ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশ্বকাপ দলে কারা সুযোগ পাচ্ছেন?

বিশ্বকাপ দলে কারা সুযোগ পাচ্ছেন?

একেকটি ক্রিকেট বিশ্বকাপ এলেই স্বপ্ন দেখা শুরু করে লাল-সবুজের সমর্থকরা। কিন্তু টাইগারদের পারফরম্যান্সে প্রতিবারই হতাশ হতে হয় তাদের। দুয়ারে কড়া নাড়ছে আরো একটি বিশ্বকাপ। চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। এবার দলের কাছে সমর্থকদের বেশি প্রত্যাশা না করার জন্য আগেভাগেই অনুরোধ রেখেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আগামী ৮ জুন ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন।

কিছু দিন আগে এক অনুষ্ঠানে শান্ত বলেন, ‘প্রতি বছরই আমি দেখি, বিশ্বকাপের আগে এসব নিয়ে অনেক কথা হয়। প্রত্যাশা... এটা করব, সেটা করব। আমার একটা অনুরোধ থাকবে আপনাদের কাছে, প্রত্যাশাটা খুব একটা করার দরকার নেই। প্রত্যাশাটা সবার মনের ভেতরেই থাক। আপনারাও জানেন, বাংলাদেশ দল কী চায়। আমরা ক্রিকেটাররাও জানি, আমরা দলকে কত দূর নিয়ে যেতে চাই। সবাই চায় যে, আমরা অনেক বড় কিছু করি। তবে এটা নিয়ে যখন অনেক বেশি মাতামাতি হয়, তখন আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে না। আসলে দরকার নেই। ফল যখন হবে, তখন এমনিই বোঝা যাবে। আমি একটা জিনিস বলতে পারি, এই দলটা যে খেলবে, এরা প্রতিটি ম্যাচে জেতার জন্য ১২০ শতাংশ দেবে। এই নিশ্চয়তা আমি দিতে পারি এবং প্রত্যেকটা ম্যাচ জেতার জন্যই খেলবে।’ দিন গুনতে গুনতে আরো কাছে বিশ্বকাপ। এরই মধ্যে দল তৈরির কাজটা শুরু হয়ে গেছে। ১ মে আইসিসিতে স্কোয়াড জমা দেয়ার শেষ সময়। যদিও এটা স্রেফ নামেই শেষ সময়। মূলত ২৫ মে পর্যন্ত কোনো কারণ ছাড়াই পুরো স্কোয়াড বদলে ফেলা যাবে। অর্থাৎ, আরো প্রায় এক মাস সময় নানান দিক বিবেচনার জন্য পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য দুয়েকটি পজিশন ছাড়া অদল বদলের তেমন কিছু থকার কথা নয়।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রস্তুতি ক্যাম্পের জন্য ১৭ জন ক্রিকেটারকে ডাকা হয়েছে। আইপিএলে থাকায় মোস্তাফিজুর রহমান ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় সাকিব আল হাসান এই তালিকায় নেই। জিম্বাবুয়ে সিরিজে সব ম্যাচ না হলেও দুজন কিছু ম্যাচ খেলবেন। বিশ্বকাপে তাদের থাকা নিয়েও কোনো সংশয় নেই। এই দুজন ছাড়া ১৭ জন থেকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াডের জন্য বেছে নিতে হবে আরো ১৩ জনকে। চোট বা নাটকীয় কিছু না ঘটলে এই ১৭ জনের বাইরের কারো আসার সুযোগ আসলে নেই। কোনো অফ স্পিনারের চোট ছাড়া যেমন সুযোগ পাবেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু তা নিশ্চিতই করে দিয়েছেন। এই ১৭ জনের বাইরে তেমন পারফর্ম করা কেউ নেইও যারা বিবেচনায় আসতে পারেন।

১৭ জনের মধ্যে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মেহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেনকে নিয়েও আসলে সংশয়ের জায়গা নেই। বাকি রইলো পাঁচটি জায়গা। মিডল অর্ডারের বিকল্প হিসেবে শ্রীলঙ্কা সিরিজে আলো ছড়ানো জাকের আলি অনিক এগিয়ে থাকবেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে খুব খারাপ না করলে বিশ্বকাপে যাচ্ছেন তিনিও। বাকি চারটি স্পটে একজন ওপেনার, টপ অর্ডার ব্যাকআপ ব্যাটার, বাঁ-হাতি স্পিনার ও একজন পেসার জায়গা আছে। চোট থেকে ফেরার লড়াইয়ে থাকা সৌম্য সরকার ওপেনার হিসেবে বিবেচনায় থাকবেন এগিয়ে। মিডিয়াম পেস বল করার সামর্থ্যওে তিনি সুবিধা পাবেন দলে থাকার। ব্যাকআপ টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে তানজিদ হাসান তামিম পারভেজ হোসেন ইমন থেকে বেশ এগিয়ে থাকবেন। মোস্তাফিজ, শরিফুল, তাসকিনের পাশাপাশি চতুর্থ পেসার হিসেবে লড়াইটা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও তানজিম হাসান সাকিবের। এই দুজনই বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট করতে জানেন। গত বিপিএলে দারুণ বল করে অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে দাবি জোরালো করেছেন সাইফুদ্দিনই। ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট হিসেবে তার দলে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের উইকেটগুলো এবার মন্থর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ তাই স্পিন আক্রমণ শক্তিশালী করে যেতে পারে। সাকিব আল হাসান ছাড়াও বাঁ-হাতি আরেকজন স্পিনারের প্রয়োজনীয়তা তাই আছে। এই জায়গায় তানভির ইসলামের সঙ্গে লড়াইটা হাসান মুরাদের। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দুজনকেই বাজিয়ে দেখা হতে পারে। যিনি ভালো করবেন তিনিই পাবেন নিউইয়র্কের টিকিট।

যেমন হতে পারে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, শেখ মেহেদী হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, হাসান মুরাদ/তানভির ইসলাম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত