ঢাকা ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেপালের স্বপ্নভঙ্গ

নেপালের স্বপ্নভঙ্গ

মাত্র একটি রানের জন্য ঐতিহাসিক জয় হাতছাড়া হলো নেপালের। শেষ বলে রান-আউট করে জয় ছিনিয়ে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সেই রান-আউটের কারণে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবথেকে বড় জয় ছিনিয়ে নিতে পারল না নেপাল। আর যে কায়দায় রান-আউট হলো, সেটা নেপালের হৃদয় আরও ভেঙে দেবে। জয়ের জন্য শেষ বলে দুই রান বাকি ছিল নেপালের।

বলটা ব্যাটে ঠেকাতে পারেননি নেপালের গুলশান ঝা। এক রানের জন্য দৌড়ান তিনি। উইকেটের পিছন থেকে বলটা ছুড়ে দেন কুইন্টন ডি কক। তার ছোড়া বলটা গুলশানের পিঠে লাগে। বলটা যে কোনোদিকে যেতে পারত। কিন্তু নেপালের ভাগ্য এতটাই খারাপ ছিল যে গুলশনের পিঠে লেগে বলটা সোজা নন-স্ট্রাইকার্স এন্ডের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে চলে যায়। তার সরাসরি থ্রো নেপালের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। তবে গুলশানও সেইসময় একটা ভুল করেন। ক্লাসেনের হাতে বলটা যাওয়ার পরে তিনি কোনো কারণে একটু গতি কমিয়ে দেন। তিনি যদি সেইসময় গতি না কমাতেন, তাহলে ম্যাচটা সুপার ওভারে গড়াত। গতকাল শুক্রবার সেন্ট ভিনসেন্টে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র ১ রানে নেপাল হেরেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ। আগে বোলিং বেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ১১৫ রানে আটকে রাখে নেপাল। রান তাড়ায় এক পর্যায়ে তাদের দরকার ছিলো ১৬ বলে ১৭, হাতে ৭ উইকেট। দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর ওই সমীকরণ আর মেলেনি। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। গুলশান ঝা এক চার মারলেও হয়নি। শেষ বলে ২ রানের চাহিদায় বল মিস করেন তিনি।

কিপারের হাতে রেখে রান নিতে গিয়ে রান আউটে কাটা পড়েন এই ব্যাটার। তাবরাইজ শামসির শেষ ওভারে মূলত খেলার মোড় ঘুরে যায়। ১৮তম ওভারে ২ রান দিয়ে তিনি আউট করেন দুই থিতু ব্যাটারকে। এরপর ১২ বলে ১৬ রানের সমীকরণে আনরিক নরকিয়ার ওভারে বোল্ড হন কুশল মাল্লাও। চাহিদা দাঁড়ায় ৮ বলে ১৬ রানে। ওই অবস্থান ক্রিজে আসা সোমপাল কামি নরকিয়াকে ছক্কায় উড়িয়ে খেলা আনেন, শেষ বলে নেন দুই রান। তারপর ওই শেষ ওভারের নাটকীয়তা। যা গ্যালারিতে উপস্থিত বেশ কিছু নেপালের দর্শককে দিল তীব্র যন্ত্রণা। সব কিছুর পর শেষ বলে খেলাটা অন্তত না হারা নেপালের হাতেই ছিলো। ওটানিল বার্টম্যানের বাউন্সার ব্যাটে লাগাতে পারেননি গুলশান। তবে কিপারের হাতে বল রেখেই তিনি দৌঁড় দেন। অপরপ্রান্তের ব্যাটার সোমপাল কামি ততক্ষণে ক্রিজে এসে গেছেন। গুলশান নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে যাওয়ার পথে কুইন্টেন ডি ককের মারা থ্রো তার পিঠে লাগে। তিনি কিছুটা থেমে যান। ওই বল পেয়ে রান আউট করে দেন হেনরিক ক্লাসেন। ১ রানে হেরে স্তব্ধ হয়ে মাঠে বসে থেকেন নেপালের দুই ব্যাটার। টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাট করতে দিয়ে চেপে ধরে নেপাল। চতুর্থ ওভারে মাত্র ১০ রান করে ফেরেন কুইন্টেন ডি কক। দীপেন্দ্র সিংয়ের বলে কট এন্ড বোল্ড হন তিনি। আরেক ওপেনার রেজা হেনড্রিকস মন্থর উইকেটে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। এইডেন মার্করাম তার সঙ্গে জুটির চেষ্টা করলেও বেশিদূর পারেননি। ২২ বলে ১৫ করে কুশল ভুর্টেলের বলে ফেরেন তিনি। ভুর্টেল অফ স্পিনে পরে তুলেন একে একে আরও ৩ উইকেট। ৪৯ বলে ৪৩ করা হেনড্রকিকসকে থামান দীপেন্দ্র। শেষ দিকে ডেভিড মিলারকেও শিকার ধরেন তিনি। তবে দলকে একশো পার করিয়েছেন মূলত ট্রিস্টিয়ান স্টাবস। ১৮ বলে ২৭ করে লড়াইয়ের পুঁজি পাইয়ে দেন তিনি। যা নিয়ে পরে তারা ম্যাচও জিতে গেল। নেওয়ালের ভুর্টেল ১৯ রানে যেমন ৪ উইকেট নেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁহাতি রিষ্ট স্পিনার তাবরাইজ শামসিও ১৯ রানেই নেন ৪ উইকেট। সব কিছু সমান তালে থাকলেও এক রানের ঘাটতি থেকে যায়। প্রোটিয়াদের হয়ে ৪৯ বলে ৪৩ করেন হেনড্রিকস, ঠিক ৪৯ বল খেলে নেপালের সর্বোচ্চ স্কোরার আসিফ শেখ করেন ৪২। ম্যাচের বাস্তবতার সঙ্গেই মিল যেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত