প্যারিস অলিম্পিক

এবার সাংবাদিকের ভূমিকায় সিরিয়ান সাঁতারু ইয়ুসরা

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

আরব বসন্তের শুরুতেই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে সিরিয়া। সরকারি ও বিদ্রোহী বাহিনীর

দ্বন্দ্ব-সংঘাতে বিপর্যস্ত ৭১ হাজার ৪৯৮ বর্গমাইলের দেশটি এখন বিভিন্ন গ্রুপের দখলে। তাই ২০১৫ সালে প্রাণে বাঁচতে বোন সারা মারদিনিকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে ছেড়েছিলেন অলিম্পিয়ান সাঁতারু ইয়ুসরা মারদিনি। জার্মানিতে ঠাঁই হওয়ার পর ২০১৬ রিও এবং ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে তিনি রিফিউজি অলিম্পিক টিমের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার প্যারিস অলিম্পিকে ভিন্ন ভূমিকায় অংশ নিয়েছেন ২৬ বছর বয়সি ইয়ুসরা। গত শুক্রবার রাতে উদ্বোধন হয়েছে প্যারিস অলিম্পিকের। যেখানে অভিবাসী দলের হয়ে অলিম্পিক ফ্লেম হাতে নিয়েছেন ইয়ুসরা। তবে তিনি আর সেই দলের অ্যাথলেট নন, বর্তমানে একজন সাংবাদিকের ভূমিকায় দুইবারের এই অলিম্পিয়ান সাঁতারু। এবারের অলিম্পিকে পা রাখতেই তাকে শরণার্থী শিবিরের অ্যাথলেট ও স্টাফরা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। ২০২০ টোকিও অলিম্পিক শেষেই তিনি সাঁতার থেকে অবসর নেন। সংবাদমাধ্যম ডিসকভারির ব্রডকাস্ট জার্নালিস্টের ভূমিকায় প্যারিসে যাওয়া ইয়ুসরা অলিম্পিক্স ডটকমকে জানিয়েছেন, ‘আমি নিজে সাক্ষাৎকার দেয়ার চেয়ে মানুষের সাক্ষাৎকার নিতে পছন্দ করি, কারণ মাঝেমধ্যে সবসময় কথা বলে যাওয়া ক্লান্তিকর, তবে আমি এতে অসন্তুষ্ট নই। আবারও এই দলটির দেখা পেয়ে দারুণ ভালো লাগছে। কিছু অ্যাথলেটকে আগে থেকে চিনি, কারও কারও সঙ্গে নতুন পরিচয় হলো। সারাবিশ্বের শরণার্থীরা যেভাবে রিফিউজি অলিম্পিক টিমের অধীনে এক হয়েছে, এটি দেখা সত্যিই দারুণ কিছু।’ সাংবাদিকের ভূমিকায় থাকলেও, এখনও অ্যাথলেট-জীবনে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা জাগে সিরিয়ান এই অভিবাসীর। তিনি বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন পরিবারের অংশ হতে পারা আমাকে আনন্দ দেয়, যেখানে পরস্পরকে জানার সুযোগ হয়। একজন অ্যাথেলেট কিংবা অবসরপ্রাপ্ত অ্যাথলেট হিসেবে মাঝেমধ্যে আবেগও চলে আসে, আমি এখনও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করি। তবে আমি রিপোর্টার হয়েও এই দলের কাছাকাছি থাকতে পেরে সৌভাগ্যবান মনে করছি নিজেকে।’ গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়া সিরিয়া ছেড়ে তুরস্ক এবং গ্রিস হয়ে বর্তমানে বোন সারাকে নিয়ে জার্মানির বাসিন্দা ইয়ুসরা। সেখানে তিনি ইয়ুসরা মারদিনি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে শরণার্থীদের শিক্ষা ও ক্রীড়া সুবিধা দেয়া নিয়ে কাজ করছেন। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর একজন দূতও সাবেক এই সাঁতারু। এর আগে যখন দেশ ছাড়েন, তখন ইয়ুসরার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। পরে তাদের জীবন কাহিনী নিয়ে ‘দ্য সুইমার্স’ নামে একটি সিনেমা বানানো হয়, যার জন্য বাফটা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন ইয়ুসরা-সারা বোনদ্বয়।