‘স্যারকে চ্যাম্পিয়নশিপ উৎসর্গ করলাম’

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ডে খেলতে খেলতে দাবার বোর্ডেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। নিজের খেলা শেষ করে বাসায় ফেরার পথে ফিদে মাস্টার নীড় খবর পান তার প্রিয় স্যার জিয়া আর নেই। আকস্মিক এ খবরে হতভম্ব হয়ে পড়েন তিনি। গুরুর মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ফের খেলতে হয়েছে নীড়কে। গতকাল শনিবার শেষ রাউন্ডে ফিদে মাস্টার নীড় রাজবাড়ীর অমিত বিক্রমের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আজ কলম্বোতে দুটি টুর্নামেন্ট খেলতে যাবেন তাই শনিবার শুধুই নীড়ের বোর্ডের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শোকের পরিবেশে আজ নীড়-অমিত খেলা বেশিক্ষণ গড়ায়নি। কয়েক মিনিট পরই দুই জন ড্র মেনে নিয়ে খেলা শেষ করেছেন। এতে ১৩ রাউন্ড শেষে নীড় ১০ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষস্থানে। অন্য প্রতিযোগিদের ১০ পয়েন্ট অর্জন করা সম্ভব নয় ফলে নীড়ের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপ নিশ্চিত হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হয়েও কোনো উচ্ছাসই নেই তার মধ্যে, ‘একটুও আনন্দ লাগছে না। স্যার আমাদের রেখে চলে গেলেন। খুবই খারাপ লাগছে, চ্যাম্পিয়নের কোনো স্বাদই নেই। আমার এই চ্যাম্পিয়নশীপ স্যারকে উৎসর্গ করলাম।’

শুক্রবার ১২তম রাউন্ডে নীড় দেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের সঙ্গে ড্র করে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে অনলাইনে অন্য বোর্ডের খেলা দেখছিলেন। হঠাৎ দেখেন সব স্থগিত। মনে করেছিলেন হয়তো ট্যাকনিক্যাল সমস্যা কিন্তু জিয়া নেই এটা মানতেই পারেননি, ‘আমি যখন আসি তখন দেখলাম উনি খেলছেন। অনলাইনে ভাবলাম কোনো সমস্যায় চাল আপডেট হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর শুনলাম স্যার নেই খেলা স্থগিত। কোনো কিছুই মেলাতে পারছিলাম না।’ নারায়ণগঞ্জের ফিলোসোশিয়া স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়েন নীড়। নানা ধাপ পেরিয়ে জাতীয় দাবায় অংশগ্রহণ করতে হয়। আরো বছর পাঁচেক আগেই তিনি জাতীয় দাবায় নাম লিখিয়েছেন। পাঁচ বছরের মধ্যেই দেশের সেরা দাবাড়ু হলেন। এই সাফল্যের জন্য মা মৌমন রেজা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ টিটুকে অবদান দিলেন, ‘মা অনেক কষ্ট আমাকে এখানে এনেছে। মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। এরপর টিটু আঙ্কেল (বিসিবি পরিচালক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক) বিভিন্ন টুর্নামেন্টে বিমান টিকিট দিয়ে সহায়তা করেন। এজন্য এত কম সময়েই এই সাফল্য পেয়েছি।’