কার হাতে উঠছে ইউরো শিরোপা

অপ্রতিরোধ্য স্পেন নাকি বুভুক্ষ ইংল্যান্ড

প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আর মাত্র একদিন পরই মাঠে নামবে দুই শক্তিশালী দল স্পেন-ইংল্যান্ড। অপরাজিত স্পেন নাকি আশাজাগানিয়া ইংল্যান্ড, কার হাতে উঠবে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। ইউরো ট্রফি হাতে তুলে নেবার অভিজ্ঞতা স্পেনের এর মধ্যেই হলেও ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড এখনো তা ছুঁতে পারেনি। ৩ বছর আগে ট্রফির কাছে গিয়েও ফাইনালে পেনাল্টিতে ইতালির কাছে হেরে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে ইংলিশদের। সুযোগ আরো একবার দুয়ারে দাঁড়িয়ে। তবে জয়ী হবে কে? কার হাতে উঠবে ইউরোপ সেরার রাজদ-? উত্তর মিলে যাবে আজ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ফাইনালে। জার্মানির সঙ্গে যৌথভাবে তিন ইউরো জয়ের রেকর্ড স্পেন নিজেদের করে নিতে পারবে কি না; নাকি আন্তর্জাতিক আঙিনায় দীর্ঘদিন শিরোপা বুভুক্ষ ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো পাবে ইউরো জয়ের অনির্বাচনীয় স্বাদ, সে মীমাংসাও হয়ে যাবে এদিনই। বড় মঞ্চে সাফল্যের জন্য অপেক্ষা অবশ্য চলছে দুই দলেরই। অবশ্য সময়ের হিসেবে দুই দলের অপেক্ষাতেও বিস্তর ফারাক। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর আজও বড় শিরোপার স্বাদ পায়নি ইংল্যান্ড। গত ইউরোতে ট্রফির ঘ্রাণ পেলেও নিজেদের ডেরায় ‘থ্রি লায়ন্স’রা শিকার করতে পারেনি ইতালিকে। ২০২৩ উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা জেতা স্পেন সবশেষ ইউরোর মুকুট পরেছিল ২০১২ সালে। তার দুই বছর আগে পেয়েছিল বিশ্বকাপ জয়ের অপূর্ব স্বাদ। বড় মঞ্চে সুদিন ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় তারাও। অপেক্ষায় দুই কোচ সাউথগেট ও দে লা ফুয়েন্তেও। গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে মরক্কোর কাছে হেরে স্পেন ছিটকে যাওয়ার পর দলটির হাল ধরেন দে লা ফুয়েন্তে। ‘হাই প্রোফাইল’ কোচ নন তিনি, কিন্তু এরই মধ্যে দলের খোলনলচে দিয়েছেন পাল্টে। ভারসাম্য এনে, শৈল্পিকতার সাথে আগ্রাসনের মিশেল ঘটিয়ে দুর্বার করে তুলেছেন দলকে। ইয়ামালের মতো অসাধারণ এবং সঙ্গে নিকো উইলিয়ামসের মতো ক্ষিপ্র গতির দুই উইঙ্গার, ফাবিয়ান রুইসের মতো দুর্দান্ত মিডফিল্ডার আছে দে লা ফুয়েন্তের হাতে। গোল পাওয়ার ধারাবাহিকতায় থাকা দানি ওলমোর উপস্থিতি তার আক্রমণভাগকে করেছে আরও শক্তিশালী। কার্ডের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দানি কারভাহাল ও হবাঁন লু নহমাঁর ফেরা তার স্বস্তি বাড়াচ্ছে আরও।

বিপরীতে ইংল্যান্ডের আক্রমণভাগই এখনও ঠিকঠাক জমেনি। জুড বেলিংহ্যাম ও ফিল ফোডেনের অনেক ম্যাচ জয়ের অভিজ্ঞতা আছে বটে, কিন্তু জাতীয় দলের রেকর্ড গোলদাতা হ্যারি কেইনের সঙ্গে জমছে না। যদিও চলতি ইউরোয় তিন গোল করেছেন কেইন, কিন্তু ৩০ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ড নেই ফর্মের তুঙ্গে; বরং ধুঁকছেন। দলটির কোচের মতো সমর্থকদেরও চাওয়া, প্রয়োজনের সময়ে জ্বলে উঠবেন কেইন। রক্ষণে অবশ্য ইংল্যান্ডের দৃঢ়তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। ম্যাচ প্রতি গড়ে ৯.৫ হারে প্রতিপক্ষকে শট নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে তারা; এবারের ইউরোতে যেটা কোনো দলের রক্ষণের সেরা পারফরম্যান্স। চোট কাটিয়ে লুক শ’য়ের ফেরাও সাউথগেটের জন্য স্বস্তির। বার্লিনে শুরুর একাদশে থাকতে পারেন শ’। রাইট-ব্যাকে সংগ্রাম করা কাইল ওয়াকারও সেমি-ফাইনালে ডাচ ফরোয়ার্ড কোডি হাকপোকে আটকে ইঙ্গিত দিয়েছেন নিজেকে ফিরে পাওয়ার। সব মিলিয়ে দুই দলকেই সব রসদ নিয়ে ঝাঁপাতে হবে বার্লিনে। কেন না, দুই দলের সবশেষ মুখোমুখি লড়াই দেখাচ্ছে, মোড় ঘুরতে সময় নেয় না। প্রায় ছয় বছর আগে ভালেন্সিয়ায় মুখোমুখি হয়েছিল স্পেন ও ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইংলিশরা। দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ম্যাচ জমিয়ে তুলে স্পেন হেরেছিল ৩-২ ব্যবধানে। বার্লিনে পাঁচ গোলের রোমাঞ্চ ছড়াবে কি না, কে জানে, তবে রোমাঞ্চকর ম্যাচের আশা করতেই পারেন ফুটবলপ্রেমীরা।