দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যৌন হয়রানির অভিযোগ নতুন নয়। মাঝেমধ্যে সংগঠক কিম্বা ফেডারেশন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে। এবার বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন দুই নারী খেলোয়াড়। অভিযুক্তের বিচার চেয়ে কয়েক দিন আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) চিঠি দিয়েছিলেন তারা। সেই চিঠি আমলে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এনএসসি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লুলু বিলকিস বানুকে আহ্বায়ক, ক্রীড়া পরিষদের আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসানকে সদস্য সচিব ও উপ-পরিচালক (ঢাকা) সৈয়দা তসলিমা আক্তারকে সদস্য করে ওই তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে গতকাল সোমবার। পরিষদের চেয়ারম্যান, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন কমিটি গঠনের নির্দেশনা প্রদান করেন। আজ থেকেই আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে তদন্ত কমিটির। প্রথমেই অভিযোগকারী দুই জুজুৎসু খেলোয়াড় রুমি আক্তার ও রিক্তা খাতুনকে ডেকেছে তদন্ত কমিটি। আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে তদন্ত কমিটি এই দুই জনের কাছ থেকে নানা বিষয় শুনবে। এরপর পর্যায় ক্রমে অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নিউটন ও আরো সংশ্লিষ্টদেরও জেরা করবে তদন্ত কমিটি। জনপ্রিয় ও প্রচলতি খেলার বাইরের আড়ালে রাজনৈতিক পরিচয়ে ও নানা প্রভাবে নিত্যনতুন বা উদ্ভাবিত খেলাকে অনুমোদন দিতে বাধ্য হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। একেবারে অপ্রচলিত ও অচেনা খেলা জুজুৎসু। অনেকটা কারাতের মতো খেলাটি হঠাৎ করে ক্রীড়াঙ্গনে নেতিবাচক আলোচনায়। ২০১৮ সালে সেভাবেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুমোদন পায় জুজুৎসু। কার্যক্রমের গতিশীলতা ও পারফরম্যান্সের মাধ্যমে অনেক এসোসিয়েশন ফেডারেশনে উন্নীত হয়েছে। জুজুৎসু সেই আড়ালেই রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে কয়েক বছর পরপর যৌন নির্যাতন-ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। ২০১৮ সালে একজন নারী ভারোত্তোলককে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল। পরে অবশ্য অভিযুক্ত সোহাগ আলী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছিলেন। পরে বছর এক কিশোরী ক্রীড়াবিদকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাও করা হয়েছিল। তবে অনেক সময় কাউকে ফাসানোর পরিকল্পনা অথবা অন্য উদ্দেশ্য হাছিলের হাতিয়ার হিসেবেও এমন অভিযোগ উত্থাপিত হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সঠিক তদন্তের অভাবে প্রকৃত বিচার না পেয়ে ক্রীড়াঙ্গনও ছেড়ে যায়। জুজুৎসুর ক্ষেত্রে কি হয় সেটাই দেখার বিষয়।