ঢাকা ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘এরকম চাপের ম্যাচ আমি আগে খেলিনি’

‘এরকম চাপের ম্যাচ আমি আগে খেলিনি’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুন এক জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ। তবে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিলেন টাইগাররা। প্রথমে সে চাপ সামাল দেন লিটন দাস। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচের মোড় অনেকটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন তাওহীদ হৃদয়। তারপর আবারও শঙ্কা। শুরু হয় স্নায়ুর লড়াই। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতায় স্নায়ুচাপের কঠিন পরীক্ষায় উৎরে গিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করার পর বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন, আর কোনো ম্যাচে এতোটা চাপ সামলাতে হয়নি তাদের। এর পেছনে বেশি দায় ক্রিকেটারদেরই। অনেক দিন ধরেই চেনা ছন্দে নেই বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও প্রত্যাশিত দাপট সেখানে ছিল না। বিশ্বকাপের আগে সিরিজ হারে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচেও অসহায় আত্মসমর্পণ করে ভারতের বিপক্ষে। অনেক দিন ধরেই ব্যাটিংয়ে ভুগছে বাংলাদেশ। টপ অর্ডার নেই ছন্দে, বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানই অধারাবাহিক। তাই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ভীষণ চাপেই ছিল শান্তর দল।

ডালাসে গতকাল শনিবার শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে পথচলায় বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচের গুরুত্ব ছিল অনেক। কিন্তু সাম্প্রতিক ছন্দে জয়ের আশা ছিল অল্পই। তাই সব মিলিয়ে শান্ত বললেন, ‘এমন চাপের ম্যাচ তিনি আগে খেলেননি। বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ১২৪ রানে আটকে ফেলে বাংলাদেশ। পরে টপ-অর্ডারের ব্যর্থতায় শুরুতে চাপে পড়লেও তাওহিদ হৃদয়ের ঝড় ও লিটন কুমার দাসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৯তম ওভারে গিয়ে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘ক্যারিয়ারের সবচেয়ে চাপের ম্যাচ ছিল না কি না? বলা যেতে পারে। আমার কাছে তো তাই লেগেছে খেলা শুরুর আগে থেকে। ব্যক্তিগতাভাবে আমার মনে হয়েছে এরকম চাপের ম্যাচ এর আগে আমি খেলিনি। দিন শেষে জিততে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ্।’ বিশ্বকাপের দল ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচের ফলের ওপরই নির্ভর করতে পারে বাংলাদেশের সুপার এইট খেলার সম্ভাবনা। পরে দেশ ছাড়ার আগে প্রায় একই কথা বলেন শান্ত। জয় দিয়ে শ্রীলঙ্কা ম্যাচ শেষ করার পর এখন সামনের জন্য নতুন পরিকল্পনার কথা বললেন তিনি। ‘এই জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরের তিন ম্যাচও গুরুত্বপূর্ণ। পরের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। ওই ম্যাচে নতুন করে পরিকল্পনা করে আসতে হবে। ভালো ক্রিকেট খেলা ছাড়া উপায় নাই। বিশেষ করে আমরা ব্যাটসম্যানরা যদি আমরা অবদান রাখতে পারি তাহলে ভালো করতে পারব।’

কঠিন সময়ে পাওয়া এই জয় পরের ম্যাচে দলের আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলে মনে করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ‘এই ধরনের ম্যাচ জিতলে সবাই আত্মবিশ্বাসী থাকে। যেহেতু ম্যাচটা আমরা জিততে পেরেছি সবার বাড়তি আত্মবিশ্বাস থাকবে। এই বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে যদি দ্বিতীয় ম্যাচে যেতে পারি তাহলে কাজে দেবে। আশা করি দ্বিতীয় ম্যাচটাও ভালো হবে।’ ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় অবশ্য দুর্ভাবনার কিছু দেখেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে ব্যাটসম্যানদের কাছে নিজের চাওয়াটা পরিষ্কার করে জানিয়েছেন তিনি। ‘আমার মনে হয় না চিন্তার খুব বেশি কারণ আছে। কারণ, চাপের ম্যাচ ছিল। দিন শেষে আমরা জিততে চেয়েছি। ফলের কথা চিন্তা করলে আমরা দুটি পয়েন্ট পেয়েছি। ব্যাটসম্যানরা সবাই হয়তো জানে, আমরা ভালো খেলিনি। তবে সবাই প্রতিদিন ভালো খেলবে না।’ তবে তাওহীদ হৃদয়ের প্রশংসা করতে ভোলেননি তিনি। ‘তবে হৃদয় খুব ভালো একটা ইনিংস খেলেছে। রিয়াদ ভাই খেলাটা শেষ করল। লিটন অনেক দিন পর সুন্দর একটা শুরু এনে দিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় ভালো আছে। আমি আশা করব, যে যেদিন সেট হবে সে যেন সেদিন ম্যাচটা জেতায়। আশা করি না যে, সাতজনই ভালো করবে।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত