ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সিলেট টেস্ট

হ-য-ব-র-ল ব্যাটিংয়ে হার ডাকছে টাইগারদের

হ-য-ব-র-ল ব্যাটিংয়ে হার ডাকছে টাইগারদের

সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে হ-য-ব-র-ল চেহারা বেরিয়ে এসেছে। প্রথম ইনিংসের মতই দ্বিতীয় ইনিংসেও সেটি অব্যাহত রয়েছে। শান্ত, লিটন থেকে শুরু করে জয়, জাকির কেউ দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কান বোলারদের সামনে। ফলে টাইগারদের সামনে ৫১১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য। যা তাড়া করে জয়ের ইতিহাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেই। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের বিশ্বরেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বাংলাদেশের সামনে সে রেকর্ড ভাঙার সুযোগ ছিল। সেই রেকর্ডটা গড়ার কথাই হয়তো ভেবেছিলেন শান্ত-লিটন-জাকিররা। তাই তো উইকেটে নেমেই চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। তার খেসারৎ দিয়ে শেষ বিকেলেই অর্ধেক ব্যাটার সাজঘরে। গতকাল রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে ৪৬৪ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। ৫১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে স্রেফ ১৩ ওভার ব্যাট করে ৪৭ রান তুলে আউট হয়েছেন পাঁচ টাইগার ব্যাটার। এর আগে ৪১৮ রানে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৯২ রানের লিড পেয়েছিল তারা। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরে যান জয়। বিশ্ব ফার্নান্ডোর মিডল স্টাম্পে রাখা বলে ফ্লিক করতে গেলে লাইন মিস করে ফেলেন এই তরুণ ওপেনার। লঙ্কানদের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়েছিলেন জয়। লাভ হয়নি। খালি হাতেই বিদায় নেন তিনি। ১২ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটা তার ষষ্ঠ শূন্য। জয়ের বিদায়ের পর উইকেটে নামেন অধিনায়ক শান্ত। আগের ওভারেই জয়কে হারানো দলের হাল ধরা তো দূরের কথা, খেলেন কাণ্ডজ্ঞানহীন এক শট। কাসুন রাজিথার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গেলে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো দিমুথ করুনারত্নের হাতে। ৫ বলে ৬ রান করেন শান্ত। দলীয় ৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর অভিজ্ঞ ব্যাটার মুমিনুল হকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জাকির। দ্রুতই গড়েন ২৭ রানের জুটি। তবে অতিরিক্ত শট খেলার মাসুল দিতে খুব বেশি দেরি হয়নি জাকিরের। লাহিরু কুমারার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে খেলতে যান এই বাঁহাতি ওপেনার। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে। ২২ বলে ১৯ রান করেন তিনি। জাকিরের বিদায়ের পর উইকেটে নামেন আরেক তরুণ শাহাদাত হোসেন দিপু। তবে টিকতে পেরেছেন কেবল তিন বল। ফার্নান্ডোর ব্যাক অব দ্য লেন্থ বলে রক্ষণ করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন কুশল। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনিও। এরপর উইকেটে নেমে লিটন দাস যা করেছেন তার ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যা দেওয়া বেশ কঠিন। দলের পরিস্থিতির কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন। এমনকি ভুলে গিয়েছিলেন লাল বল ও সাদা বলের পার্থক্যটাই। প্রথম বলেই উইকেট ছেড়ে বেড়িয়ে ছক্কা হাঁকাতে যান। আকাশে তুলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের তালুবন্দি হয়েছেন খালি হাতে। তাতে বড় হারই দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। এরপর মুমিনুলের সঙ্গে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে উইকেটে নামেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে বলতে গেলে তিনি একাই প্রতিরোধ গড়েছিলেন। এদিনও তার দিকেই তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ। দিনের বাকি সময় কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৪ বলে ৬ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গে ৭ রানে অপরাজিত আছেন মুমিনুল। এর আগে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের জোড়া সেঞ্চুরিতে বড় লিড নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২০২ রানের জুটি গড়ে এ দুই ব্যাটারই করেছিলেন ১০২ রান করে। এদিন অবশ্য ১৭৩ রানের জুটি গড়েন। তবে দুই ব্যাটারই ছাপিয়ে যান প্রথম ইনিংসের স্কোরকে। ধনাঞ্জয়া ১০৮ রানে থামলেও কামিন্দু শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে খেলেন ১৬৪ রানের ইনিংস। ধনাঞ্জয়াকে ফেরানোর সুযোগ অবশ্য একাধিকবারই ছিল। ব্যক্তিগত ৯৪ ও ১০১ রানে জীবন পেয়েছেন। তবে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দেন লঙ্কান অধিনায়ক। ১৭৯ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় খেলেন ১০৮ রানের ইনিংস। এরপর প্রভাত জয়াসুরিয়ার সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়ে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন কামিন্দু। খেলেন ১৬৪ রানের দারুণ এক ইনিংস। ২৩৭ বলের ইনিংসটি সাজাতে ১৬টি চার ও ৬টি ছক্কা মেরেছেন এই ব্যাটার। এছাড়া জয়াসুরিয়ার ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। বাংলাদেশের পক্ষে ৭৪ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন মিরাজ। এছাড়া ২টি করে উইকেট পান নাহিদ ও তাইজুল।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত