ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ক্রিকেটে ফেরার আকুতি আফগান মেয়েদের

ক্রিকেটে ফেরার আকুতি আফগান মেয়েদের

টেস্ট খেলুড়ে দেশ হয়েও বর্তমানে আফগানিস্তানের কোনো নারী ক্রিকেট দল নেই। বছর তিনেক আগে তালেবানরা ক্ষমতা দখলের পর সরকারিভাবে দেশটিতে নারী ক্রিকেট দল বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। অথচ আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে একটি নারী ক্রিকেট দল থাকা বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি আফগান পুরুষ ক্রিকেট দলের সাফল্যের পর দেশটির নারী ক্রিকেটারদের অধিকার নিয়ে আলোচনা আবারও নতুন মোড় নিয়েছে। ক্রিকেটে ফিরতে চান আফগান নারীরা। তাই অস্ট্রেলিয়ায় একটি শরণার্থী দল গঠনে সহায়তা করার জন্য আইসিসির কাছে চিঠি দিয়েছেন আফগান নারী ক্রিকেটাররা।

তালেবান ক্ষমতা দখলের আগে ২০২০ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) চুক্তিতে ছিলেন, এমন ১৭ নারী ক্রিকেটার শনিবার আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলেকে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। যেহেতু এসিবিও তাদের স্বীকৃতি দিতে পারছে না তাই, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থার সমর্থন ও নির্দেশনা চেয়েছে তারা। ওই ক্রিকেটাররা জানেন যে, আফগানিস্তানের সরকারি নীতির কারণে এসিবি ও আইসিসি তাদের আফগানিস্তান জাতীয় দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারবে না। তাই তারা এসিবির ব্যানারে খেলার বা আফগান জাতীয় দল হিসেবে ডাকার দাবিও করেননি। বরং শরণার্থী দল হিসেবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ইস্ট এশিয়ান ক্রিকেট অফিসের মাধ্যমে যেন তাদের পরিচালনা করা হয়। যাতে করে তারা সব আফগান নারীদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, যারা ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু আফগানিস্তানে খেলতে পারে না।

সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সেমি-ফাইনালে জায়গা করে নেয় আফগানিস্তানের পুরুষ দল। নিউ জিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারিয়ে বিশ্বের নিজর কাড়েন রাশিদ খান, মোহাম্মদ নাবিরা। এরপরই এলো নারী ক্রিকেটারদের এই চিঠি পাঠানোর খবর। ছেলেদের অর্জনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করার পাশাপাশি চিঠিতে নিজেদের দুর্দশার কথাও তুলে ধরেছে মেয়েরা। ‘আমরা আফগানিস্তান নারী দলের পূর্বে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়। আইসিসি পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের অর্জনে আমরা গর্বিত ও রোমাঞ্চিত। সেমি-ফাইনালে ওঠার জন্য রাশিদ খান ও তার দলকে আমরা অভিনন্দন জানাতে চাই। গভীর দুঃখের বিষয় যে, আমরা নারী হিসেবে পুরুষ ক্রিকেটারদের মতো আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারি না।’

তালেবান সরকার গঠনের পর আফগানিস্তানে মেয়েদের খেলাধুলায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, কড়াকড়ি করা হয় মেয়েদের উচ্চশিক্ষায়ও। খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই বিদেশে নির্বাসন চেয়েছিলেন। আফগানিস্তানের নারী ফুটবলার ও ক্রিকেটারদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে। যুক্তরাজ্য ও কানাডাতেও থাকে কয়েক জন। তাদের অধিকাংশই স্থানীয় ক্লাবে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে সহায়তা পেলেও তারা নিজেদের কোনো প্রতিনিধিত্বকারী দল গড়তে পারেনি। বর্তমানে আইসিসি চাইলেও আফগানিস্তান নারী দলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে পারবে না। কারণ, আইসিসির কোনো সদস্য তাদের কোনো দলকে স্বীকৃতি দেবে, তার এখতিয়ার সম্পূর্ণ সংশ্লিষ্ট বোর্ডের।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত