বিফলে জ্যোতির হাফ সেঞ্চুরি

ভারতের কাছে হারল টাইগ্রেসরা

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বাংলাদেশে বসছে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। বৈশ্বিক এই লড়াইয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছেন টাইগ্রেসরা।

গতকাল রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হরমনপ্রীতদের মুখোমুখি হয়েছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। কিন্তু সিরিজের শুরুটা একদমই ভালো হলো না নিগার সুলতানা জ্যোতিদের। ভারতীয় মেয়েদের দেড়শ’র আগে আটকে রেখেছিলেন স্বাগতিক দলের বোলাররা। সিলেটের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে লক্ষ্যটা ছিল মাঝারি মানের। সেটা তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয় টাইগ্রেসদের। সেখান থেকে নিগার সুলতানা জ্যোতির ফিফটির পরও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪৫ রানের ব্যবধানে জিতেছে ভারত। লক্ষ্য তাড়ায় হতশ্রী ব্যাটিংয়ে তারা করতে পেরেছে ৮ উইকেটে ১০১ রান। ফলে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। জ্যোতি চারে নেমে শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৫১ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার সপ্তম হাফসেঞ্চুরি। ৪৮ বল মোকাবিলায় ৫ চারের সঙ্গে ১ ছক্কা হাঁকান তিনি।

এছাড়া, দুই অঙ্কে যেতে পারেন আর কেবল দুজন। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ১৮ বলে ১৩ ও ছয়ে নামা স্বর্ণা আক্তার ১৮ বলে ১১ রানে বিদায় নেন। পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট খুইয়ে ফেলে বাংলাদেশ। অর্থাৎ, শুরুটা মোটেও কাঙ্ক্ষিত হয়নি। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৩০ রানে চতুর্থ উইকেটের পতন হলে বিপদ আরো ঘণীভূত হয়। এরপর আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি। মেলেনি বড় কোনো জুটি। স্বর্ণা, রাবেয়া খান ও নাহিদা আক্তারের সঙ্গে যথাক্রমে ৩২, ১৬ ও ২১ রানের জুটিতে হারের ব্যবধানই কমান জ্যোতি। ভারতের হয়ে পেসার রেনুকা সিং ৩ উইকেট নেন ১৮ রানে। ২ উইকেট পেতে আরেক পেসার পূজা বস্ত্রকার দেন ২৫ রান। একটি করে উইকেট যায় বাকি তিন বোলারের ঝুলিতে। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত মাঝের ওভারগুলোতে রান তোলে দ্রুতগতিতে। কিন্তু আগে-পরে ছিল না সেই ধার। পাওয়ার প্লেতে ৩৯ রান আনার পর শেষ ৫ ওভারে তারা যোগ করতে পারে কেবল ৩৫ রান। ফলে একসময় স্কোরবোর্ডে ১৬০-১৭০ রান ওঠার সম্ভাবনা জাগলেও তাদেরকে দেড়শ’র নিচেই আটকে যেতে হয়।

৭ উইকেট হারানো সফরকারীদের হয়ে বড় ইনিংস কেউ খেলতে পারেননি। ত্রিশের ঘরে যান তিন ক্রিকেটার। সর্বোচ্চ ৩৬ রান আসে যস্তিকা ভাটিয়ার ব্যাট থেকে। তিনে নেমে ২৯ বল খেলে ৬ চার মারেন তিনি। ওপেনার শেফালি বার্মা ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ ও চারে নামা অধিনায়ক হারমানপ্রিত কউর ২২ বলে ৪ চারে ৩০ রান করেন। শেফালিকে অবশ্য আগেই ফেরাতে পারত বাংলাদেশ। মারুফা আক্তারের করা ষষ্ঠ ওভারে লং-অনে তার সহজ ক্যাচ ফেলেন সুলতানা খাতুন। তখন শেফালি ছিলেন ২২ রানে। এর আগেও একটি সহজ ক্যাচ হাতছাড়া হয়। দ্বিতীয় ওভারে সুলতানার বলে কভারে আরেক ওপেনার স্মৃতি মান্ধানার ক্যাচ তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন ফারিহা ইসলাম। ১ রানে বেঁচে যাওয়া স্মৃতি পরে আউট হন ৯ বল ৯ করে।দলীয় ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ৩১ বলে ৪৩ রানের জুটি পায় ভারত। শেফালিকে সাজঘরে পাঠিয়ে জুটি ভাঙেন রাবেয়া। যস্তিকা দলকে টানতে থাকেন। সঙ্গী হিসেবে পান হারমানপ্রিতকে। তৃতীয় উইকেটে তাদের জুটিতে আসে ৩৩ বলে ৪৫ রান। ছয় বলের মধ্যে ২ রান যোগ হতে বিদায় নেন এই দুজন। হারমানপ্রিত এলবিডব্লিউ হন ফাহিমা খাতুনের বলে। যস্তিকাকে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন রাবেয়া। জোড়া ধাক্কা সামলে রানের চাকায় দম দিতে পারেনি ভারত। রিচা ঘোষ ১৭ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ রান করলেও অন্যপ্রান্ত থেকে পাননি সাহায্য। দেড়শ ছোঁয়ার আশা তবু টিকেছিল ভারতের। তবে শেষ ওভারে মারুফা দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ২ রান দিয়ে জোড়া শিকার ধরলে আগেভাগে থামতে হয় তাদের। রিচার পর তিনি আউট করেন পূজাকে। দুটি ক্যাচই নেন ফাহিমা। বাংলাদেশের জার্সিতে সেরা বোলিং পারফরম্যান্স দেখান লেগ স্পিনার রাবেয়া। তিনি ৪ ওভারে ২৩ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। ৩ ওভারে ২ উইকেট দখল করতে পেসার মারুফার খরচা ১৩ রান। কোনো অতিরিক্ত রান না দিয়ে নজর কাড়ে গোটা বোলিং বিভাগ।