সাকিব আল হাসানের মন্তব্য

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের টেস্ট জেতা উচিত

* সবার সমর্থন পেলে শান্ত অসাধারণ নেতা হবে * টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে এসেছে প্রায় দশ বছর পর। টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় দিয়ে তারা সফর শুরু করে। তবে ওয়ানডে সিরিজ জিতে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। কিন্তু সাদা পোশাকে ফিরতেই ফের বিবর্ণ লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে রীতিমত ভরাডুবি ঘটেছে স্বাগতিকদের। তবে টাইগারদের টেস্ট স্কোয়াডে ছিলেন না অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও সাবেক সাকিব আল হাসান। ফলে তারন্যনির্ভর অনভিজ্ঞ দলটি পেরে উঠেনি লঙ্কানদের সঙ্গে। দলের নাজুক পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম টেস্টে দলে ফিরেছেন বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার সাকিব। দলে ফেরা এই তারকা বিশ্বাস করেন, লঙ্কানদের বিপক্ষে তাদের টেস্ট জেতা উচিত। সিলেটে ব্যাটিং ব্যর্থতায় সফরকারীদের বিপক্ষে ৩২৮ রানে হারে বাংলাদেশ। দুই ইনিংসেই দুইশোর নিচে গুটিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিং করেন নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসরা। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দিল্লিতে ম্যাচ শেষে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হয়নি সাকিবের। বিশ্বকাপের শেষ দুই ম্যাচে ছিলেন চোটে। বিশ্বকাপের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরে ও বাইরে দুই সিরিজে ছিলেন না। এই সময়ের আঙুলের চোট ও চোখের সমস্যা থেকে সেরে উঠার লড়াইয়ে ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ, ওয়ানডে সিরিজের পর প্রথম টেস্টেও ছিলেন না তিনি। পুরো সিরিজ থেকে ছুটি নেয়া সাকিব সিদ্ধান্ত বদলে ফেরেন দ্বিতীয় টেস্টে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে গিয়ে স্কোয়াডে যোগ দেয়ার আগে রাজধানীর উত্তরায় একটি আবাসন কোম্পানির দূত হতে যান সাকিব। সেখানে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে আশার কথা শোনান তিনি, ‘আশা তো সব সময় করি জিতব। টেস্ট ক্রিকেটে সব সময় আমরা সংগ্রাম করেছি। আমাদের জন্য কঠিন। তবে আমি বিশ্বাস করি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো করা উচিত এবং টেস্ট ম্যাচ জেতা উচিত।’ চট্টগ্রাম টেস্টের আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তিন ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। গত বুধবার বিকেএসপিতে দলের জয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। লঙ্কানদের বিপক্ষে বিশ্বকাপেও জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত লক্ষ্য নয়, দলের কথাই চিন্তা করছেন তিনি, ‘ব্যক্তিগত কোন লক্ষ্য নেই। আমার মনে হয় না ক্রিকেট যতদিন খেলেছি কখনো আমার ব্যক্তিগত কোন লক্ষ্য বা অর্জন নিয়ে চিন্তা ছিলো। সব সময় চিন্তা করেছি দলের হয়ে কীভাবে অবদান রাখা যায়। দেশের হয়ে পারফর্ম করতে পারা, প্রতিনিধিত্ব করা গর্বের বিষয়। স্বাভাবিকভাবে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত।’ গত বছর এপ্রিল মাসে সাকিব যখন টেস্ট খেলেন তখন তিনি ছিলেন দলের অধিনায়ক। বছর ঘুরতে সেই প্রেক্ষাপট বদলে গেছে অনেকটা। এখন শান্তর অধীনে খেলতে যাচ্ছেন তিনি। জুনিয়র সতীর্থকে নিয়ে অবশ্য আশাবাদী কথা বলেছেন সাকিব, ‘খুবই আর্লি স্টেজ (শান্তর নেতৃত্বের)। আমি নিশ্চিত বিসিবি ওকে দীর্ঘ সময়ের কথা চিন্তা করেই দিয়েছে। ওর শুরুটা খুব ভালো হয়েছে। কিছু ফল ওর পক্ষে এসেছে যেটা ওকে সাহায্য করবে বিকশিত হতে। আমার ধারণা, সবার সমর্থন পেলে শান্ত অসাধারণ একজন নেতা হবে।’ চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে প্রায় ৫ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন সাকিব। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি সবশেষ খেলেছেন গত বছরের এপ্রিলে। এই সিরিজের কোনো ম্যাচই অবশ্য খেলার কথা ছিল না তার। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বলেছিলেন, পুরো সিরিজেই তাকে পাবে না বাংলাদেশ। তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুই ম্যাচ খেলার পর দ্বিতীয় টেস্টের জন্য ঘোষিত দলে রাখা হয় সাকিবকে। শেখ জামালের হয়ে খেলা তৃতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে ৫৩ রানের পর আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২ উইকেট নেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। টেস্টে ফেরার প্রস্তুতিটা মূলত প্রিমিয়ার লিগের এই তিন ম্যাচ দিয়েই নিতে হয়েছে তাকে।