ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিসিবির এজিএমে গঠনতন্ত্র সংশোধন

আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত

* ঝুঁকিমুক্ত ও লাভজনক বিনিয়োগের পথ সুগম * চালু করতে পারবে কোম্পানি কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান * আসছে বিসিবির নিজস্ব টিভি চ্যানেল
আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত

দুই বছর পর অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এ সভা ঘিরে রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল পরিণত হলো বোর্ড পরিচালক ও কাউন্সিলরদের মিলনমেলায়। এজিএম মানেই বিগত দিনের আয়-ব্যয়ের অনুমোদন, চলমান অর্থ বছরের বাজেট পাস। তবে এবারের বার্ষিক সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্রে সংশাধন এনে ঝুঁকিমুক্ত ও লাভজনক বিনিয়োগের পথ সুগম করেছে বোর্ড। খুলতে পারবে ব্যাংক এলসি, চালু করতে পারবে কোম্পানি কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। যদিও বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের দাবি, ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নেই বোর্ডের। বিসিবি টিভি চালু করতেই প্রয়োজন ছিল গঠনতন্ত্র সংশোধনের। তবে ক্রিকেটে বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা তৈরি করা হলেও তাদের স্বাধীনতা দেয়ার পথে হাঁটছে না বিসিবি। গত রোববার হওয়া বার্ষিক সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্রে আর্থিক কাঠামোগত একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার ব্যাপারে নেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। বরিশাল ছাড়া দেশের বাকি ছয়টি বিভাগে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি নির্বাচনের ভিত্তিতে স্থায়ী কমিটি নিয়ে আসবে। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘বড় আলোচনা যেটা হয়েছে, সেটা আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নিয়ে। আমরা কিন্তু বরিশাল ছাড়া সব বিভাগে করে ফেলেছি। বরিশাল করতে পারছি না আমাদের পরিচালক (আলমগীর হোসেন) আলো ভাই অসুস্থ দেখে। এটা নিয়ে একটা কিছু করব।’ বোর্ডপ্রধান বলেন, ‘বাকিগুলো যেহেতু হয়ে গেছে, আমরা কমিটি করে দিয়েছি। অ্যাডহক কমিটি এখন সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করবে। নির্বাচনের মাধ্যমে একটা নির্বাচিত কমিটি লাগবে। সেই কমিটি হবে আমাদের প্রকৃত আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা।’ প্রতিটি অ্যাডহক কমিটিকে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট পরিচালনার জন্য ২০ লাখ টাকা করে দেবে বিসিবি। তারা সেটা সফলভাবে আয়োজন করতে পারে কি না তা যাচাই করে দেখা হবে। পাপন বলেন, ‘প্রথম কাজ ওদের দিয়েছি একটা টুর্নামেন্ট চালু করতে। পরীক্ষামূলক ধাপ হিসেবে, দেখার জন্য। এই টুর্নামেন্ট চালাবে তারা, যে কয়টা কমিটি করা হয়েছে। ২০ লাখ টাকা তাদের দেয়া হবে।’ তবে এই সংস্থাগুলোকে আপাতত স্বাধীনতা দেওয়ার ইচ্ছা নেই বোর্ডের। তারা সক্ষম কি না সেটা আগে বুঝতে চায় তারা, ‘এটা কেন্দ্রের হস্তক্ষেপমুক্ত হবে না। আপনারা ভুল বুঝেছেন। একদম ঠিকভাবে আমি বলে দিচ্ছি। এটা হবে না, যতদিন পর্যন্ত আমরা সন্তুষ্ট না হবো যে তারা স্বাধীনভাবে চালাতে পারবে, ততদিন না। আমরা যে ২০ লাখ টাকা দিচ্ছি, সেটা পরীক্ষামূলক হিসেবে। সেটা দেখতে হবে কীভাবে খরচ হয়। সক্ষমতা আগে দেখতে হবে আমাদের। না দেখে দিচ্ছি না। অন্ধভাবে দিয়ে দেব না। আপনি যদি এখনি ঢালাওভাবে বলে দেন যে, তারা স্বাধীন, যা খুশি তা করতে পারবে, তা না। আমরা আগে বুঝে নেই, দেখে নেই। তারপর ঠিক করব।’

বছর দশেকেরও আগে বিসিবিপ্রধান হিসেবে পাপন দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম অগ্রাধিকার ছিল আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার বাস্তবায়ন। সেই পথে বড় একটি পদক্ষেপ নেয়া হয় ২০২২ সালের জুলাইতে। বিসিবির সেবারের বার্ষিক সাধারণ সভায় ক্রিকেটে বিকেন্দ্রীকরণের এই উদ্যোগের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল গঠনতন্ত্রে সংশোধন এনে। যদিও প্রকৃতপক্ষে সময় গড়ানোর সঙ্গে বেড়েছে শুধু অপেক্ষা। অবশেষে গত বছরের জুনে আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম শুরুর কথা জানিয়েছিলেন পাপন। এদিন এজিএম শুরু হয় দুপুর ২টায়। ইফতারের ঠিক পূর্বমুহূর্তে বিসিবি সভাপতি সংবাদ মাধ্যমে ব্রিফ করেন। গত দুই অর্থ-বছরের হিসাব-নিকাশ ও এবারের বাজেট অনুমোদিত হয় এজিএমে। সর্বোপরি অর্থনৈতিক মন্দার কারণে খরচ কমাতেও বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত