‘যতদিন ঊষা আছে ততদিন আমিও আছি’

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ম্যাচ চলাকালীন কখনো টেন্টে গলা ছেড়ে চিৎকার করে খেলোয়াড়দের পজিশন ঠিক করে দিচ্ছেন। ম্যাচের মধ্য-বিরতিতে কার কোথায় সমস্যা হচ্ছে- সেসব বুঝিয়ে দিচ্ছেন। ম্যাচ শুরুর আগে কার কী করণীয় সেসব বিষয়েও আলোকপাক করছেন। খেলোয়াড়দের কাঁধে আবার নিজের চওড়া হাতটি রেখে অভয় দিচ্ছেন, ‘তোমরা মাঠে খেলে যাও; আমি তোমাদের সঙ্গে আছি’- এভাবেই চলতি প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লিগে ম্যাচের পর ম্যাচ নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ওয়াজিদ হোসেন। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এবং সমর্থকপুষ্ট পুরোনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হকি ক্লাব ঊষা ক্রীড়া চক্রের নতুন ম্যানেজার তিনি। কোচ মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান এবং ঊষা ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক এক সময়কার মাঠ কাঁপানো হকি তারকা রফিকুল ইসলাম কামালের সঙ্গে জুটি বেঁধে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ওয়াজিদ। তার একটাই কথা, ‘যতদিন ঊষা ক্লাব আছে, ততদিন আমিও আছি।’ আমৃত্যু ঊষার সঙ্গে থাকতে চান ওয়াজিদ। অনেক পরিচয়ে পরিচিত একজন ওয়াজিদ। ফুটবলার থেকে হকির সংগঠক। ব্যবসায়ী হিসেবেও সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি ক্রীড়ানুরাগী, ক্রীড়া অন্তুঃপ্রাণ এক মানুষ।

বলতে গেলে ঊষা ক্রীড়া চক্রকে ঘিরেই তার যত স্বপ্ন, ভালোলাগা আর ভালোবাসা। দেখতে দেখতে ঊষাতে জীবনের তিন দশক কাটিয়ে দিয়েছেন। চলমান প্রিমিয়ার হকি লিগে ক্লাব থেকে পেয়েছেন ম্যানেজারের নতুন দায়িত্ব। ওয়াজিদ বলেন, ‘ঊষা ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় ৩০/৩২ বছর ধরে। ক্লাবের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। এবার আমাদের কমিটি আমাকে ম্যানেজার করার জন্য সুযোগ্য মনে করেছে বিধায় দলের সঙ্গে আমি সরাসরি সংযুক্ত হয়েছি। ঊষার সঙ্গে এমনিতেই আমি সংযুক্ত ছিলাম; আগামীতেও থাকব। ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সবাই আমাদের সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে কামাল (রফিকুল ইসলাম কামাল) আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। এখনো করছেন। হকি অনেকদিন ধরে দেখি। বুঝতাম কম। এবার সরাসরি কাজের সুবাদে অনেক কিছু আয়ত্তে নিতে পেরেছি। কামালের উছিলায়। কামাল আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন।’ ক্রীড়াঙ্গনে নতুন কেউ নন ওয়াজিদ। ফুটবলার পরিচয়ে এক সময় মাঠে ছিলেন। জাতীয় বয়সভিত্তিক দলেও খেলেছেন। জাতীয় দলের অংশ হিসেবে থাইল্যান্ড সফর করেছেন। সেই ১৯৮৭ সালের কথা। দেশের তারকা ফুটবলার আরমান, আলফাজ, নকীব, আরমানদের উঠতি বয়সের সঙ্গী ছিলেন আজকের ঊষা ক্লাবের হকি ম্যানেজার ওয়াজিদ। তিনি বলেন, ‘ঊষা আমার এলাকার টিম। জন্মের পর থেকেই ক্লাবটিকে দেখে আসছি। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মো. আনোয়ার হোসেন ভাই। ক্লাবকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন তিনি। ঊষা ক্লাব আরমানিটোলা স্কুল বেইজড। আরমানিটোলা স্কুলের বলতে গেলে সবাইকে আনোয়ার ভাই ঊষা ক্লাবে সম্পৃক্ত করেছিলেন। জামাল ভাই, কিসমত ভাই থেকে শুরু করে ফজলু ওস্তাদ, সাজেদ আদেল, শোয়েব আদেল, ওয়াকার আদেল, মুসা কাদরি ভাইদের মতো খেলোয়াড়রাও ঊষা ক্লাবে সম্পক্ত ছিল।’

প্রিমিয়ার লিগে এই মূহূর্তে পয়েন্ট টেবিলে দুই নম্বরে অবস্থান করছে ঊষা ক্রীড়া চক্র। দল নিয়ে আর কী ভাবছেন ওয়াজিদ। এমন প্রশ্নে ঊষার ম্যানেজার বলেন, ‘অনেক টিমের চেয়ে আমার দল ভালো খেলছে এবার। পয়েন্ট টেবিলে এই মুহূর্তে আমরা দুই নম্বরে রয়েছি। আমার লক্ষ্য এখন চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এ জন্য যা যা করণীয় আমরা সেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি। দেশের বাইরে থেকে যদি আরো খেলোয়াড় আনতে হয় সেটারও চেষ্টা চলছে। ভালোমানের দুয়েকজন অবশ্যই প্লেয়ার আনব। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে। চ্যাম্পিয়নের জন্য টিম গড়েছি। চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’