ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিজয় মঞ্চে বিরহের সুর

বিজয় মঞ্চে বিরহের সুর

২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। এরপর আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা। অবশেষে ১৭টি বছরের দীর্ঘ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ভারত। বিজয়ের মঞ্চেই ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণকে বিদায় বলে দিলেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এর আগে একই দিনে বিশ্বকাপ জয়ের ঠিক পরই এই সংস্করণ থেকে অবসর নেন বিরাট কোহলি। এই দুজনের বিদায়ে টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় ক্রিকেটে একটা অধ্যায়েরই যেন সমাপ্তি হলো। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে ব্যাট হাতে বিরাট কোহলির ৭৬ রানের ইনিংসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে ফাইনালে ম্যাচ অব দ্য মাচও হয়েছেন তিনি। পুরস্কার গ্রহণের পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়েই কোহলি বলেন, ‘এটিই আমার শেষ বিশ্বকাপ ছিল। আমরা ঠিক এটিই অর্জন করতে চেয়েছিলাম।’

বিশ্বকাপের চলতি আসরের শুরু থেকে একেবারেই রানের মধ্যে ছিলেন না তিনি। আগের ৭ ম্যাচে তার মোট রান ছিল ৭৫। এর মধ্যে দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন মাত্র দুইবার, শূন্য রানেও আউট হন দুইবার। তবে ফাইনাল ম্যাচে এসে অবশেষে জ্বলে ওঠে তার ব্যাট। কিন্তু বিশ্বকাপ অভিযানে নিজের পারফরম্যান্সের বিষয়টি সচেতনভাবেই খেয়াল করেছেন তিনি। কোহলি বলেন, ‘একদিন আপনার মনে হবে যে, আপনি রান পাচ্ছেন না, আর তখনই এমন সিদ্ধান্ত মাথায় আসে। ঈশ্বর মহান যে তিনি আমাকে শেষটা সুন্দর করার সুযোগ দিয়েছেন। এবার আমরা পণ করেই এসেছিলামণ্ড হয় এবার, নয়তো কখনও নয়। ভারতের হয়ে এটিই ছিল আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আর কাপটি আমি তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘দেখুন, এটি একপ্রকার ওপেন সিক্রেট ছিল। এই টুর্নামেন্ট শেষেই আমি (অবসরের) ঘোষণা দিতে চেয়েছিলাম। এমন নয় যে, হেরে গেলে এই ঘোষণাটি আমি দিতাম না। নতুন প্রজন্মকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার এখনই সময়।’ অন্যদিকে ম্যাচণ্ডপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে রোহিত বলেন, ‘এটি আমারও শেষ (টি-টোয়েন্টি) ম্যাচ ছিল। বিদায় বলার জন্য এর চেয়ে আর ভালো সময় হতে পারে না। টি-টোয়েন্টি দিয়েই ভারতের জার্সিতে আমার অভিষেক হয়েছিল। আর এটিই চেয়েছিলাম আমি। (বিশ্ব) কাপ জিততে চেয়েছিলাম আমি।’

তিনি বলেন, ‘এই ট্রফিটি জিততে আমি একেবারে মরিয়া হয়ে ছিলাম। তাই এটি জেতার পর আমার অনুভূতি এখন কেমন, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’ ১৫৯টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে এই ফরম্যাটের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রোহিত শর্মা। ৪, ২৩১ রান সংগ্রহকালে টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ পাঁচটি সেঞ্চুরিও তার দখলে। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ আসরেও ১৫৬.৭ স্ট্রাইক রেট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান (২৫৭) সংগ্রাহক হিটম্যান। অন্যদিকে ২০১০ সালে ভারতের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় বিরাট কোহলির। এরপর ওয়ানডে, টেস্টের মতো এই ফরম্যাটেও আলো ছড়িয়েছেন তিনি। দেশের হয়ে মোট ১২৫ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ১৩৭.৯৪ স্ট্রাইক রেট ও ৪৮.৬৯ গড়ে ৪, ১৮৮ রান করেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও ৩৮টি হাফ-সেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছয়টি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে দুইবার টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কোহলি। ক্যারিয়ারের শেষ টুর্নামেন্টেও ম্যান অব দ্য ফাইনাল হয়েছেন তিনি। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে রোহিত শর্মার পরই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত