ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ক্রীড়াঙ্গনের নতুন অভিভাবকের কাছে যে প্রত্যাশা

ক্রীড়াঙ্গনের নতুন অভিভাবকের কাছে যে প্রত্যাশা

কোটা সংস্কার ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। গঠন করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত বৃহস্পতিবার এই সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন শান্তিতে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

উপদেষ্টা হিসেবে হিসেবে শপথ নিয়েছেন আরো ১৬ জন। গতকাল শুক্রবার উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশে সরকার ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন এসেছে। সেই আন্দোলনকারী আসিফ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় ক্রীড়াঙ্গনের নতুন অভিভাবকের কাছে প্রত্যাশা ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সংস্কারের। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক কামরুন নাহার ডানা সব সময় বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া আসিফ মাহমুদের কাছে তার চাওয়া স্পষ্ট, ‘তাদের আন্দোলনে দেশে বিশাল একটি পরিবর্তন এসেছে। যুব সমাজই পারে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে। সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ক্রীড়াঙ্গন বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়নে প্রয়োজন সংস্কার।’ ক্রীড়াঙ্গনে কোনো ধরনের সংস্কার প্রয়োজন সেটাও সাবেক ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গন ক্রীড়াবিদদের জায়গা। সেখানে রাজনীতি অঙ্গনের মানুষ নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজনীতি মুক্ত ক্রীড়াঙ্গনই আমাদের প্রত্যাশা। আসিফ দেশের বড় সংস্কার আন্দোলন করেছে তার কাছে আশা ক্রীড়াঙ্গনের রাজনৈতিক সংস্কার।’

বাংলাদেশের ক্রীড়া কাঠামোতে ফেডারেশনের মাধ্যমে খেলাধুলা পরিচালিত হয়। বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক রাজনৈতিক বিবেচনায় ও প্রভাবে এসেছেন। আবার অনেক ফেডারেশনের খেলাধুলায় উন্নতি ও পরিবর্তন না হলেও সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে একই ব্যক্তি রয়েছেন যুগের পর যুগ। কিংবদন্তি ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম সেই দিকেও আলোকপাত করেছেন, ‘অনেকেই নিজেদের চেয়ার আকড়ে ধরে আছেন। খেলা পিছিয়ে গেলেও তারা বহাল তবিয়তে আছেন। এগুলো সংস্কারের আওতায় আসা উচিত।’ ক্রীড়াঙ্গনের সাফল্য-ব্যর্থতার প্রকৃত মূল্যায়ন নেই। তাই জবাবদিহিতাও প্রত্যাশা শেখ আসলামের, ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল।

সেই ফুটবলে নেই সাফল্য আবার নানা ঘটনায় বিতর্কিত। অথচ তাদের প্রকৃত কোনো জবাবদিহিতা নেই। জবাবদিহিতা ছাড়া স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা আসবে না।’ ডানা ও আসলাম দুই কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদই আসিফের ওপর আশাবাদী। তারা বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্ম অত্যন্ত মেধাবী। আসিফ এত বড় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে ফলে সে ক্রীড়াঙ্গনেও প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে পারবে।’

সংস্কার বা পরিবর্তনের জন্য তারা মতবিনিময় সভার আহ্বান জানিয়েছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনের সকল শ্রেণির বিশিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে সে বসতে পারে। মত বিনিময় সভার মত কিছু হলে অবশ্যই সুচিন্তিত মতামত পেশ করব।’

বর্তমান প্রজন্মের ক্রীড়াবিদ সদ্য সাবেক সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা। গৌহাটি এসএ গেমসে দুই স্বর্ণজয়ী এই সাঁতারুও ভালো কিছু প্রত্যাশা করছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়ন সময়সাপেক্ষ বিষয়। আশা করব তিনি নীতিমালা - কাঠামো সংক্রান্ত বিষয়ে সুন্দর নির্দেশনা দিতে পারবেন।

যুবক সমাজ ক্রীড়াঙ্গন অনুরাগী। আশা করছি তিনিও ক্রীড়ামোদী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত