দাপুটে প্রত্যাবর্তনে ফের ফাইনালে মোহামেডান

ফেডারেশন কাপ

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

ঠিক যেন এক বছর আগের ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটালো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। গত বছর এই মে মাসেই ফেডারেশন কাপের ফাইনালে দারুণ এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে শিরোপা জিতেছিল সাদা কালোরা। গতকাল মঙ্গলবার একই টুর্নামেন্টে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখল ঐতিহ্যবাহী দলটি। এদিন মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয় সেমিফাইনাল হবে আগামী মঙ্গলবার। যেখানে মুখোমুখি হবে দুই শক্তিধর দল ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস। প্রাক্তন তারকা ফুটবলার মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদের হাত ধরেই গত মৌসুমে দীর্ঘ ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

সমর্থকদের প্রত্যাশা এবার ও শিরোপা ধরে রাখবে সাদা-কালোরা। কিন্ত মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে মোহামেডানের সেমিফাইনালের লড়াইটা মোটেই সহজ ছিল না। চলতি মৌসুমে ঐতিহ্যবাহীদের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করছে পুলিশ। এই তো কিছুদিন আগেই লিগের ম্যাচে মোহামেডানের পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে পুলিশ। সেমিফাইনালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মোহামেডানের বিপক্ষে তারা যে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে তাতে সাদা-কালোদের ফাইনাল নিশ্চিত করাই পরে গিয়েছিল শঙ্কার মুখে।

প্রথমার্ধে মোহামেডানের সঙ্গে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল খেলে তাদেরকে গোলই করতে দেয়নি পুলিশ। অবশ্য নিজেরাও গোল আদায় করে নিতে পারেনি। গোলশূণ্য থেকেই বিশ্রামে গেছে দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মোহামেডানের জালে বল পাঠিয়ে প্রথমবার টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছিল পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি হতে দেয়নি আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। ফেডারেশন কাপের দ্বিতীয় অন্যতম সফল দলটি আবারও নাম লিখিয়েছে ফাইনালে। ম্যাচের ৭ মিনিটে বক্সের মাথা থেকে মোহামেডানের নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার ইমানুয়েল সানডের শট চলে যায় বারের উপর দিয়ে। ৯ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে মেহদী হাসান মিঠুর লং থ্রু বক্সে পেয়ে হেড নিয়েছিলেন সতীর্থ ফুটবলার। তবে গোল পায়নি মোহামেডান। ২০ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে পুলিশের এ্যাডওয়ার্ড মরিল্লোর ফ্রি কিক বক্সে জটলার মধ্যে থেকে গ্রিপ করেন মোহামেডানের গোলরক্ষক।

২৮ মিনিটে বল নিয়ে পুলিশের বক্সে ঢুকে পড়েন সুলেমান দিয়াবাতে। কিন্তু তাকে ব্লক করে রেখেছিলেন পুলিশের উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার আবদুল্লায়েভ। তাই গোল পাবার মতো শট নিতে পারেননি মোহামেডান অধিনায়ক। প্রথমার্ধ ছিল গোলশূণ্য (০-০)। প্রথমার্ধে সফল না হলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে লিড নেয় পুলিশ ফুটবল ক্লাব। ৪৭ মিনিটে ভেনিজুয়েলার ফরোয়ার্ড অ্যাডওয়ার্ড মরিল্লোর স্পট কিকে বক্সে বল পেয়ে দারুণ হেডে জালে জড়িয়ে দেন উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার ওকমাতভ (১-০)। তবে পিছিয়ে পড়লেও আত্মবিশ্বাস হারায়নি ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। উল্টো ম্যাচে ফিরতে আক্রমণের বন্যা বইয়ে দেয় তারা। ৬৭ মিনিটে বক্সের কয়েকগজ দূরেই ফ্রি কিক পায় মোহামেডান। মোজাফফারভের স্পট কিক চলে যায় বার ঘেষে। পরের মিনিটেই ম্যাচে ফিরে মোহামেডান। ৬৮ মিনিটে মালীর ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতের শট ব্লক করেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার। তবে পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। বল পেয়ে আরিফ পাঠিয়ে দেন বক্সে থাকা ইমানুয়েল সানডেকে। দারুণ শটে পুলিশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ইমানুয়েল (১-১)। ৭৯ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে ইমানুয়েল সানডের ক্রসে ডান পোস্টের কাছ থেকে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন শাহরিয়ার ইমন (২-১)। মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। এরপর রক্ষণটা আরও জমাট করে তারা। দুই গোলে লিড নিয়ে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে থাকে মোহামেডান।

এরপর আর ম্যাচে ফেরা হয়নি পুলিশ ফুটবল ক্লাবের। দারুণ এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে আবারও ফাইনালে নাম লেখায় মোহামেডান। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে আগামী ২১ মে ফাইনালে মোহামেডানের প্রতিপক্ষ হবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালের বিজয়ী দল। গত মৌসুমে ফাইনাল খেলেছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী-মোহামেডান। সেই লড়াইয়ে আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা নিজের করে নিয়েছিল সাদা-কালোরা।