ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তামিম-মিরাজ নিয়ম ভাঙলে ব্যবস্থা

সিলেট টেস্টে শান্ত-লিটনদের হারকে ‘জঘন্য’ বললেন পাপন

সিলেট টেস্টে শান্ত-লিটনদের হারকে ‘জঘন্য’ বললেন পাপন

পৃথক সংস্করণে খেলতে নিয়মিতই এসেছে শ্রীলঙ্কা। তবে প্রায় ১০ বছর পর পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে এসেছে দ্বীপ দেশটি। ঘরের মাঠে অতিথিদের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও ওয়ানডে সিরিজ জিতে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। কিন্তু সাদা পোশাকে ফিরতেই ফের বিবর্ণ লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে রীতিমত ভরাডুবি ঘটেছে স্বাগতিকদের। লঙ্কানদের বিপক্ষে কোনো লড়াইই করতে পারেনি বাংলাদেশ। শান্ত-লিটনদের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিকরা। অফস্টাম্পের অনেক বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। লিটন কুমার দাস নিজের প্রথম বলে তেড়েফুড়ে খেলতে আসেন ডাউন দ্য উইকেটে। ক্যাচ তুলে দেন আকাশে। সিলেটে শান্ত ও লিটন ব্যাখ্যাতীত শটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আউট হলেও বাকিদের আলাদা করা যাবে না একটুও। প্রায় প্রত্যেকেই উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হক বাদে নুন্যতম লড়াই করতে পারেননি কেউ। টেস্ট খেলার যে ধৈর্য, লড়াই করার যে মানসিকতা, টিকে থাকার যে মনোভাব তা ধরা পড়েনি একটুও। বরং আসা-যাওয়ার মিছিল দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, খেলাটাকে স্রেফ তামাশা বানিয়ে ফেলেছেন তারা। লাল সবুজ দলের ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেছেন, ‘সমস্যা হচ্ছে হারাটা গুরুত্বপূর্ণ না। সমস্যা হচ্ছে যেভাবে তারা হেরেছে। যেভাবে তারা খেলেছে। যে মানসিকতায়, যে মনোভাব, তাদের শট সিলেকশন জঘন্য, বিশ্রি ছিল দেখতে। মনে হয়েছে তারা হয়তো খেলতে চায় না টেস্ট ক্রিকেট অথবা অন্য কোনো সমস্যা। এটা নিয়ে আমরা কষ্ট পেয়েছি। হারা জিতা নিয়ে আমরা একদমই চিন্তিত না। এই ধরনের শট সিলেকশন, এই ধরনের মাইন্ডসেট; এটা টেস্টে যায় না। এরা কেউ বাচ্চা ছেলে না যে হঠাৎ করে ওদের মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা প্রত্যেকে জানে। ঠিক এই কারণেই আমাদের মনটা খারাপ হয়েছে।’ এই মাঠেই কয়েক মাস আগে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। অবশ্য বিসিবি সভাপতি নতুন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে সময় দিতে চান। পাপন বলেন, ‘সবার কাছে যেমন লেগেছে আমার কাছে তেমনই লেগেছে (দলের পরাজয়)। এখানে ভালো লাগার কোনো কারণ নেই নিশ্চিতভাবেই। আমার মতামত বলতে পারি, হারা জিতা নিয়ে অত উদ্বিগ্ন না। দেখবেন, অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা যখন চলে যান তখন নতুন একটা দল আসে তারা চার-বছর স্ট্রাগল করেই। সেই দিক থেকে বলবো আমাদের দলে ওইরকম খারাপ অবস্থা হয়নি এখনো। যতটা খারাপ অন্যান্য দেশের হয়েছে। নাম বলছি না। তবে আমাদেরটা এতো খারাপ না।’ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার কথা বললেন তিনি, ‘একটা হচ্ছে, তামিম-সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর মতো খেলোয়াড় নেই। ওরা এই প্রথম একটা খেলা খেলতে যাচ্ছে যেখানে কেউ নেই। দ্বিতীয়ত, উইকেট। আমরা সম্পূর্ণ অন্য ধরনের একটা উইকেটে খেলাচ্ছি। এতে করে আমরা যারা খেলছে তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আমাদের পরবর্তী স্টেজে যাওয়ার জন্য আমরা যেসব স্টেপ নিয়েছি তার মধ্যে এটা একটা। এদিক থেকে বলবো, হারা জিতা গুরুত্বপূর্ণ না। এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না। এটা যে একদমই প্রত্যাশিত ছিল না তা না। টি-টোয়েন্টিতে হারলাম কেন? সেটা হারায় মনে দুঃখ আছে। আপনারা যদি বলেন ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতলাম না কেন তাহলে সেটা নিয়ে আক্ষেপ আছে। সেটা কেন জিতবো না। টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতবোই ওই আত্মবিশ্বাস ছিল না।’ এদিকে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আচমকা ছড়িয়ে পড়ে তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের একটি ফোনালাপ। দেশের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের অংশ ছিল সেটি। তামিম-মিরাজের এমন বিজ্ঞাপনী প্রচারণা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। সেই ইস্যুতেও কথা বলেন নাজমুল হাসান পাপন। তিনি বলেন, ‘আমি বিজ্ঞাপনটা দেখিনি, তবে শুনেছি। একজন আমাকে বলেছে যে এরকম একটা বিজ্ঞাপন হয়েছে। ওরা যদি বিসিবির কোন নিয়ম ভেঙে থাকে তাহলে বোর্ড তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবে।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, ‘এমন কোনো বিজ্ঞাপন কিংবা নাটক করা উচিৎ না যেটা কোনো ক্রিকেটারকে হাস্যকরে (বিষয়ে) পরিণত করে। এরা কেউ বাচ্চা ছেলে না যে, হঠাৎ করে আজকে ওদেরকে মাঠে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এই জিনিসটা বলে দিতে হবে। তারা প্রত্যেকে জানে। এই কারণে আমাদের মনটা খারাপ হয়েছে এবং সেটা নিয়েই কথা বলব। সে বিষয়ে আজকে সবার সঙ্গে বসার জন্য এখানে আসছি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত