ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আরেকটি হোয়াইটওয়াশের লজ্জা

আরেকটি হোয়াইটওয়াশের লজ্জা

চতুর্থ দিনেই জয়ের মঞ্চটা তৈরি করে রেখেছিলেন কামিন্দু মেন্ডিসরা। পঞ্চম দিনে কেবল অপেক্ষা ছিল হারের ব্যবধান কত কমাতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একপ্রান্তে লড়াই করে লঙ্কানদের জয়ের অপেক্ষা একটু দীর্ঘায়িত করেন এই অলরাউন্ডার। তবে প্রথম সেশনেই জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলে শ্রীলঙ্কা। চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে তাদের প্রয়োজন ছিল ৩ উইকেট। বাংলাদেশের জন্য বরাবরই লক্ষ্য ছিল আকাশ ছোঁয়া। অবশিষ্ট ৩ উইকেট হাতে রেখে ২৪৩ রান করতে চাওয়া আকাশ কুসুম কল্পনা। পারেও নি বাংলাদেশ। সোয়া এক ঘণ্টার ব্যাট-বলের লড়াইয়ে ফয়সালা হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। দিনের শুরুর চার ওভারে তেমন কিছু হয়নি। রক্ষণাত্মক ক্রিকেটে মিরাজ ও তাইজুল সময়টা কাটিয়ে দেন। পঞ্চম ওভারে মিশ্র পরিস্থিতি। কামিন্দুর করা দ্বিতীয় বল ড্রাইভ করে মিরাজ পাঠান বাউন্ডারিতে। ওই চারে মিরাজ পাঁচ ইনিংস পর ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। যা তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। তবে দুই বল পরই দিনের প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অফস্টাম্পের দূরের বলে তাইজুল ড্রাইভ করতে গেলে স্লিপে ক্যাচ দেন। ক্যাচ জমাতে কষ্ট হয়নি মাদুশঙ্কার। ওখানে থেমে যায় তার ২৮ বলে ১৪ রানের ইনিংস। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের অনেক ব্যাটসম্যানদের থেকেও বেশি বল খেলেছেন তাইজুল। রানও করেছেন বেশি। জাকির হাসান ১৭৩ বল খেলে রান করেছেন ১০১। লিটন ১১৯ বল খেলে রান করেছেন ৬৭। শাহাদাত দিপু ৯৯ বলে করেছেন ৪১ রান। অধিনায়ক শান্ত ৮১ বলে করেছেন ৩২ রান। জয় ১২৪ বলে ৫৭। সেখানে তাইজুল চরম ধৈর্য দেখিয়ে, উইকেট আগলে রেখে ১৮৪ বল খেলেছেন। রান করেছেন ৮৯। সঙ্গী হারানোর পর মিরাজের লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই শুরু হয়। ব্যাটসম্যানরা দলীয়ভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর অপেক্ষা ছিল কেবল ব্যক্তিগত কোনো মাইলফলক ছোঁয়ার। লাইমলাইটে ছিলেন কেবল মিরাজই। উইকেটের চারিপাশে শট খেলে তিন অঙ্কের পথে একটু একটু করে এগোতে থাকেন। দশে নামা হাসান মাহমুদ বেশিক্ষণ তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। প্রথম ঘণ্টার পানি পানের বিরতির ঠিক আগের ওভারে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন। পেসার লাহিরু কুমারার শর্ট বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ২৫ বলে ৬ রান করা এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটিও ঠুকে দেন লঙ্কান পেসার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফিরে দারুণ এক ইয়র্কারে খালেদকে বোল্ড করেন। ওখানে নিশ্চিত হয়ে যায় লঙ্কানদের বিশাল জয়। সেঞ্চুরি থেকে ১৯ রান দূরে থেকে মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৮১ রানে। সিলেটে ও চট্টগ্রামে দুই জায়গাতেই বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ৫১১। সিলেটে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ পরাজয়ের ব্যবধান ১৯২। লড়াইয়ের মানসিকতার প্রবল ঘাটতি ফুটে উঠল আরেকবার। টেস্টে আগের পাঁচ ইনিংসে দুইশও করতে পারেনি বাংলাদেশ। এর ২০ বছর আগে ঘরের মাঠে এমন করুণ দৃশ্য দেখেছিল টাইগাররা। তবে চট্টগ্রামে দুইশ তো বটেই, দ্বিতীয় ইনিংসে পুঁজি পার করল তিনশর কোটাও। হোয়াইটওয়াশ হওয়ার এই ম্যাচে কেবল এই একটা সান্ত¡নাই খুঁজে পেতে পারে বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের এমন দুরবস্থার পিছনে রয়েছে ক্যাচ মিসের গল্প। লঙ্কানদের প্রথম ইনিংসেই সাতটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন। কথায় বলে ক্যাচ মিস মানে ম্যাচ মিস। আর সেখানে যদি যোগ হয় ব্যাটিং ব্যর্থতা, তাহলে তো লড়াইটাও জমে ওঠার কথা নয়। চট্টগ্রাম টেস্টেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত