আস্থার প্রতিদান দিতে চান কোচ জলিল

চতুর্থ শিরোপা জয়ে চোখ বাংলাদেশের

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

এ দেশের মাটি ও মানুষের খেলা কাবাডি। এক সময় গ্রামের কাঁচা রাস্তায়, মাঠ, বাগানে বা খোলা স্থানে জমজমাট ও উৎসবমুখর পরিবেশে হতো এই কবাডি খেলাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই খেলা এখন আর তেমন দেখা যায় না। আধুনিকতার এ যুগে ক্রিকেট, ফুটবল কিম্বা ব্যাডমিন্টনের মতো খেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে কবাডি। ফলে একসময়ের জনপ্রিয় খেলাটা অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল। তবে দেশের জাতীয় এই খেলাটিকে হারিয়ে যেতে দেয় বাংলাদেশের পুলিশের দায়িত্বশীল কিছু মানুষ, যাদের কল্যাণে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম বয়ে আনছে কাবাডি। বিশেষ করে কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান তাদের অন্যতম। তার সুনিপুণ দক্ষতায় স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে টানা চতুর্থবারের মতো বঙ্গবন্ধু কাপ ২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্ট শুরু হতে যাচ্ছে। এবার ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের ১২ দেশ এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করবে। টুর্নামেন্টের গত তিন আসরে বিদেশি কোচের ওপর আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন। এবার দেশি কোচদের ওপর আস্থা রেখেছে ফেডারেশনটি। সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চান জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত কোচ আবদুল জলিল। তিনি বলেন, গেল তিনটি আসরে বিদেশি কোচের মাধ্যমে আমরা হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। চতুর্থ আসরে দেশি কোচদের ওপর দায়িত্ব দেয়ায় দলকে চ্যাম্পিয়ন করানো আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। কোচ জলিল বলেন, এবার দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো শক্তিশালী দল আসছে। কেনিয়াও বেশ শক্তিশালী। অন্যসব দলগুলো কম-বেশি ব্যালেন্সড ও শক্ত প্রতিপক্ষ। কাউকে দুর্বল ভাবার অবকাশ নেই। তবে আমরা টেকনিক্যাল দিক থেকে অনেক এগিয়ে। আমরা শিরোপা জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব। কোচ আবদুল জলিল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কাপ কাবাডির চতুর্থ আসর সামনে রেখে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে দল অনুশীলনের মধ্যে রয়েছে। যদিও সবশেষ জাতীয় দলে খেলা কয়েকজন খেলোয়াড় এবার দলে আসতে পারেননি চোটের কারণে। তবুও অভিজ্ঞ আর তরুণ্যের সমন্বয়ে গড়া দল নিয়ে আমরা আশাবাদী। বর্তমানে জাতীয় কাবাডি স্টেডিয়ামে প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুই বেলা কঠোর অনুশীলনে খেলোয়াড়রা শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয়ে ঘাম ঝরাচ্ছেন।’ লম্বা সময় ধরে দলের প্রস্তুতি নিলেও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হয়নি। তবে এ নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নন কোচ জলিল। সাবেক এ তারকা খেলোয়াড় বলেন, ‘আমরা হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন দল। সেই সাফল্যে উজ্জীবিত দলের সবাই আরেকটি শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছেন। এ মুহূর্তে আমরা শেষ মুহূর্তের ভুল-ক্রটিগুলো শুধরানোর চেষ্টা করছি। সম্ভাব্য প্রতিপক্ষের দুর্বল ও সবল দিকগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কোন কৌশলে দল খেলবে, এ নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।’ উল্লেখ্য, প্রথম আসরে কেনিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখায়। এরপর ২০২২ সালে দ্বিতীয় আসরেও কেনিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিকরা। গত বছর অনুষ্ঠিত ফাইনালে চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা অর্জন করে বাংলাদেশ। এবার টানা চতুর্থ শিরোপা জয়ে চোখ লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। সে লক্ষ্যেই জোরেশোরে এগিয়ে চলছে স্বাগতিকদের প্রস্তুতি।