ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ড্রেসিংরুমে ফিরেই শান্ত পেলেন ‘মেরুন জ্যাকেট’

ড্রেসিংরুমে ফিরেই শান্ত পেলেন ‘মেরুন জ্যাকেট’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের কাছে নাজমুল হোসেন শান্ত দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের ‘ব্র্যাডম্যান’-‘লারা’। তারই বদৌলতে তিন সংস্করণে টিম টাইগার্সের অধিনায়ক তরুণ এই ব্যাটার। সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি শান্ত। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হাসেনি তার ব্যাট। অবশেষে জ্বলে উঠলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়নডে ম্যাচে অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন শান্ত। তাতে টাইগারাও জয় পেয়েছে অনায়াসে। ম্যাচ জিতে ড্রেসিংরুমে ফিরতেই অধিনায়ককে মেরুন জ্যাকেট পড়িয়ে দেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অনেকেই ভাবছেন বাংলাদেশের জার্সির রং তো লাল সবুজ, তাহলে মেরুন জ্যাকেট কেন? মেরুন শব্দটা শুনলেই অনেকের মাথায় আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি। এই রংয়ের পোশাক জড়িয়ে খেলতে নামতেন ব্রায়ান লারা-ক্রিস গেইল-ড্যারেন স্যামিরা। সেই রংয়ের একটি জ্যাকেট এবার দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমেও। বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে বিশেষ এই পোশাকের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে গত বিশ্বকাপ থেকে। বাংলাদেশ দলের এটা নতুন সংস্কৃতি। ম্যাচ জিতলে একজন প্রভাব বিস্তারকারী পারফর্মারকে নির্বাচন করা হয় ড্রেসিংরুমে। তাকে পরিয়ে দেয়া হয় বিশেষ মেরুন জ্যাকেট। গত বুধবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয়ে সেঞ্চুরি করে সেই জ্যাকেট পেয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে এই জ্যাকেট পাওয়ার দাবিদার আরও তিনজনের কথা উল্লেখ করে তাদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। চট্টগ্রামে প্রথম ওয়ানডেতে লঙ্কানদের লড়াই জমাতে দেয়নি বাংলাদেশ। ২৫৫ রানে আটকে ম্যাচ জিতেছে ৬ উইকেটে। দলের জয়ে বোলিংয়ে ৩ উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। শ্রীলঙ্কার ভালো শুরু নাড়িয়ে দলকে খেলায় ফেরান তিনি। ব্যাটিংয়ে ১২৯ বলে ১২২ করে ম্যাচ সেরা শান্ত। তবে ভূমিকা আছে আরও দুই অভিজ্ঞের। ২৩ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর শান্তর সঙ্গে ৬৯ রানের জুটিতে ৩৭ বলে ৩৭ করেন মাহমুদউল্লাহ। মুশফিক ১৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৮৪ বলে করেন ৭৩ রান। ড্রেসিংরুমে দলের সভায় সবার কথাই বিশদভাবে বলেন কোচ। শেষে দিকে মেরুন জ্যাকেট পরিয়ে দেন শান্তকে, ‘আমরা অনেক সাহসিকতা দেখলাম ব্যাটিং ও বোলিংয়ে। আমরা পিছিয়ে ছিলাম। ব্যাটিংয়ে তারা ভালো শুরু পায়। আমাদের ব্যাটিংয়েও তারা আর্লি ৩ উইকেট নিয়ে নেয়। কিন্তু যে ক্যারেক্টার আমরা দেখিয়েছি ফিরে আসার। শরীরী ভাষা ছিলো দুর্দান্ত।’ ‘আমি জানি কিছু দুর্দান্ত ব্যক্তিগত পারপরম্যান্স আছে। আমি (তানজিম) সাকিবকে নিয়ে শুরু করি। ওরা বিনা উইকেটে ৭০ রান ছিলো। তুমি বল করতে এসে যেটা করা দরকার সেটাই করেছ মেরুন জ্যাকেট পাওয়ার মতন।’ ‘ব্যাটিংয়ে ২৩ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিলো। আমার মনে হয় রিয়াদের ইন্টেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে শান্তর সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়েছে, রানে বলে করেছেন (৩৭ বলে ৩৭)। এই ইন্টেন্ট আমাদের খেলায় ফিরিয়েছে। ওয়েলডান রিয়াদ।’ ‘আমি মুশফিকের স্থিরতা হাইলাইট করতে চাই। তার ইনিংসে শান্তর থেকে চাপ কমে যায়। যেভাবে তুমি স্পিনারদের খেলেছ ওটা দুর্দান্ত ছিলো।’ ‘আমি একটা জিনিস বলতে ভুলে গিয়েছি। তুমি (রিয়াদ) যেভাবে হাসারাঙ্গাকে সামলেছ, ওদের সেরা বোলার। ওর দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মেরেছ। এই ছক্কা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছ যে আমাদের ইন্টেন্ট পরিষ্কার। ওয়েলডান। তাকে খেলায় প্রভাব ফেলতে দাওনি।’ ‘শেষে বলব অধিনায়কের কথা। তুমি যে যে নিবেদন, দৃঢ়তা দেখিয়েছে চাপের সময়ে। একদম ৪৮তম ওভার পর্যন্ত খেলে জিতিয়ে এসেছ। শুরু করে সেঞ্চুরি করেছ। কোন আতঙ্কে না ভুগে। তোমার ফিল্ড প্লেসিংও স্পট অন ছিল। এখানে অনেক কিছুই ছিলো স্থিরতা, ক্ষুধা, অভিপ্রায়। তুমি সব নিয়ন্ত্রণ করেছ। এমন করলে আউটকাম আসবে। আমি মেরুন জ্যাকেট দুজনকে দিতে চাইতাম কিন্তু শান্ত তুমি এটা ডিজার্ভ কর।’ পরে কোচের কাছ থেকে হাসিমুখে মেরুন জ্যাকেট গায়ে চাপান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত