ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শ্রীলঙ্কাকে ২৮০ রানে গুটিয়েও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কাকে ২৮০ রানে গুটিয়েও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

সিলেট টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে উচ্ছ্বাস নিয়ে দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ শেষ বিকালে সেটি হতাশায় পরিণত হলো। ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট ম্যাচের আনন্দ এখানে। প্রতিদিন নায়ক হওয়ার সুযোগ থাকে। প্রতি সেশনে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সুযোগ থাকে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্টের প্রথম দিন কত রং যে পাল্টাল সিলেট আন্তজার্তিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। রং বদলের দিনে শ্রীলঙ্কাকে তিনশ’র নিচে আটকে দারুণ স্বস্তির দিন পার করার কৌশল এঁটেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশন খারাপ গেলেও পেসারদের নিয়ে উদযাপনে উপকরণ ছিলো বিস্তর। তবে নিজেরা ব্যাট করতে নেমে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে তৈরি হয়েছে চাপ। ঝলমলে শুরুর পর এখন লঙ্কানদের দাপটই বেশি। প্রথম টেস্টে প্রথম দিন শেষে ২৪৮ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার ২৮০ রানের জবাবে ১০ ওভার ব্যাট করে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩২ রান তুলেছে স্বাগতিক দল। তৃতীয় ওভারেই প্রথম ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। বিশ্ব ফার্নেন্দোর ভেতরে ঢোকা বল পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন জাকির হাসান। এলবিডব্লিউর আউটে রিভিউ নিয়েও লভ হয়নি। পঞ্চম ওভারে একইভাবে বিদায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। বিশ্বকে পেছনের পায়ে খেলতে যান তিনিও। রিভিউও নষ্ট করে বিদায় নেন ৫ রান করে। চারে নামা মুমিনুল হক কাসুন রাজিতার বলে ব্যাটের ফেইস ওপেন করে থার্ডম্যান দিয়ে এক বাউন্ডারি পেয়েছিলেন। আরেকটু উপরে উঠা আরেক বল তার ব্যাটে ছোবল হেনে জমা পড়ে স্লিপ ফিল্ডারের হাতে। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বাকিটা সময় টিকে থাকার জন্য নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ। এক প্রান্তে উইকেট পতনের মাঝে ৩০ বলে ৯ রান করে অপরাজিত আছেন মাহমুদুল হাসান জয়। অথচ সৈয়দ খালেদ আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশের দিনের শুরুটা ছিলো স্বপ্নের মতন। বৃষ্টিভেজা সকালে টস জিতে নাজমুল হোসেন শান্ত এগিয়ে যান। ঘাসের উইকেটে বোলিং বেছে নিতে শান্ত দ্বিতীয়বার চিন্তা করেননি। নয় বছর পর দেশের মাটিতে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ পরিকল্পনা স্পষ্ট হয়ে যায়। সঙ্গে তিন পেসারের সঙ্গে দুই স্পিনার নিয়ে দল বুঝিয়ে দিয়েছে ম্যাচটার নাটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে চায়। শুরুটা ওভাবেই হয়েছিল। লঙ্কানদের শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানের দুজন বিশের ঘর পেরোতে পারেননি, তিনজন সিঙ্গেল ডিজেটেই আউট। শুরুতেই লঙ্কান টপ অর্ডারে হানা দেন খালেদ। ৮ ওভারের স্পেলে তিনি ফিরিয়ে দেন নিশান মাধুশকা, দিমুথ করুনারত্নে আর কুশল মেন্ডিসের উইকেট। আয়েশি ঢঙে রান নিতে গিয়ে রান আউটে ফেরেন অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। শরিফুল ইসলামের বলে আলগা শটে থামেন আরেক অভিজ্ঞ দীনেশ চান্দিমাল। ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কেঁপে উঠে শ্রীলঙ্কা। ছয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটার নিয়ে খেলতে নামা সফরকারীদের লেজ ছিলো অনেক লম্বা। আর একটি উইকেট তখন ফেললে তিন অঙ্ক স্পর্শ করাই মুশকিল হতো তাদের। সেই সুযোগও এসেছিলেন। শরিফুলের বলে স্কিলে শূন্য রানে কামিন্দুর ক্যাচ ফেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। সেই ব্যাটারই পরে করেন ১০২ রান। অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ২০২ রানের জুটি, দ্বিতীয় সেশনে আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে ১২৫ রান যোগ করেন দুজন। দুজনেই করেন সেঞ্চুরি। শেষ সেশনে গিয়ে নিজের ঝলক দেখান অভিষিক্ত নাহিদ রানা। দুই সেঞ্চুরিয়ানই ফেয়ান তিনি। খরুচে বল করলেও গতির ঝাঁজে নেন ৩ উইকেট। ৫ উইকেটে ২৫৯ থেকে ২৮০ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। তাদের ইনিংসে কেবল চারজন পেরুনো দুই অঙ্ক। এরমধ্যে দুই সেঞ্চুরিয়ান ছাড়া কেউ ২০ রানও করেননি। দিনটাতে স্পষ্ট দাপট রাখতে পারত বাংলাদেশ। তবে শেষ বিকালের আলোয় টপ অর্ডার কেঁপে ওঠায় এখন স্বাগতিকদের সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত