ভুল চিকিৎসায় হুমকির মুখে পাকিস্তানি তারকার ক্যারিয়ার

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চিকিৎসা বিভাগের ভুলেই হুমকির মুখে পড়ে ইহসানউল্লাহর ক্যারিয়ার। ভুল ধরা পড়ার পর এখন অবশ্য পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে, পুরোপুরি সেরে ওঠার জন্য লড়ছেন পাকিস্তানের ২১ বছর বয়সি এই পেসার। গত বছরের এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ওই চোট পান ইহসানউল্লাহ। এরপর থেকে মাঠের বাইরে আছেন তিনি। ইহসানউল্লাহর পিএসএল দল মুলতান সুলতান্সের মালিক আলি তারিনের অভিযোগ, কনুইয়ে যে চিড় ছিল তার, পিসিবির করানো প্রথম স্ক্যানে সেটা ধরাই পড়েনি। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোকে তিনি আরো বলেন, ওই সমস্যা নিয়েই জিম করেন ইহসানউল্লাহ, এমনকি বোলিংও করেন। যা তার চোটকে আরো গুরুতর করে দিয়েছে। কনুইয়ের ব্যথা বাড়তে থাকায় ফের স্ক্যান করানো হয় ইহসানউল্লাহর। তখন চিড় ধরা পড়ে। যা উল্লেখযোগ্যভাবে আরো বেড়ে গিয়েছিল। মূলধারার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত, এই অবহেলা হতে পারত ইহসানউল্লাহর ক্যারিয়ারের জন্য হুমকি। এমনকি এর প্রভাবে তার বোলিংয়ের গতিও কমে যেতে পারত। ইহসানউল্লাহর চোট নিয়ে অবহেলার কথা অবশ্য অস্বীকার করেছেন পিসিবির প্রধান চিকিৎসক সোহেল সেলিম। ইএসপিএনক্রিকইনফোকে তিনি বলেছেন, ‘এক্ষেত্রে কোনো অব্যবস্থাপনা হয়নি। দেরি হয়েছে (স্ক্যানে চিড় ধরতে) সেটি স্বীকার করব, তবে অব্যবস্থাপনা হয়নি।’ ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের সময় পিএসএল আয়োজনে ব্যর্থ হয়ে পিসিবি ছেড়েছিলেন সেলিম। এরপর ২০২৩ সালে নাজাম শেঠি চেয়ারম্যান থাকার সময় আবার পিসিবিতে ফেরেন তিনি। তার দাবি, ইহসানউল্লাহর প্রথম স্ক্যান তার সময়ে করানো হয়নি। এই পেসারের চোট নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তিনিই পুনরায় স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেন। ‘আমি চেয়েছিলাম, নতুন করে পরীক্ষা করানো হোক। কারণ, সাধারণ ওয়ার্কলোডের লক্ষণের চেয়ে এটি আরও গুরুতর মনে হচ্ছিল। এটি (প্রথম স্ক্যান) তখনকার পিসিবির চিকিৎসকেরা করেছিলেন, আমার টিম নয়। একটি ল্যাব আমাদের যে এমআরআই স্ক্যান রিপোর্ট দিয়েছিল, তাতে ভুল ছিল। একই স্ক্যান আবার করানোর নির্দেশ দিই আমি, এরপর স্ক্যানে চিড় ধরা পড়ে।’ এরপর সেলিম পাল্টা অভিযোগ তোলেন ইহসানউল্লাহর বিরুদ্ধে। তার দাবি, লাহোরে পিসিবির ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে থাকেননি ইহসানউল্লাহ। এমনকি মাঝে মধ্যে এমন কাউকে দিয়ে ফিজিওথেরাপি নিয়েছেন তিনি, যা পিসিবির অনুমোদিত ছিল না। ‘আমরা ইহসানউল্লাহকে নিয়ে অনেক কাজ করেছি। তার জন্য অনেক অর্থ খরচ করেছি এবং এখন তার যুক্তরাজ্যে ভিসার ব্যবস্থা করেছি। তবে তিনি চেয়েছিলেন পূর্ণাঙ্গ ফিটনেসের জন্য সম্ভাব্য সবচেয়ে কম সময়। আমাদের পুনর্বাসন সেরে ওঠার মানদ-ের ওপর ভিত্তি করে, সময়ের ওপর নয়।’ ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেলিমের পরামর্শে পরে বাইরে থেকে শল্যবিদ এনে ইহসানউল্লাহর অস্ত্রোপচার করানো হয়। তবে এখনো কনুই পুরোপুরি সোজা করতে পারছেন না এই পেসার। পিসিবির প্রধান চিকিৎসকের মতে, অস্ত্রোপচারের পর সবার ক্ষেত্রেই এমন হয়। ‘এমন গুরুতর চোট থেকে তিন মাসে সেরে ওঠা যায় না, অনেক বেশি সময় লাগে।’ মুলতানের মালিক তারিনের দাবি, যুক্তরাজ্যের ফিজিওথেরাপিস্ট জাভেদ মুঘল, যিনি এখন পিসিবির পরামর্শকও, তার মতে, ইহসানউল্লাহর কাঁধেও চোট আছে। পিসিবি সেটিও খেয়াল করেনি, যেটিতে লাগতে পারে আরেকটি অস্ত্রোপচার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ সম্প্রতি তারিন দাবি করেন, সেরে ওঠার এই সময়ে ইহসানউল্লাহর খরচ বহন করেছে মুলতান। এ মাসে তাকে ইংল্যান্ড নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করবেন তারিন। এমন মন্তব্যের পর পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি কথা বলেছেন তারিনের সঙ্গে। ধারণা করা হচ্ছে, এখন ইহসানউল্লাহর ইংল্যান্ডের সব খরচ পিসিবিই বহন করবে। গত বছরের পিএসএলে মুলতানের জার্সি পরে আলো ছড়ান ইহসানউল্লাহ।