ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

হোয়াইটওয়াশ ঠেকাল জিম্বাবুয়ে

বিশ্বকাপের আগে অস্বস্তির হার বাংলাদেশের

বিশ্বকাপের আগে অস্বস্তির হার বাংলাদেশের

মাস পেরুলেই মাঠে গড়াবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে অনুষ্ঠেয় কুড়ি ওভারের এই সর্ববৃহৎ টুর্নামেন্ট সামনে রেখে নিজেদের শক্তির পরীক্ষা দিল টাইগাররা। প্রতিপক্ষ হিসেবে উড়িয়ে আনা হয়েছিল জিম্বাবুয়েকে। ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম চারটি জিতলেও লিটন-শান্তদের পারফরম্যান্সে প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি মোটেও। ব্যাটে-বলে অসংগতি জায়গা ছিল অনেক, জয়ের ধরনে ছিল অস্বস্তি। শেষ ম্যাচে তাই স্বাগতিক দলের কাছে চাওয়া ছিল পারফরম্যান্সের পূর্ণতা। কিন্তু ঘটল উল্টোটা। ব্যাটে-বলে যে নৈপুণ্য প্রত্যাশিত ছিল বাংলাদেশের কাছে, ঠিক সেভাবেই জিতে গেল জিম্বাবুয়ে। অথচ জিম্বাবুয়ের জন্য এই ম্যাচটি ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। কারণ, প্রথম চারটি জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। তাই নিজেদের ভুলত্রুটি শুধরে শেষ ম্যাচে জয়ের স্বস্তি নিয়ে বিশ্বকাপের দেশে পাড়ি জমাতে চেয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। কিন্তু উল্টো হারের অস্বস্তি ভর করল লাল সবুজের প্রতিনিধিদের ডেরায়। মাহমুদউল্লাহর ফিফটিতে করা বাংলাদেশের মাঝারি পুঁজি ব্রায়ান বেনেট আর সিকান্দার রাজার ফিফটিতে অনায়াসে টপকে গেছে জিম্বাবুয়ে। গতকাল রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের করা ১৫৭ রান তারা ৯ বল আগেই পেরিয়ে যায়। রান তাড়ায় দলের হয়ে ৪৬ বলে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেন রাজা। ওপেন করতে নেমে ৪৯ বলে ৭০ করেন বেনেট।

এই ম্যাচ জিম্বাবুয়ে জিতলেও পাঁচ ম্যাচের সিরিজ বাংলাদেশ জিতে নিয়েছে ৪-১ ব্যবধানে। বিশ্বকাপের আগে এই ম্যাচই ছিল আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ। বৈশ্বিক মঞ্চে মাঠে নামার আগে সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেলবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু পূর্ণ সদস্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে নিজেদের অবস্থান আরো তলানিতে নিয়ে গেল বাংলাদেশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। টাইগারদের দেয়া ১৫৮ রান তাড়ায় দারুণ শুরু আনেন বেনেট।

৪ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন এই ডানহাতি। এরপর উড়তে থাকেন। তৃতীয় ওভারে শেখ মেহেদীকে টানা তিন বলে দুই ছক্কা আর চারে আনেন ১৬ রান। সাইফুদ্দিনের করা পরের ওভার থেকেও আসে ১৪ রান। ৪ ওভারে ৩৮ তুলে ফেলে সফরকারীরা। পঞ্চম ওভারে সাকিবের বলে টাডিওয়নশে মারুমানি স্টাম্পিং হলে প্রথম উইকেট পড়ে জিম্বাবুয়ের। সেটা বড় ধাক্কা হয়নি কারণ দারুণ জুটিতে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিতে থাকবে বেনেট-রাজা। রাজা থিতু হতে সময় নিয়েছেন, বেনেট ধরে রেখেছেন গতি। একজন পেসার কম নিয়ে খেলায় বাংলাদেশও তাদের উপর চাপ বাড়াতে পারেনি। টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ফিফটির পরও বেনেট ছুটতে থাকেন। তার ঝাঁজে স্বাগতিক দলের সম্ভাবনা ক্রমশ মিইয়ে যায়। ৪৯ বলে ৫টি করে ছক্কা-চারে ৭০ করে বেনেট যখন সাইফুদ্দিনকে ক্যাচ দেন ততক্ষণে ম্যাঠ মুঠোয় জিম্বাবুয়ের। অধিনায়ক রাজা পরে জোনাথন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন অনেকটা তুড়ি মেরে। পুরো সিরিজে ব্যর্থ জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক শেষ ম্যাচে ৬ চার, ৪ ছক্কায় করেন ৭২। সকালে টস হেরে খেলতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা বাজে। আগের ম্যাচে ঝলমলে ফিফটি করা তানজিদ হাসান তামিম এবার থিতুই হতে পারলেন না। ৫ বল খেলে ২ রান করে ক্যাচ দেন ব্লেসিং মুজারাবানির বলে। সৌম্য সরকার ব্রায়ান বেনেটকে ছক্কায় উড়িয়ে শুরু করলেও টিকতে পারেননি। বেনেটের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৭ বলে ৭ রান করে। চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচে দলকে জেতানোয় বড় ভূমিকা রাখা তাওহিদ হৃদয় ঢাকায় এসে নিষ্প্রভ। আগের দিনের মতন এবারও রান পাননি।

এবার বেনেটকে কাত করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। বিরূপ পরিস্থিতিতে চারে নেমে টানা তিন-চারে শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নড়বড়ে শুরু পাওয়া শান্তর সঙ্গে জমে উঠে তার জুটি। শান্ত সাবলীল না থাকলেও মাহমুদউল্লাহর ব্যাট ছিল সচল। দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচে শেকল ছেড়ে বের হন শান্ত। তবে এদিনও বড় রান পাওয়া হয়নি তার। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে এক ছক্কা মেরে পরে ক্যাচ দেন ডিপ মিড উইকেটে। ২৮ বলে থামেন ৩৬ করে। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে পরে যোগ দিয়ে সাকিব আল হাসান যোগ করেন ৩৯ রান। তবে তাদের জুটি ছিলো তুলনামূলক মন্থর। ৩৯ রান আনতে তারা লাগান ৩৩ বল। ১৭ বলে ২১ করে লুক জঙ্গুইর শিকার সাকিব। এক পর্যায়ে ২০ বলে ৩১ থেকে মাহমুদউল্লাহ ৪৪ বলে থামেন ৫৪ করে। শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের আলগা বোলিংয়ের সুবিধা তুলেন জাকের আলি। তার ১১ বলে ২৪ রানের ইনিংসে দেড়শ’ পার করে বাংলাদেশ। ওই রান যে এখানে যথেষ্ট না তা বুঝিয়ে দেন বেনেট-রাজারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত