‘বাইরের লিগে আমাদের কয়টা খেলোয়াড় খেলে’

প্রথম দুইটা ম্যাচ হারা কিন্তু হতাশাজনক

প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর খেলতে বাংলাদেশ দল এখন যুক্তরাষ্ট্রে। এরইমধ্যে সেখানে মার্কিনিদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি- টোয়ন্টি সিরিজ খেলেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। শেষ ম্যাচে দাপুটে জয় পেলেও আগেই সিরিজ হাতছাড়া হয়েছে টাইগারদের। স্কোয়ার্ডের অনেকেই এখন পর্যন্ত নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন নির্বাচকরা। সেখানে অনেকটাই নির্ভার মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। কারণ, তিনি এখন সাবেক প্রধান নির্বাচক। দায়িত্বে নেই বিধায় টিভির সামনে বসে দেখতে পারবেন ছেলেদের পারফরম্যান্স। করতে পারবেন শান্ত-লিটনদের মূল্যায়ন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের যা পারফরম্যান্স তাতে প্রত্যাশা একেবারেই কম সাবেক প্রধান নির্বাচকের।

ক্রিকেটে অখ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রথম দেখাতেই সিরিজ হার নাড়া দিয়েছে বাংলাদেশকে। বলতে গেলে সদ্য শেষ হওয়া সিরিজটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে টি-টোয়েন্টিতে টিম বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে। কয়েক দিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। গত আটটি আসরের দিকে তাকালে বাংলাদেশের অর্জনের ঝুলি বলা যায় শূন্য। ২০০৭ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে চমক দেখানো দলটা এরপর থেকে নিজেরাই চমকের শিকার হয়ে লিখেছে একের পর এক ব্যর্থতার গল্প। আরেকটি বিশ্বকাপ শুরুর আগেও অশনি সংকেত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রথম দুটি ম্যাচে হারের পর শেষটিতে ১০ উইকেটের বড় জয় পেলেও তাতে তৃপ্তি মিলছে না। এমন একটা অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপ খেলতে নামবে বাংলাদেশ, যা ভাবিয়ে তুলছে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করা মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও শঙ্কিত।

চলতি বছরের শুরুতে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া সাবেক এই ক্রিকেটার এখন বিসিবির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করছেন। তার মতে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনও অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ, ‘টি-টোয়েন্টি সংস্করণে আমাদের যে স্ট্যান্ডার্ড এই জায়গায় আমরা অনেক পিছিয়ে। এটা কিন্তু মানতে হবে।’ গত রোববার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নান্নু বেশ

আক্ষেপ করেই বলেন, বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ঠিকমতো খেলার সুযোগ না পাওয়াতেই পিছিয়ে পড়েছে। যদি তিন থেকে চারজন নিয়মিত বাইরের লিগগুলো খেলতে পারতেন, তা হলে বদলে যেত দলের চেহারা।

নান্নুর এমনই অভিমত, ‘বাইরের দেশে যে লিগগুলো হয়, আমাদের কয়টা খেলোয়াড় খেলে। আমাদের নিচের সারির বা কাছাকাছি মানের দল আফগানিস্তানের ১১-১২ জন বেশিভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে। ওদের অভিজ্ঞতাটা অনেক। আমরাও যাচ্ছি আস্তে আস্তে। আমাদের মোস্তাফিজ এবারের আইপিএলে যথেষ্ট ভালো খেলেছে এবং আমাদের আরও যদি ৩-৪ জন খেলোয়াড় গড়ে ৩-৪টা লিগ খেলতে পারে, তা হলে এই সংস্করণে আমরাও শক্তিশালী হবো। তারপরও এই সংস্করণ নিয়ে আগাম কিছু বলতে পারবেন না। একটা দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিকের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হার নিয়ে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘প্রথম দুইটা ম্যাচ হারা কিন্তু হতাশাজনক। এই পারফরম্যান্সটা কিন্তু কেউ প্রত্যাশা করেনি। প্রথম ম্যাচটা হতে পারতো। কারণ, এমন একটা জায়গা খেলতে গেছি ’৯৬-এর পরে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে খেলিনি। এটা একটা কারণ হতে পারে খেলোয়াড়রা তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচটা খুবই হতাশাজনক পারফরম্যান্স। কালকে ওভারকাম করেছে বিশ্বকাপের আগে আগামী ম্যাচগুলো ভালো খেলতে এই জয়টা সাহজ জোগাবে।’ আইসিসির বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী দল বদলের সুযোগ ছিল। পরিবর্তন আনা উচিত ছিল কি না? এমন প্রশ্নে সাবেক প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আমাদের যে ১৫ জনের স্কোয়াড দিয়েছে তারা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। সুতরাং এখানে কাউকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। এটা চিন্তা আনাও ঠিক না। কারণ, নির্বাচক প্যানেল এবং টিম ম্যানেজমেন্ট আলোচনা করেই সম্ভাব্য সেরা সাইডটা দাঁড় করিয়েছে। এখন আমাদের সবারই উচিত সম্মিলিতভাবে... যাতে সেরা পারফরম্যান্সটা বিশ্বকাপে দেখতে চাই।’

বিশ্বকাপ নিয়ে প্রত্যাশা জানতে চাইলে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘এখানে দাঁড়িয়ে এই মুহূর্তে বলা কঠিন। যে দুটো ভেন্যুতে খেলবো সেখানে কিন্তু আমরা পা রাখিনি। অনুশীলন ম্যাচগুলো না দেখে আগাম বলাটা মুশকিল। উইকেটের কন্ডিশন কেমন হচ্ছে, আমাদের ছেলেরা কতটা তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পাচ্ছে। আপনার এটাও মাথায় রাখতে হবে ডালাসে প্রথম ম্যাচটা খেলবেন, তারপরের ম্যাচটা নিউ ইয়র্কে খেলবেন।

কন্ডিশনের কিন্তু অনেক পার্থক্য। অনুশীলন ম্যাচগুলো হওয়ার পর আপনি বুঝতে পারবেন দলের ভারসাম্যটা। তখনই আপনি এখানে দাঁড়িয়ে প্রত্যাশার কথা বলতে পারবেন। আমি এখন দেখতে চাই বাংলাদেশ কেমন খেলছে।’