প্যারিস অলিম্পিক
বুকে পতাকা এঁকে ফিলিস্তিন সাঁতারুর শান্তির বার্তা
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া ডেস্ক
প্যারিস অলিম্পিক ফিলিস্তিনের জন্য বিশেষ। এই মঞ্চে বিশ্ববাসীর কাছে ইসরাইলি বর্বরতা তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। ইসরাইলের আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে নানা সংকটের মধ্যে ফিলিস্তিনি অ্যাথলেটরা অংশ নিয়েছেন এবারের অলিম্পিকে। পুলে ঝাঁপ দেয়ার আগেই ডান হাতের দুই আঙুল উঁচিয়ে ধরেন ইয়াজান আল বাওয়াব। দেখলে মনে হবে বিজয়ী চিহ্ন; কিন্তু রেস তো তখনো শুরুই হয়নি। বুকের বাঁ পাশে এঁকে রেখেছেন পতাকা। যা কোনো সাঁতারুর ক্ষেত্রেই খুব একটা দেখা যায় না। এর মাধ্যমেই নিজ দেশ ফিলিস্তিনে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিলেন তিনি। প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকের প্রথম হিটে পুলে নামেন আল বাওয়াব। ৫৮.২৬ সেকেন্ডে রেস শেষ করে হিটে তৃতীয় হয়েও সেমিফাইনালে উঠতে পারেননি ২৪ বছর বয়সি এই সাঁতারু। তবে অলিম্পিকের মতো মঞ্চে নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেই গর্বিত তিনি।
আল বাওয়াব বলেন, ‘ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবুও বুকে পতাকা এঁকে এখানে এসেছি। শুধু ফিলিস্তিনের জন্য সময় ও একটি লেন পেয়ে, নিজের পতাকা উড়াতে পেরে আমি খুবই, খুবই খুশি। আমি মনে করি এটাই আমার দেয়া শান্তির বার্তা। অলিম্পিক খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আসর। এখানে অংশ নিতে পারা যেকোনো অ্যাথলেটের জন্যই অসাধারণ অনুভূতির। আমার জন্য এটা বেশি স্পেশাল। কারণ আমি ফিলিস্তিনি।
আমার দেশে কোনো খেলাধুলা নেই, আমাদের একটি পুলও নেই। তাই কণ্ঠস্বর না থাকা এমন একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা অসাধারণ। আমরা আশা করি, আমাদের যেন বাকিদের মতো সমানভাবে সুযোগ দেয়া হয় এবং সংঘর্ষ নিয়ে যাতে চিন্তা করতে না হয়।’ গত অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।
আল বাওয়াব অবশ্য ফিলিস্তিনে বাস করেন না। তবে নিজ দেশ সম্পর্কে খোঁজ রাখেন নিয়মিতই। সৌদি আরবে জন্ম নেওয়ার পর কানাডা ও ব্রিটেনে পড়াশোনা করেন। তার বাবা রাশাদ যিনি নিজেও সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু কখনো তা হতে পারেননি।
১৮ বছর বয়সে ফিলিস্তিন ছেলে শরণার্থী হিসেবে ইতালিতে আশ্রয় নিতে হয় তাকে। উন্নত জীবনের আশায় এরপর দুবাইয়ে পাড়ি জমান তিনি, হয়ে ওঠেন সফল ফার্নিচার ব্যবসায়ী। নিজে না পারলেও ছেলেকে ঠিকই সাঁতারু বানিয়েছেন রাশাদ।