অলিম্পিক ফুটবলে যারা কখনো গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোতে পারেনি, সেই মরেক্কোই প্যারিসে ইতিহাস রচনা করলো। মিশরকে উড়িয়ে ক্রীড়াযজ্ঞের ফুটবল থেকে প্রথম পদক জয়ের আনন্দে মাতলো আফ্রিকার দেশটি। ছেলেদের ফুটবলের সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে সোনার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় মরক্কোর। তবে পদক জয়ের সম্ভাবনা বেঁচে থাকে। ব্রোঞ্জ পদকের লড়াইয়ের মাধ্যমে পোডিয়ামে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে তাদের সামনে। মরক্কো সেই সম্ভাবনা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে। মিশরকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে অলিম্পিক ফুটবল থেকে প্রথম পদক জিতেছে আশরাফ হাকিমির দল। কখনো গ্রুপ পর্ব না পেরোনো দলটি প্যারিস অলিম্পিক থেকে জিতে নিল ব্রোঞ্জ। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে গোলের শুরুটা করেছিলেন আব্দে ইজ্জাজুলি। এরপর সুফিয়ানে রাহিমি দুটি এবং বিলাল এল খান্নৌস, আকরাম নাকাচ ও আশরাফ হাকিমি করেন একটি করে গোল। তাতেই অলিম্পিকস ফুটবলে প্রথম পদক পাওয়ার গল্প লেখা হয়ে যায় মরক্কোর। এই ইভেন্টে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ পর্বে আত্মবিশ্বাসী শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচে হোঁচট খেয়েছিল মরক্কো; একই ব্যবধানে হেরে বসে ইউক্রেনের বিপক্ষে। তবে ওই ধাক্কার পর আর সেমি-ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে হারের আগ পর্যন্ত দারুণ উজ্জ্বল ছিলেন হাকিমি-রাহিমিরা। এই ব্রোঞ্জের সাফল্যের পথ ধরে হাকিমি এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তবে সোনা জয়ের চাওয়া পূরণ হলো না বলে একটু আক্ষেপের সুরও যেন বাজল রিয়াল মাদ্রিদের এই সাবেক ডিফেন্ডারের কণ্ঠে। ‘এই পদক জিতে আমরা গর্বিত। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। সোনার পদক জিততে চেয়েছিলাম আমরা, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে ফাইনালে উঠতে পারিনি। তবে আমরা নিজেদের বৈশিষ্ট্য এবং মরক্কোকে ঐতিহাসিক পদক এনে দেয়ার সামর্থ্য দেখিয়েছি।’ হাকিমি আরো বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে এখানে এবং মরক্কোতে থাকা সমর্থকদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা কেবল আমাদের দেশের জন্য নয়, আফ্রিকান ফুটবলের জন্যও অনেক দরজা খুলে দিয়েছি। আজ আমরা এখানে আফ্রিকার দুটি দল তৃতীয়-চতুর্থ হওয়ার জন্য লড়াই করেছি। সবাই দেখেছে আমাদের মান।’ অলিম্পিকস ফুটবলে প্রথম পদক প্রাপ্তির পর মরক্কোর কোচ তারিক সেক্টিউইয়ের মনে হচ্ছে, সঠিক পথেই আছেন তারা। ‘এই সাফল্য দেখাচ্ছে মরক্কোর ফুটবল সঠিক পথে আছে এবং আমরা ভালো উন্নতি করছি। বিশ্বকাপে আমরা যা করেছিলাম (চতুর্থ হয়েছিল মরক্কো), তাতে এখানে আমাদের সাফল্য পেতেই হতো।’