‘আমাদের তো ১০টা মোস্তাফিজ নেই’

প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৭তম আসরে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান। পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে দুর্দান্ত খেলছেন কাটার মাস্টার। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবে রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। তবুও এবার আইপিএল অধ্যায় বড় হচ্ছে না মোস্তাফিজের। জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিতে হবে তাকে। তবে চেন্নাই সুপার কিংস ও মোস্তাফিজের চাওয়ায় আইপিএলে তার অনাপত্তিপত্র একদিন বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

১ মে চেন্নাইয়ের জার্সিতে আরেকটি ম্যাচ বেশি খেলার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশের তারকা পেসার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনছে বোর্ড। তবে তাকে ফেরানো মানে যে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলানো হবে তা নয়। ওয়ার্কলোড কমানো, শতভাগ ফিট ও সতেজ রাখার পরিকল্পনায় মোস্তাফিজকে ফেরানো হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিযোগিতা থেকে। যদিও বিসিবি পরিচালক আকরাম খানের মতে, জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে মোস্তাফিজুর রহমানের আইপিএল খেলা ভালো। আরেক পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস এই বিষয়ে দেন পুরোপুরি ভিন্ন মত। আইপিএল থেকে মোস্তাফিজের আর কিছু শেখার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। এবার একই বিষয়ে কথা বললেন খালেদ মাহমুদ সুজনও। বিসিবির এই পরিচালক দুই দিকের যুক্তি তুলে ধরে বললেন, সব কিছুর পর দেশের খেলার কথাই আগে ভাবা উচিত। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় ১ মে পর্যন্ত মোস্তাফিজকে আইপিএল খেলার অনুমতি দিয়েছে বিসিবি। ২ মে দেশে ফিরে তাকে যোগ দিতে হবে জাতীয় দলে। ৩ মে থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরু হবে পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজ। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে এবার আইপিএলে ভালো খেলতে থাকা বাঁ-হাতি পেসার সেখানে থাকলেই ভালো হতো কিনা এই আলাপ ক’দিন ধরেই চলছে দেশের ক্রিকেটে। এ বিষয়ে জালাল ইউনুস বলেন, তারা মোস্তাফিজের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাছাড়া আইপিএলে খেলে তার শেখার কিছু নেই বলেও মনে করেন তিনি। গত বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচের পর গণমাধ্যমের সামনে আসেন সুজন। বিসিবির দুই পরিচালকের আগের দুই দিনের দুই রকম মন্তব্য বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় তার কাছে।

জবাবে তিনি বলেন, ‘কঠিন প্রশ্ন। উত্তর দেয়া কঠিন। দেশ তো সবার আগে। সবসময়ই বলি এটা। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। তবে পরিস্থিতি কী চায়, উনারা (জালাল ইউনুস, আকরাম খান) কীভাবে চিন্তা করেছেন... আমি এখন জাতীয় দলের সেট-আপে নেই বলতে গেলে। অপারেশন্সের ভাইস চেয়ারম্যান থাকলেও আমি সেভাবে মিটিংগুলোয় যাচ্ছি না আবাহনীর খেলার কারণে। আমি জানিই না আসলে। তো আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না। নিশ্চিতভাবেই জালাল ভাই একটা চিন্তা থেকেই মন্তব্যটা করেছেন। আমি মনে করি, চেয়ারম্যান হিসেবে উনি ক্রিকেট অপারেশন্সের অভিভাবক। উনি যেটা বলেছেন, আমাকে সেটাই মানতে হবে যে, উনার কথাই ঠিক। এটাই আমার ধরে নিয়ে যেতে হবে।’ তবে মোস্তাফিজের শেখার অধ্যায় শেষ এটা মনে করেন না সুজন। যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেট থেকে শেখার কিছু আছে বলে মনে করেন তিনি, ‘শেখার সবখানেই আছে। প্রিমিয়ার লিগেও শেখার আছে। আজকের একটা সিনারিও শেখার হতে পারে। সেটা নিয়ে সংশয় নেই। হয়তোবা উনি এটা সেভাবে বোঝাননি। উনি বলেছেন, মোস্তাফিজ এত বছর ধরে ওখানে খেলছে। আর সে তো এখন আর তানজিম সাকিবের মতো না। ও এখন মোস্তাফিজ।

মোস্তাফিজ এখন অনেক বড় নাম বিশ্ব ক্রিকেটে। হয়তোবা জালাল ভাই ওই এঙ্গেল থেকেই বলেছেন যে, মোস্তাফিজের অভিজ্ঞতা যেটা আছে, ভারতের তরুণ পেসাররা ওর থেকে কাটার বা এরকম জিনিস শিখতে পারে। উনি কথাটা এটাই বলেছেন। এটাকে অন্য কিছু মিন করা ঠিক হবে না।’ আইপিএলের সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততা থাকে কম। থাকলেও অনেক দল সেরা খেলোয়াড় খেলায় না সেসব সিরিজে। নিউজিল্যান্ড দল এই সময়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম একাদশের ৯ জনকে পাঠাচ্ছে না। কেইন উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্টরা এই সময়ে আইপিএল খেলবেন। সুজনের মতে বাকিদের বিকল্প অনেক বেশি যেটা বাংলাদেশের নেই, ‘দিন শেষে আমি মনে করি, দেশ সবার আগে। এটা মাথায় রাখতে হবে। মোস্তাফিজ যদি আইপিএল খেলতে পারত, আমিও খুশি হতাম। দেশের খেলা না থাকলে হয়তো সমস্যা হতো না। অনেকে হয়তো বলবে, নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা আইপিএল খেলছে। কিন্তু আমাদের তো দশটা মোস্তাফিজ নেই। এটাও চিন্তা করতে হবে।’