুয়ারও নিজের জন্য খোলা রেখেছেন তিনি। তবে আলাপের শুরুতেই তাই ব্যাখ্যা করে জানান তার প্রোফাইলের ভারের সঙ্গে নির্বাচকের পদ না মিললেও যে কারণে দায়িত্বটা নিয়েছেন, ‘আপনারা জানেন ২০১৩ সালের পর থেকে আমি বোর্ডের সঙ্গে নেই। করোনাকালীন সময়ের আগেও একাধিকবার বোর্ড থেকে আমার কাছে বিভিন্ন ভূমিকায় কাজের প্রস্তাব এসেছে। আমার মা অসুস্থ ছিলেন তখন চিন্তা করারই সুযোগ হয়নি। নির্বাচনের আগেও প্রস্তাব এসেছে। এবার যখন আসল (প্রস্তাব)। কথা বললাম। আমার দিক থেকে যেটা ছিলো, আমি বোর্ড পরিচালক ছিলাম। হয়তো অনেকে জানেন না, ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমি পাঁচণ্ডছয়টা আইসিসি সভায় প্রতিনিধিত্ব করেছি। এতগুলো ভূমিকা পালন করার পর আমাকে এখন এই পদে আসা, যেখানে একটা নিয়মের মধ্যে একটা বেতন কাঠামোর মধ্যে কাজ করতে হবে। সেটার জন্য ওপেনিং স্পেস চেয়েছিলাম। গঠনতন্ত্রের বাইরে একটা সমমানের সম্মান যাতে এই পদকে দেয়া হয়। সেই জায়গায় তারা আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।’ স্রেফ চাকরির বদলে বাড়তি সম্মান যে তিনি পাচ্ছেন তা পরিষ্কার। তবে যেটা নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন আগের কমিটিতেও, নির্বাচকরা কি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন? লিপু জানান, তার স্বাধীনতা থাকবে তা নিশ্চিত হয়েই এসেছেন তিনি, ‘স্বাধীনতা থাকবে। এই ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে আগের প্রক্রিয়া নিয়ে আমি আর কথা বাড়াতে চাই না। এই নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। যেহেতু দল নির্বাচনের বিষয় সেখানে অধিনায়ক, কোচ অবশ্যই সম্পৃক্ত থাকবেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের সিষ্টেমের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করব।’ জাতীয় দলের বর্তমান কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে দল নির্বাচনে বড় প্রভাব রাখেন। তার সঙ্গে মতে মিল না হওয়ায় ফারুক আহমেদ প্রধান নির্বাচক থেকে সরে গিয়েছিলেন। হাথুরুসিংহেকে কীভাবে সামলাবেন। কোচণ্ডঅধিনায়কের মতামতকে সমন্বয় করে নির্বাচন প্রক্রিয়া কতটা সহজে চালাতে পারবেন, এরকম অনেক প্রশ্ন ছিলো তার কাছে। উত্তরে সবাইকে অপেক্ষা করতে বলেন লিপু, ‘বল ইজ নট ইয়েট ডেলিভার্ড। লেট দ্য বল কাম, লেট মি প্লে দ্য বল।’ ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ক’দিন পর দায়িত্ব নেব (১ মার্চ থেকে)। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে আরও কিছু বিষয় পরিষ্কার হবো। তার আগেই গণমাধ্যমে কিছু বলতে চাই না। একটা কথা বলে নিতে চাই আমাদের খেলোয়াড় সীমাবদ্ধতা আছে। অপশনগুলো আমরা সবাই জানি। সেখানে আমরা প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা চিন্তা করেই আমরা দলটা করব।’

ক্রিকেটারদের ফিটনেস, খেলার সংখ্যা, বয়স ইত্যাদি সব কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করে এগুতে চান নতুন প্রধান নির্বাচক। নজর দিতে চান ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে। বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে জাতীয় দলের নির্বাচক হওয়া হান্নান সরকারও কথা বলেন গণমাধ্যমে। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর কথা জানান তিনি।