ক্যারিবীয়ানের মানুষরা বরাবরই উৎসবে মেতে থাকেন। তারা সবকিছুতেই খুঁজে নিতে চান আনন্দ। দীর্ঘ সময় ধরে এ অঞ্চলের মানুষের উৎসবের বড় উপলক্ষ ছিল ক্রিকেট। কিন্তু বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগের থাবায় সেটি অনেকটাই বদলে গেছে। বড় তারকারা ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন লিগে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট নিয়েও আগ্রহ ছিল না আগের মতো। তবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্যারিবীয় ক্রিকেটে প্রাণ ফিরিয়েছে। অবশ্য স্বাগতিক ক্রিকেটারদের মন ভার। তবে হতাশার সেই আবহেও গর্বের উপকরণ খুঁজে পাচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। র্যাংকিংয়ে তলানির দিক থেকে গত কিছুদিনে অনেকটা উপরে উঠেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। এবারের বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানের দ্বীপ থেকে দ্বীপে এই দলকে ঘিরে দেখা গেছে প্রবল আগ্রহ। বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও এই দুটি তৃপ্তিকে সঙ্গী করে সামনে ছুটতে চান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।
একাধিক টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী প্রথম দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার দেশের মাঠে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু তা ভেস্তে গেছে নক আউট পর্বের আগেই। গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচের সবকটি জিতলেও সুপার এইটে সেই ধারা ধরে রাখতে পারেনি তারা। ইংল্যান্ডের কাছে হারার পর সোমবার উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে নিশ্চিত হয় তাদের বিদায়।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারালেও সেই ধাক্কা সামাল দিতে পেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়েছিলেন কাইল মেয়ার্স ও রোস্টন চেইস। কিন্তু এরপরই ভেঙে পড়ে ইনিংস। ১৩৫ রানের পুঁজি নিয়ে বোলাররা লড়াই করলেও ম্যাচ জিততে পারেনি। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক দায় দিলেন ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই।
‘ছেলেদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে, তারা শেষ পর্যন্ত লড়েছে। ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে এই পারফরম্যান্সকে ভুলে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমরা। দুই দলই একই উইকেটে ব্যাট করেছে। অবশ্যই ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেট সহজ ছিল না, বিশেষ করে নতুন ব্যাটসম্যানের জন্য। মাঝের ওভারগুলোতে আমরা ঝাঁক ধরে উইকেট হারিয়েছি। টুর্নামেন্টে প্রথমবার এভাবে একসঙ্গে এতগুলো উইকেট হারালাম।
এরকম হলে সবসময়ই তা ব্যাটিং দলের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়। বোলিং দারুণ ছিল। ১৩০ রানের (১৩৫) পুঁজি পাওয়ার পর মাঝবিরতিতে আমরা বলেছি, নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেব। যা হওয়ার, হবে। ছেলেদের কৃতিত্ব দিতে হবে, তারা বিশ্বাস রেখেছে।’ সেই বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত জয়ে প্রতিফলিত হয়নি। তবে বিশ্বকাপের ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়ছেন না পাওয়েল। বরং গত এক বছরে পেছন ফিরে তাকিয়ে তিনি খুঁজে পাচ্ছেন প্রেরণার ছবি।