অস্ট্রেলিয়া সফর তাদের বড় সুযোগ

প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জাতীয় দল সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিল ২০০৮ সালে। তারপর কেটে গেছে ১৯টি বছর, আর ওই মহাদেশে পা মাড়ায়নি লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত সেখানে সফরের কোনো পরিকল্পনা নেই টাইগারদের। আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার কথা শান্ত-লিটনদের। সেই সিরিজে চোখ রেখেই গতকাল শনিবার দুপুরে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছে বাংলাদেশ হাই-পারফরম্যান্স (এইচপি) দল। মাসব্যাপী অস্ট্রেলিয়া সফরে বাংলাদেশের এইচপি দল অনেকগুলো ম্যাচ খেলবে। ডারউইনে পাকিস্তান শাহীনের বিপক্ষে চার দিনের দুটি ম্যাচ খেলবে। এরপর শুরু হবে পাকিস্তান শাহীনস, নর্দার্ন টেরিটোরি ও বাংলাদেশ এইচপির মধ্যে ওয়ানডে সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ৯টি দল নিয়ে ৯ থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত চলবে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। সেমিফাইনাল, ফাইনালের আগ পর্যন্ত ২০ ওভারের ৬টি ম্যাচ খেলবে এইচপি। টুর্নামেন্টের ৯টি দল হলো পাকিস্তান শাহীনস, বাংলাদেশ এইচপি, নর্দান টেরিটোরি, পার্থ স্করচার্স, মেলবোর্ন রেনেগার্ডস, মেলবোর্ন স্টার্স, তাসমানিয়া, অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স ও এসিটি কোমেটস। লম্বা এই সফরের শুরুটা দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ দিয়ে। এই সংস্করণেই শেখার জায়গাটা বেশি। ২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে টেস্ট খেলার কথা বাংলাদেশ জাতীয় দলের। তার আগে শেখা ও অভিজ্ঞতার ভান্ডার সমৃদ্ধ করার বড় সুযোগ দেখছেন জয়। চার দিনের ম্যাচে বাংলাদেশ এইচপিকে নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদুল হাসান জয়। ঢাকা ত্যাগের আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন এই ক্রিকেটার। লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে জয় জানান, তারা ২০২৭ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতিও সেরে রাখতে চান। টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে তিনজনের। তবু আপাতত তাদের গায়ে চেপেছে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) স্কোয়াডের জার্সি। লক্ষ্য একটাই আগামীর পথচলায় নিজেদের আরো শাণিত করা। প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে যাওয়াকে তাই বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন মাহমুদুল হাসান জয়। ‘এটা আমাদের জন্য খুব বড় একটা সুযোগ, আমরা অস্ট্রেলিয়াতে যাচ্ছি। আমি বলব এখানে যে গ্রুপটা আছি কারোরই অস্ট্রেলিয়া ট্যুর করা হয়নি। এটা আমাদের প্রথম ট্যুর, এটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৭ সালে ওখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ আছে ওটার জন্য খুব ভালো প্রস্তুতি হবে।’ অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে নামতে চান জয়, ‘ব্যক্তিগত লক্ষ্য অধিনায়ক হিসেবে দলে যে কম্বিনেশন আছে সিরিজ জেতার লক্ষ্য থাকবে। আমরা ছোট থেকে একসঙ্গে আছি। আমাদের অনূর্ধ্ব-১৯ এর কয়েকজন আছে। জাতীয় দলের কয়েকজন আছে। ওই হিসেব করলে আমাদের কম্বিনেশনটা খুব ভালো হবে। আমরা খুব উপভোগ করে ক্রিকেট খেলতে পারব।’

দীর্ঘ সফরে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকবেন নির্বাচক হান্নান সরকার। দেশ ছাড়ার আগে তিনি বলেন, ‘এভাবে বললে আসলে অনেক কিছুই চিন্তা করা যেত। আমরা যখন তিন সিলেক্টর সিলেকশনে বসেছিলাম এটা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করি, তারপর সিলেকশনটা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। আপনারা দেখছেন কতদিন গ্যাপে সাদমান খেলছে। পাশাপাশি কন্ডিশনের সুযোগটা আমরা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আফিফও নিকট অতীতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে দূরে রয়েছে। বিশ্বকাপের দলের সঙ্গে গিয়েছিল; কিন্তু ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি।’ দেড় যুগেরও বেশি সময় পর অস্ট্রেলিয়া সফর নিয়ে জাতীয় দলের সাবেক এই ওপেনার বলেন, ‘এটা তো আমরা সবাই বিশ্বাস করি যে অস্ট্রেলিয়া নামটা শুনলেই মনে হয় চ্যাম্পিয়ন। সে জায়গা থেকে এই ধরনের দলের সঙ্গে খেলার পাশাপাশি ওই কন্ডিশনে খেলা এটা ভালো একটা অভিজ্ঞতা; যেটা আমাদের খেলোয়াড়রা নিতে যাচ্ছে একটা লম্বা সময়ের অপেক্ষার পরে। ২০০৮ এ বাংলাদেশ দল শেষবার গিয়েছিল। আমি আশা করছি, এবারের অভিজ্ঞতা তাদের ভবিষ্যতের জন্য কাজে লাগবে।’

অস্ট্রেলিয়া সফরে বাংলাদেশ এইচপি দল

চার দিনের দল : মাহমুদুল হাসান জয় (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, পারভেজ হোসেন ইমন, অমিত হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপু, আরিফুল ইসলাম, মাহিদুল ইসলাম অংকন, রাকিবুল হাসান, শেখ পারভেজ রহমান জীবন, হাসান মুরাদ, রেজাউর রহমান রাজা, মুকিদুল ইসলাম, রিপন মন্ডল এবং মারুফ মৃধা।

ওয়ানডে দল : আফিফ হোসেন (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, জিসান আলম, পারভেজ হোসেন ইমন, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, আরিফুল ইসলাম, আকবর আলী, ওয়াসি সিদ্দিকী, রাকিবুল হাসান, শেখ পারভেজ রহমান জীবন, মাহফুজুর রহমান রাব্বি, আবু হায়দার রনি, মুকিদুল ইসলাম, রিপন মন্ডল এবং মারুফ মৃধা।

টি-টোয়েন্টি দল : আকবর আলী (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, জিসান আলম, পারভেজ হোসেন ইমন, আফিফ হোসেন, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, আরিফুল ইসলাম, ওয়াসি সিদ্দিকী, রাকিবুল হাসান, আলিস আল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান রাব্বি, আবু হায়দার রনি, মুকিদুল ইসলাম, রিপন মন্ডল এবং মারুফ মৃধা।