কোপা আমেরিকা

কানাডার স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

কোপা আমেরিকাতে প্রথমবার খেলতে এসেই একের পর এক ম্যাচ জিতে বাজিমাত করেছে কানাডা। ফুটবলপ্রেমীদের চমকে দিয়ে শতবর্ষী এই টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে উঠেছিল জেসি মার্শের শিষ্যরা। শেষ চারের লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। যাদের সামনে ছিল শিরোপা ধরে রাখার মিশন। শক্তির নিরিখে এগিয়েছিল আলবিসেলেস্তেরাই। চোটমুক্ত মেসি ফেরায় সেই শক্তি আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল। নিজেদের সেরাটা দিয়ে লড়লেন কানাডার ফুটবলাররা। তবু বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের রুখতে পারলেন না। ফলে কানাডার স্বপ্নের দৌড় থেমে গেল সেমিফাইনালেই। নিউজার্সির মেট লাইফ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় গতকাল বুধবার সকালে কানাডাকে ২-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। এতে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দুই দলের গ্রুপ পর্বের সাক্ষাতেও একই ব্যবধানে কানাডার বিপক্ষে জিতেছিল আলবিসেলেস্তেরা। আর এক ম্যাচ জিতলেই বিশ্বকাপের পর আরো এক শিরোপা নিজেদের করে নেবে মেসিরা। সেইসঙ্গে স্প্যানিশদের রেকর্ডে ভাগ বসাবে তারা।

ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র দল হিসেবে টানা তিনটি বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে স্পেন। তাদের সে রেকর্ডে ভাগ বসানোর পথে শেষ ধাপে এসে পৌঁছাল আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় ফাইনালের এই ধাপটা এখন পাড়ি দিতে পারলেই স্পেনের অনন্য সেই কীর্তিতে উচ্চারিত হবে লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়াদের নামও। ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালের ইউরো জয় করেছিল স্পেন। এবার সেই সুযোগ আর্জেন্টিনার সামনে। তারা ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জিতেছে, ২০২২ সালে বিশ্বকাপ এবং ২০২৪ সালে ফের কোপা জয়ের সুযোগ তাদের সামনে।

সেমিফাইনালে দলগত শক্তি, রণকৌশল বা ব্যক্তিগত ফুটবল দক্ষতা— কোনো ক্ষেত্রেই আর্জেন্টিনাকে তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেননি কানাডার ফুটবলাররা। তবে মেসিদের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক ফুটবলের আশ্রয় নেয়নি উত্তর আমেরিকার দেশটি। গোটা ম্যাচে ৫১ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখা আর্জেন্টিনা গোলমুখে শট নেয় ১১টি। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল তিনটি। এর দুটি থেকে থেকে তারা করে গোল উদযাপন।

২২তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো দি পলের দারুণ থ্রু বলে অসাধারণ ফিনিশিংয়ে রেকর্ড ১৫ বারের কোপাজয়ীদের এগিয়ে দেন আলভারেজ। আর ৫১তম মিনিটে ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে এঞ্জো ফার্নান্দেজের জোরালো গতির শটে খুব কাছ থেকে পা ছুঁইয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অধিনায়ক মেসি। চলতি কোপা আমেরিকায় দ্বিতীয় গোলের দেখা পান স্ট্রাইকার আলভারেজ। সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে এটি তার নবম গোল। বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকা- উভয় প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে গোল করা আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় ও ইতিহাসের চতুর্থ ফুটবলার তিনি। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি এবারের কোপায় নিশানা ভেদ করেন প্রথমবারের মতো। সব মিলিয়ে এই প্রতিযোগিতায় তার গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ১৪। কোপা আমেরিকার ছয়টি আলাদা আসরেও গোল করার নজির স্থাপন করেন তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে রেকর্ড ১০৯ গোলের মালিক মেসি।

পুরো ৯০ মিনিটই আর্জেন্টিনার একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল না অবশ্য। গতিময় ফুটবলে শুরুর দিকে তাদের বিপাকে ফেলা কানাডা শেষ ১০ মিনিটও ছড়ি ঘোরায়। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের খোঁজ পায়নি প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকায় অংশ নিয়ে সেমিতে ওঠা দলটি। তাই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ গোলপোস্ট অক্ষত রেখেই মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশ সময় অনুসারে আগামী সোমবার সকালে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে উরুগুয়ে কিংবা কলম্বিয়ার বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা। কোপার সবশেষ আট আসরে এটি তাদের ষষ্ঠ শিরোপা নির্ধারণী লড়াই। আর দ্বিতীয় সেমিতে হেরে যাওয়া দলের বিপক্ষে ফাইনালের আগের দিন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নামবে কানাডা।