টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

কাল মাঠে নামছে বাংলাদেশ

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

মনিতেই কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে গত বছরটা দুর্গতির মধ্য দিয়ে পার করেছে বাংলাদেশ। দুঃসময় সঙ্গী করেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরে খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন টাইগাররা। তার আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও দাপটের অভাব ছিল যথেষ্টই। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে পর্যন্ত সিরিজ হারের লজ্জায় পড়তে হয়েছে তাদের। যে কারণে ক্রিকেটবিশ্বেও নাজমুল হাসান শান্তর দলকে নিয়ে আস্থা আছে সামান্যই। এমন অবস্থায় আগামীকাল শনিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। নড়বড়ে ব্যাটিং লাইন আপ হলেও ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়ে আসর শুরু করতে মরিয়া লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে হতাশাজনক পারফরমেন্স করলেও অনেকটাই আত্মবিশ্বাসীই মনে হচ্ছে টাইগার শিবিরকে। আইসিসির সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হারের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে টাইগাররা। এরপর প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের কাছেও অসহায়ভাবে হার বরণ করে নেয় বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক পারফরমেন্সের বিচারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে জায়গা করে নেয়ার মতো দল নয় বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রথম ম্যাচের বাজে পারফরমেন্স টাইগারদের আশাবাদী করছে। ওই ম্যাচে মন্থর উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হওয়ায় মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের দলে মূল সমস্যা ব্যাটিং। আশানুরূপ বোলিং পারফরমেন্সে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের মাথাব্যথা কারণ দলের বোলাররা। এ কারণেই মন্থর উইকেট বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করছে। ডালাস এবং নিউইয়র্কের সঙ্গে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটের মিল পাওয়া যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কাকে ধরাশায়ী করতে উইকেটের ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার শোচনীয় হারের পর উইকেটটি নিম্নমানের বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনকি শ্রীলঙ্কাও পিচের সমালোচনা করেছে। তবে বাংলাদেশকে নতুনভাবে ইতিহাস লিখতে হবে। ২০০৭ সালের প্রথম আসর দিয়েই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত ওই আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেন টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওই জয়টিই এখনো পর্যন্ত বড় কোনো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র জয়। অস্ট্রেলিয়ায় সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনটি জয় পেয়েছিলেন টাইগাররা। সেটিই এক আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড। কিন্তু তিনটি জয়ই ছোট দলের বিপক্ষে পেয়েছিলেন টাইগাররা।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত ভার্সনে ১৬ ম্যাচ মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পাঁচটিতে জয় ও ১১টিতে হেরেছে তারা। বড় দলগুলোর মধ্যে একমাত্র শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই সবচেয়ে বেশি জয় আছে টাইগারদের। এই পরিসংখ্যানও বাংলাদেশের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘আগে যা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা জানি, আমাদের কতটা সামর্থ্যবান। আমাদের সাহসী হতে হবে এবং পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে হবে।’ গ্রুপ ‘ডি’-তে শ্রীলঙ্কা ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। পরের রাউন্ডে যেতে চাইলে শ্রীলঙ্ক ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে যেকোনো একটি বড় দলকে হারাতে হবে বাংলাদেশকে। শান্তর নির্ভিক ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা থাকলেও অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিশ্বাস টুর্নামেন্টে ভালো শুরু যেকোন দলকে আত্মবিশ্বাসী করে। তিনি বলেন, ‘আমরা কীভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করবো, তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। আমাদের ভালো শুরু করতে হবে। শুরুটা ভালো করতে পারলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাব বলেই আমার বিশ্বাস।’

অন্যদিকে চাপে থাকবে শ্রীলঙ্ক। কারণ, বাংলাদেশকে যদি হারাতে না পারে, তাহলে পরের রাউন্ডে যাওয়ার পথ অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে লঙ্কানদের। সেক্ষেত্রে অনেক যদির ওপর নির্ভর করতে হবে তাদের। নিজেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারানোর চাপ দল কাটিয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। সাইড স্ট্রেন চোটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজে এবং অনুশীলন ম্যাচে খেলতে না পারা পেসার তাসকিন আহমেদের প্রত্যাবর্তনে আত্মবিশ্বাসী থাকবে বাংলাদেশ। কিন্তু দলের আরেক সেরা পেসার শরিফুল ইসলামকে পাবে না টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বোলিং হাতে ইনজুরিতে পড়েন শরিফুল।