ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাবার স্বপ্নপূরণে দাবা অলিম্পিয়াডে তাহসিন

বাবার স্বপ্নপূরণে দাবা অলিম্পিয়াডে তাহসিন

দুই বছর আগেই ছেলেকে নিয়ে দাবা অলিম্পিয়াডে খেলার স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন গ্রাান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। আরো একটি দাবা অলিম্পিয়াড দুয়ারে দাঁড়িয়ে। এবারো ছেলেকে সঙ্গী করেই যাওয়ার ইচ্ছে ছিল জিয়ার। কিন্তু দেশের দ্বিতীয় এই গ্রাান্ডমাস্টার পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাই পিতার স্বপ্ন পূরনে এগিয়ে যাচ্ছেন ছেলে ফিদে মাস্টার তাহসিন। জাতীয় দাবার প্লে অফ জিতে পঞ্চম হয়েই হাঙেরিতে অনুষ্ঠেয় দাবা অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন তাহসিন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় দাবার শেষ রাউন্ড শেষে মনন রেজা নীড় ১০ পয়েন্টে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ ও গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীব ৯ পয়েন্ট নিয়ে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে। দুই গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ ও জিয়ার সমান ৮। জিয়া আর নেই, তাই সাত পয়েন্ট নিয়ে যুগ্মভাবে ফিদে মাস্টার তাহসিন ও অনত চৌধুরি পঞ্চম স্থানে ছিলেন। জাতীয় দাবায় পঞ্চম স্থানধারী অলিম্পিয়াডে খেলেন তাই আজ প্লে অফে পঞ্চম স্থানের নিষ্পত্তি হয়েছে। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে তৃপ্ত তাহসিন, ‘আবার অলিম্পিয়াডে খেলব। ভালো লাগছে, কিন্তু বাবা নেই। সেই শূন্যতা হৃদয়ের মধ্যে রয়েছে।’ ২০২২ সালে বাবা-ছেলে দুইজন অলিম্পিয়াডে খেলেছেন। এবার তাহসিনকে একাই যেতে হবে। ১৮ বছর বয়সি এই দাবাড়ুর কথা, ‘বাবা আমাদের মাঝে নেই, এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।’ তাহসিনের পাশে বসা জিয়ার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্যর কথা, ‘জিয়া, আমি ও তাহসিন আমরা তিনজন সব সময় একসঙ্গে ছিলাম। অথচ আজ জিয়া আমাদের মাঝে নেই। এটা মানতে পারছি না। এখনো মনে হয় জিয়া বাইরে আছে, এসে পড়বে (বলতে বলতে তার চোখের কোন ভিজে উঠে)।’ জিয়াউর রহমান ১৯৮৮ সাল থেকে অলিম্পিয়াডে খেলেছেন। ২ বছর অন্তর হওয়া অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের সবচেয়ে নিয়মিত মুখ ছিলেন জিয়া। ২০১০ সালে ফেডারেশনের সঙ্গে মনোমালিন্যে গ্র্যান্ডমাস্টাররা অলিম্পিয়াড বয়কট করেছিলেন। সেই আসর ছাড়া সর্বাধিক ১৬ অলিম্পিয়াডে খেলেছিলেন জিয়া। যে রেকর্ড বাংলাদেশের কারো নেই। সেখানে তাহসিনের ১৮ বছরে দুটি অলিম্পিয়াড হবে। ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য বাবার রেকর্ডকে স্পর্শ করা। তাহসিনের কথা, ‘চেষ্টা থাকবে বাবার মতো বেশি অলিম্পিয়াডে খেলা।’ জিয়া দেশের বাইরে যেখানেই খেলতে যেতেন স্ত্রী-সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। এবার ছেলের সঙ্গে হাঙ্গেরী যেতে চান মা তাসমিন লাবণ্য, ‘ছেলে এখনো ছোট, ওর সঙ্গে আমিও যেতে চাই। আমি যত দিন আছি ছেলের সঙ্গেই থাকব।’ এজন্য দাবা ফেডারেশন ও সরকার সবার প্রতি আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন জিয়ার স্ত্রী। তাসমিন লাবণ্য বলেন, ‘জিয়ার স্বপ্নপূরণে সবাইকে এগিয়ে আসুক এটাই আমার চাওয়া। জিয়া দেশের জন্য অনেক করেছে, এবার জিয়ার পাশে এসে যেন দাঁড়ায় সবাই।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত