সাকিব ছন্দে ফিরবেন আশা শান্ত-তামিমের

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। এই অলরাউন্ডারের ঝুলিতে রয়েছে বেশকিছু ইর্ষণীয় রেকর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লাল-সবুজ দলের ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন সাকিব। ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ পর্যন্ত সবগুলো আসরেই খেলেছেন তিনি। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টে সব থেকে বেশি উইকেটের মালিকও তিনি। তবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার এবারের আসরে ব্যাটে-বলে জ্বলে ওঠতে পারছেন না।

চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই ম্যাচ খেলে মাত্র ১১ রান করেছেন সাকিব। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের উইকেট এক অর্থে বিলিয়ে দিয়েছেন। বল হাতেও বিশ্বকাপের নবম আসরে এখনো উইকেটের দেখা পাননি। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সাকিবের পারফরম্যান্সই। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নন তার অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। সাকিব ফিরবেন বলে বিশ্বাস করেন দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবালও। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে দলীয় অধিনায়ক শান্ত বলেন, ‘সাকিব ভাইয়ের পারফরম্যান্স নিয়ে দলের কেউ চিন্তিত নয়। এটা নিয়ে আমরা কেউ কথা বলতেই চাই না। আমরা জানি বছরের পর বছর তিনি কেমন পারফরম্যান্স করেছেন। মানুষ কী প্রত্যাশা করছেন, সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনি কত (বেশি) আশা করছেন। তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন, কঠোর পরিশ্রম করছেন। বলব না যে তিনি কামব্যাক করবেন। তিনি ভালো অবস্থাতেই আছেন।’ সাকিবের চোখের সমস্যা কি তার পারফরম্যান্সে প্রভাব রাখছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে শান্ত বলেন, ‘না, চোখের সমস্যা আমার কাছে মনে হয় না। সব ঠিকঠাকই আছে। অনুশীলনে ব্যাটিং, বোলিং বলেন, সবকিছুতেই স্বস্তিতে আছেন। শুধু একটা দুইটা ইনিংস, এই ফরম্যাটে একটা দুইটা ইনিংস খারাপ হতেই পারে। তো এটা নিয়ে বাড়তি কোনো চাপ অধিনায়ক হিসেবে আমি অনুভব করছি না। আমি ওটাও জানি যে সে নিজেও চাপ অনুভব করছে না। কারণ অনেক অভিজ্ঞতা এবং খুব ভালোভাবেই কামব্যাক করবে আমার মনে হয়।’ প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন সাকিবের দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবালও। ইএসপিএন ক্রিকইনফোর অনুষ্ঠানে বাঁ-হাতি এই ওপেনার বলেন, ‘সে এরকম সময় আগেও তার ক্যারিয়ারে দেখেছে। তার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং আমি মোটামুটি নিশ্চিত সে খারাপ সময় থেকে ভালোভাবে বেরিয়ে আসবে। সে বাংলাদেশের জন্য খুব বড় ক্রিকেটার এবং অনেক ভালো জিনিষ করেছে। অনেক অর্জন করেছে ব্যক্তিগতভাবে। শেষ এক বছরে সে অত বেশি রান করতে পারেনি। কিন্তু আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে তার ওপর যে সে ব্যাটে-বলে অবদান রাখার উপায় বের করে নিবে।’ চলতি বছরে সাত ম্যাচে সাকিব একশর কম স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৬৯। ২০২৪ সালে বাঁ-হাতি এই স্পিনার ৬ উইকেট নিয়েছেন ৭.১০ ইকোনমিতে বোলিং করে। পারফরম্যান্সে পড়তির কারণে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে অলরাউন্ডারদের র‍্যাংকিংয়ে তিনি নেমে এসেছেন পাঁচে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সময় সাকিবের চোখের সমস্যা ধরা পড়ে। ব্যাটিংয়ের সময় বলা দেখা নিয়ে খুবই অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। চেন্নাইয়ে চিকিৎসক দেখান সাকিব, তাকে চোখের ড্রপ দেওয়া হয় সে সময়। তবে সেই ড্রপ কাজে আসেনি। যে কারণে বিশ্বকাপের শেষ অংশে খেলতে পারেননি সাকিব। যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে আবারও চিকিৎসক দেখান তিনি। যদিও তার চোখে কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি চিকিৎসকরা। এরপর নির্বাচনের মাঠে তুমুল ব্যস্ত থাকতে হয় মাগুরা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাকিবকে। ব্যস্ততা, চাপে আবারও চোখের সমস্যা ফিরে আসে তার। রংপুর রাইডার্সের অনুশীলনে চমশা পরে ব্যাটিং করেও পাননি সমাধান। স্ট্রেস থেকেই চোখের সমস্যা হচ্ছে কিনা, সেটা নিশ্চিত হতে লন্ডনে চিকিৎসক দেখাতে যান সাকিব। সেটাতেও কাজ না হওয়ায় সিঙ্গাপুরে উড়ান দেন তিনি। তাতে সাময়িক সমাধানের পথ মিলেছিল।