বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসান মাঠে নামা মানেই নতুন রেকর্ডের জন্ম। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অসংখ্য রেকর্ডে নিজের নাম বসিয়েছেন। আরও একটি রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামলেই ইতিহাস গড়ে ফেলবেন তিনি। বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সাকিব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নয়টি আসরেই খেলতে যাচ্ছেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের দিন প্রথম ওই কীর্তি গড়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মাইলফলক গড়ার আগে নিজের অনুভূতি জানিয়ে আইসিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দিয়েছেন সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক। সেখানে সাকিব বলেন, ‘আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব আসরে খেলতে পেরে আমি নিজেকে বিশেষাধিকার প্রাপ্ত মনে করছি। সব আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি অনেক গর্বিত ও খুশি।’ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব আরও বিশ্বকাপ আসরে অংশগ্রহণের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। এবার আইসিসির ভিডিওতে তিনি একই অভিপ্রায় প্রকাশ করেন, ‘বিশ্বকাপ আসরগুলোতে আমি অনেক বেশি স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আশা করি আরও কয়েকটা আসর আসছে (খেলতে পারব)।’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া ক্রিকেটারদের শীর্ষে আছেন সাকিব। বাঁ-হাতি এই অর্থোডক্স স্পিনার শিকার করেছেন ৪৭ উইকেট। এবারের আসরে তিনি প্রথম কোনো বোলার হিসেবে সংক্ষিপ্ত ক্রিকেটের মেগা টুর্নামেন্টটিতে উইকেটের ফিফটি করার সুযোগ পাচ্ছেন। ওই তালিকায় তার পরের অবস্থানে থাকা বাকি চার বোলার- শহীদ আফ্রিদি (৩৯), লাসিথ মালিঙ্গা (৩৮), সাঈদ আজমল (৩৬) ও সমান ৩৫ উইকেট নেওয়া অজন্তা মেন্ডিস ও উমর গুল আগেই বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটকে। আইসিসি প্রকাশিত ভিডিওতে বাংলাদেশের নাম বিশ্বক্রিকেটে উজ্জ্বল করা সাকিবকে নিয়ে কথা বলেছেন বেশ কয়েকজন টাইগার ক্রিকেটার। তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘সাকিব আল হাসান মানে কিংবদন্তি। নিজের ধরনে ক্রিকেট খেলেও কিভাবে বিশ্ব ক্রিকেটে বড় তারকা হওয়া যায় তিনি সেই উদাহরণ তৈরি করেছেন। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং আমাদের জন্য ওই নমুনা দেখিয়েছেন।’ আরেক তারকা পেসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। সিনিয়র-জুনিয়র সবাইকে তিনি অনেক ভালোভাবে সমর্থন করেন। তার সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করতে পারা আমাদের জন্য গর্বের।’ সাকিবের খেলার ধরন ও চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা অনুপ্রেরণা জোগায় বলে জানান তানজিম সাকিব, ‘ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ভালো পারফর্ম করে আসছেন সাকিব ভাই। যা এখনও বজায় রয়েছে। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করতে হয় এবং আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হয় যেভাবে। তিনি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন, যা আমাদেরও অনেক অনুপ্রাণিত করে।’ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স খুব একটা আশা জাগানিয়া নয়। একইভাবে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না সাকিবও। এবারের বিশ্বকাপকে তার শেষ আসর মনে করা হলেও, আরও মেগা টুর্নামেন্ট যে এই অলরাউন্ডার খেলতে চান সেটি তার কথায় ওঠে এসেছে। আপাতত টাইগারভক্তদের নজর চলতি আসরে, সেখানে দেশের ক্রিকেটের বড় এই পোস্টারবয় কেমন পারফর্ম উপহার দেন সেটাই দেখার বিষয়।