ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আগের বিশ্বকাপ ছাড়িয়ে যেতে চান শরিফুল

আগের বিশ্বকাপ ছাড়িয়ে যেতে চান শরিফুল

মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারে বর্তমানে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন শরিফুল ইসলাম। আগ্রাসী মানসিকতার কারণে তরুণ বাঁ-হাতি এই পেসারের প্রতি মুগ্ধতার কথা জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান সাবেক পেসার শন টেইট। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি ও অনূর্ধ্ব-১৯ মিলিয়ে এরই মধ্যে তিনটি বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন। আরও একটি বিশ্বকাপ (টি- টেয়েন্টি) খেলতে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সম্ববত খেলা হচ্ছে না তার। হাতের চোটে শঙ্কা থাকলেও বিশ্ব আসরে খেলার রোমাঞ্চে বুদ তিনি। গত বছরের শুরু থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলারদের একজন শরিফুল। এই সময়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে তার চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন শুধু তাসকিন আহমেদ। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের বড় অস্ত্র হিসেবেই গিয়েছেন ২৩ বছর বয়সি পেসার।

কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের শেষ ওভারে নিজের বোলিংয়েই ফিল্ডিং করতে গিয়ে বাম হাতে চোট পেয়েছেন শরিফুল। মধ্যমা ও তর্জনীর সংযোগস্থলে লেগেছে ছয় সেলাই। অলৌকিক কিছু না ঘটলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলা হবে না শরিফুলের। অনিশ্চয়তা রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরের ম্যাচ নিয়েও। তবুও বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের রোমাঞ্চ প্রকাশ করেন শরিফুল। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি করা বিসিবির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আয়োজন ‘গ্রিন-রেড’ স্টোরিতে নিজের অনুভুতি প্রকাশ করেন শরিফুল।

‘প্রতিটা খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপ খেলার। সেটা হোক ক্রিকেট, ফুটবল বা যে কোনো কিছুর। সেখানে আমি যদি বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারি, অন্যরকম পাওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপটা আসলে দুনিয়ার সবাই দেখে। ওই ক্ষেত্রে সবার একটা মনোযোগ থাকে। তাই আমার মনে হয়, বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার জন্য অন্যান্য সিরিজ থেকে একটা ভিন্ন অনুভূতি কাজ করে।’ ২০২০ সালে বাংলাদেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন শরিফুল। এরপর থেকে জাতীয় দলে অনেকটাই নিয়মিত তিনি। এক সময়ের স্বপ্নের তারকাদের সতীর্থ হতে পারায় উচ্ছ্বসিত শরিফুল, ‘আমি মনে করি এটা আমার বড় একটা পাওয়া। প্রতিটা ক্রিকেটপ্রেমী, সে গ্রামে গঞ্জে যেখানেই খেলুক তার স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলা। জাতীয় দলের সদস্য হতে পেরে আমি কতটা খুশি তা বলে বুঝাতে পারব না। বিপিএলে তাসকিন ভাইয়ের সাথে খেলেছি, ডিপিএলেও, এখন জাতীয় দলে খেলছি। মোস্তাফিজ ভাইয়ের সাথেও খেলা হয়। ছোট থাকতে ভাবতাম তাদের সাথে খেলব। এখন সেটাই হচ্ছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে।’ এখন পর্যন্ত বিশ ওভারের দুটি বিশ্বকাপ খেলেছেন শরিফুল। ২০২১ সালে চার ম্যাচে ওভারপ্রতি ছয়ের কম রান খরচ করে ৪ উইকেট নেন তিনি। কিন্তু ভালো যায়নি অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া ২০২২ বিশ্বকাপ। ভারতের বিপক্ষে সুযোগ পাওয়া একমাত্র ম্যাচে ৫৭ রান খরচ করেন তিনি। এবার সুযোগ পেলে আগের বিশ্বকাপকে ছাড়াতে চান তিনি। ‘প্রতিটা বিশ্বকাপে সবারই লক্ষ্য থাকে সবশেষ বিশ্বকাপ থেকে ভালো করার। আমারও ইচ্ছা আছে, দলেরও ইচ্ছা আছে ম্যাচ ধরে ধরে জেতার চেষ্টা করব।’

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার পড়ন্ত বেলায়। উঠতি তারকা শরিফুলের বয়স কেবল ২৩। দুজনের বয়সে এত পার্থক্য থাকলেও শরিফুল বলেছেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমরা দলে খুব কমই সিনিয়র জুনিয়র দেখি। সবাই মনে করি যে একটা পরিবার। বন্ধুর মতো আচরণ। রিয়াদ ভাই সবার সাথে ভালো মিশে, উনি কিন্তু আমাদের থেকে সবচেয়ে বড়। তো উনি এমনভাবে মিশে মনেই হয় না যে উনি আমাদের সাথে অত ভিন্ন বয়সের। উনি পুরো দলকে চাঙ্গা করে রাখে। আর মনে হয় যে অনেক ছোট থেকে আমরা একসাথে খেলতেছি।’

বাঁ-হাতি এই পেসার সিনিয়রদের নিয়ে আরো বলেন, ‘খেলার সময় তো বড় ভাইরা অবশ্যই সমর্থন দেন। আমি যখন নিউজিল্যান্ডে খেলতেছিলাম, মুশফিক ভাই আমাকে একটা ভালো কথা বলেছে। ওইটা আমার এখনো কানে সবসময় লাগে। সেটা গোপনই থাক।’

অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে শরিফুলের বয়সের পার্থক্য দুই বছরের। ২৫ বছর বয়ডিস অধিনায়ককে নিয়ে শরিফুল বলেন, ‘খুব ভালো, স্বাধীনতা দেয়। আর খুব বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ।

সবাই উনাকে খুব পছন্দ করে। কারণ আমরা যদি বোলাররা কিছু একটা করতে চাই, কিছু একটা যদি বলি, উনি ওইটা খুব গুরুত্বসহকারে দেখে। সব অধিনায়কই দেখে, শান্ত ভাইও দেখে। শান্ত ভাইয়ের সঙ্গে অনেক দিন ধরে খেলতেছি। সেক্ষেত্রে আচরণ বলি, সবকিছুই ভালো।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত